Class 8 History Question Answer First Unit Test 2025 / ক্লাস ৮ ইতিহাস প্রশ্নপত্র প্রথম ইউনিট টেস্ট ২০২৫

এখানে অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস প্রশ্নপত্র প্রথম ইউনিট টেস্ট ২০২৫ / Class 8 History Question Answer First Unit Test 2025 শেয়ার করা হলো।

অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস প্রশ্নপত্র প্রথম ইউনিট টেস্ট ২০২৫
Class 8 History Question Answer First Unit Test 2025
মডেল প্রশ্নপত্র সমাধান: ১

১. সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে বাক্যটি সম্পন্ন করো:

১.১ অন্ধকূপ হত্যার প্রচারক ছিলেন—
রজার ড্রেক / অক্ষয় কুমার মৈত্রেয় / হলওয়েল / রবার্ট ক্লাইভ

উত্তর: হলওয়েল।

১.২ এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন—
জোনাথন ডানকান / উইলিয়াম জোন্স / ওয়ারেন হেস্টিংস / উইলিয়াম কেরি

উত্তর: উইলিয়াম জোন্স।

১.৩ পলাশীর যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল—
১৭৫৬ / ১৭৫৭ / ১৭৫৯ খ্রিস্টাব্দে

উত্তর: ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে।

১.৪ অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি প্রয়োগ করেন—
লর্ড ওয়েলেসলি / লর্ড কর্নওয়ালিস / লর্ড ডালহৌসি

উত্তর: লর্ড ওয়েলেসলি।

১.৫ ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দে বাংলার নদীপথগুলি জরিপ করেন—
ফ্রাংক ল্যান্ড / হগ ক্যামেরন / জেমস রেনেল

উত্তর: জেমস রেনেল।

১.৬ সালবাই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়—
১৭৭৫ খ্রিস্টাব্দে / ১৭৮০ খ্রিস্টাব্দে / ১৭৮২ খ্রিস্টাব্দে / ১৭৮৫ খ্রিস্টাব্দে

উত্তর: ১৭৮২ খ্রিস্টাব্দে।

১.৭ ঠগি দস্যুদের দমন করেন—
স্লিম্যান / ওয়ারেন হেস্টিংস / ডালহৌসি / উইলিয়াম জোন্স

উত্তর: স্লিম্যান।

১.৮ স্বেচ্ছায় অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি মেনে নিয়েছিলেন—
সাদাত খান / হায়দারাবাদের নিজাম / হায়দার আলী / টিপু সুলতান

উত্তর: হায়দারাবাদের নিজাম।

২. যেকোনো চারটি প্রশ্নের উত্তর দাও:

২.১ বাংলায় ভয়ানক দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিল ….. খ্রিস্টাব্দে।

উত্তর: ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে।

২.২ স্বত্ববিলোপ নীতি প্রবর্তন করেন …….।

উত্তর: লর্ড ডালহৌসি।

২.৩ শূন্যস্থান পূরণ কর: কলকাতা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন …..।

উত্তর: ওয়ারেন হেস্টিংস।

২.৪ বাংলায় দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন—

উত্তর: রবার্ট ক্লাইভ।

২.৫ কোন পদ্ধতি অবলম্বন করে অযোধ্যাকে কোম্পানি সাম্রাজ্যভুক্ত করেন ডালহৌসি?

উত্তর: অপশাসনের অভিযোগ এনে।

২.৬ শ্রীরামপুরের মিশনারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন কে?

উত্তর: উইলিয়াম কেরি।

৩. যেকোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৩.১ কর্নওয়ালিস কোড কী?

উত্তর: ১৭৯৩ সালে লর্ড কর্নওয়ালিস কোম্পানির কর্মচারীদের মধ্যে দক্ষতা, নৈতিকতা, দায়িত্ববোধ ও নিয়মানুবর্তিতা বৃদ্ধি করার জন্য যে সকল নিয়ম বিধিবদ্ধ করেছিলেন, তাকে কর্নওয়ালিস কোড বলা হয়। প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি করা ছিল এর প্রধান লক্ষ্য। পরবর্তীকালে কর্নওয়ালিসের এই কোড পরোক্ষভাবে ভারতের সিভিল সার্ভিসের ভিত্তি রচনা করেছিল।

৩.২ কত খ্রিস্টাব্দে ও কোথায় ইম্পেরিয়াল কোর্ট স্থাপিত হয়?

উত্তর: রেগুলেটিং অ্যাক্ট, ১৭৭৩ অনুযায়ী ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় ইম্পেরিয়াল কোর্ট (সুপ্রিম কোর্ট) স্থাপিত হয়।

৩.৩ ইজারাদারি ব্যবস্থা বলতে কী বোঝো?

উত্তর: পাঁচ বছরের জন্য নিলাম ডেকে জমিদারি কোনো ব্যক্তির হাতে দেওয়ার ব্যবস্থাকে ইজারাদারি ব্যবস্থা বলে। ওয়ারেন হেস্টিংস ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে এই ব্যবস্থা চালু করেন।

৩.৪ বক্সারের যুদ্ধ কবে ও কাদের মধ্যে হয়েছিল?

উত্তর: ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর মাসে বক্সারের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধে বাংলার নবাব মীর কাসিম, অযোধ্যার নবাব সুজাউদ্দৌলা ও মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের যৌথ বাহিনী ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে লড়াই করে।

৪. যেকোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৪.১ উডের প্রতিবেদন সম্পর্কে কী জানো?

উত্তর: ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে বোর্ড অফ কন্ট্রোলের সভাপতি চার্লস উড শিক্ষা সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন পেশ করেন, যা “উডস ডেসপ্যাচ” নামে পরিচিত। এই ডেসপ্যাচের মাধ্যমে উপনিবেশিক সরকারকে প্রাথমিক স্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তর পর্যন্ত একটি সুগঠিত শিক্ষা কাঠামো গড়ে তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়। এই প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতে কলকাতা, বোম্বে ও মাদ্রাজে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ওঠে।

৪.২ টীকা লেখ: অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি।

উত্তর: লর্ড ওয়েলেসলি ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাম্রাজ্য বিস্তারের উদ্দেশ্যে ভারতের দেশীয় রাজ্যগুলোর স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব খর্ব করে তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার এক নীতি প্রণয়ন করেন, যা “অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি” নামে পরিচিত। হায়দারাবাদের নিজাম প্রথম এই নীতি মেনে নেন।

৪.৩ পলাশীর লুণ্ঠন কী?

উত্তর: ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে পলাশীর যুদ্ধের পর ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি মীরজাফরকে ক্ষমতায় বসানোর বিনিময়ে বিশাল পরিমাণ সম্পদ লাভ করে। সিরাজউদ্দৌলার কলকাতা আক্রমণের অজুহাতে কোম্পানি ১ কোটি ৭৭ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করে। এ ছাড়া রবার্ট ক্লাইভসহ কোম্পানির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ব্যক্তিগতভাবে মীরজাফরের কাছ থেকে বিপুল সম্পদ পান। সব মিলিয়ে ব্রিটিশরা প্রায় ৩ কোটি টাকার সম্পদ হস্তগত করে, যা ইতিহাসে “পলাশীর লুণ্ঠন” নামে পরিচিত। বহু ঐতিহাসিক ব্রিটিশ কোম্পানির এই অর্থ আত্মসাৎকে লুণ্ঠনমূলক শোষণের সূচনা হিসেবে দেখেন।

৪.৪ ব্রিটিশ প্রেসিডেন্সি ব্যবস্থা কাকে বলে?

উত্তর: ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ছিল একটি বণিক সংস্থা। ভারতীয় উপমহাদেশে বাণিজ্যের স্বার্থে তারা ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বাণিজ্যিক ঘাঁটি স্থাপন করে, যার মধ্যে প্রধান তিনটি ছিল মাদ্রাজ, বোম্বে ও কলকাতা। পরবর্তীতে এই তিনটি বাণিজ্যিক কেন্দ্রকে ঘিরে যে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে ওঠে, তা “ব্রিটিশ প্রেসিডেন্সি ব্যবস্থা” নামে পরিচিত।

৫. যেকোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও:
৫.১ পলাশীর যুদ্ধের কারণগুলি আলোচনা করো।

উত্তর: নবাব আলীবর্দী খানের মৃত্যুর পর বাংলার নবনিযুক্ত নবাব সিরাজউদ্দৌলা ও ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মধ্যে বিরোধের ফলস্বরূপ ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ জুন পলাশীর যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এই বিরোধের পেছনে কয়েকটি প্রধান কারণ ছিল:

১. কোম্পানির ষড়যন্ত্র: সিরাজ বিরোধী ঘসেটি বেগম ও সুকত জং-এর সঙ্গে কোম্পানি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলে নবাব ক্ষুব্ধ হন এবং কোম্পানিকে উচিত শিক্ষা দিতে সচেষ্ট হন।

রীতির অবমাননা: নবাব পদে সিরাজের অভিষেক অনুষ্ঠানে ইংরেজ কোম্পানি অনুপস্থিত ছিল, উপরন্তু চিরাচরিত রীতি মেনে নবাবকে কোনো উপঢৌকনও পাঠায়নি, যা সিরাজকে রুষ্ট করে।

অবৈধ দুর্গ নির্মাণ: ইংরেজ ও ফরাসি কোম্পানি বাংলায় দুর্গ নির্মাণ শুরু করলে সিরাজ তা বন্ধের নির্দেশ দেন। কিন্তু ইংরেজরা এই নির্দেশ অমান্য করলে নবাব ও কোম্পানির সম্পর্কের অবনতি ঘটে।

দস্তকের অপব্যবহার: কোম্পানির কর্মচারীরা ব্যক্তিগত বাণিজ্যে দস্তকের অপব্যবহার করতে শুরু করলে সিরাজ ক্ষুব্ধ হন এবং কোম্পানির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেন।

কৃষ্ণদাসকে আশ্রয়দান: নবাবী তহবিল তছরুপের অভিযোগে ঢাকার দেওয়ান রাজবল্লভকে সিরাজ মুর্শিদাবাদে তলব করেন। ফলে তিনি তার পুত্র কৃষ্ণদাসকে প্রচুর ধনরত্নসহ কলকাতায় কোম্পানির কুঠিতে পাঠিয়ে দেন। নবাবের বারবার নির্দেশ সত্ত্বেও কোম্পানি কৃষ্ণদাসকে ফেরত না পাঠালে সিরাজ প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন।

আলিনগরের সন্ধিভঙ্গ: সিরাজ কলকাতা দখল করে এর নাম “আলিনগর” রাখেন। পরে রবার্ট ক্লাইভ ও ওয়াটসনের নেতৃত্বে কোম্পানি পুনরায় কলকাতা দখল করে নেয়। এর ফলে আলিনগরের সন্ধি স্বাক্ষরিত হলেও ফরাসিদের আশ্রয়দানের অভিযোগে নবাবকে সন্ধি ভঙ্গের জন্য দায়ী করা হয়।

এই ঘটনাগুলোর প্রেক্ষাপটে সিরাজবিরোধী জগত্‍ শেঠ, মীরজাফর প্রমুখের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে রবার্ট ক্লাইভ নবাবকে সিংহাসনচ্যুত করতে সচেষ্ট হন। এরই পরিণতি পলাশীর যুদ্ধ।

৫.২ কোম্পানির শাসনকালে জমি জরিপের জন্য যে ব্যবস্থাগুলি গ্রহণ করা হয়েছিল তা লেখো।

উত্তর: চাষযোগ্য বা বাসযোগ্য জমির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ পরিমাপ করে ক্ষেত্রফল বা আয়তন নির্ণয় করার প্রক্রিয়াকে জমি জরিপ বলে। সম্রাট অশোক, সুলতান আলাউদ্দিন খলজি, শেরশাহ ও আকবরের আমলেও জমি জরিপের ব্যবস্থা ছিল, তবে কোম্পানির শাসনামলে আধুনিক জমি জরিপের প্রথা চালু হয়।

কোম্পানির জমি জরিপ পদ্ধতি: ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের সঙ্গে জমি জরিপের বিশেষ সম্পর্ক ছিল। জমি জরিপের মাধ্যমে তারা রাজস্ব আদায়, চাষযোগ্য জমির হিসাব নির্ধারণ ও শাসনাধীন এলাকার আয়তন নির্ণয় করতে চেয়েছিল।

জমি জরিপের সূচনা:

পলাশীর যুদ্ধের পর রবার্ট ক্লাইভ মীরজাফরের কাছ থেকে কলকাতা থেকে কুলপি পর্যন্ত ২৪টি পরগনার জমি লাভ করেন এবং এগুলোর জরিপের ব্যবস্থা করেন।
১৭৬০ খ্রিস্টাব্দে ফ্রাঙ্কল্যান্ড জমি জরিপের কাজ শুরু করেন। তার মৃত্যুর পর হগ ক্যামেরন এই কাজ সম্পন্ন করেন।
১৭৬৭ খ্রিস্টাব্দে ভারতের জমি জরিপ বিভাগ গঠিত হয়।

৫.৩ ইজারাদারি ব্যবস্থা সম্পর্কে লেখো।

উত্তর: উপনিবেশিক আমলে রাজস্ব আদায়ের প্রক্রিয়া সহজ ও কার্যকর করার লক্ষ্যে কোম্পানি ইজারাদারি ব্যবস্থা প্রবর্তন করে।

১. ইজারাদারি ব্যবস্থা চালুর কারণ:

১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস কর্তৃক প্রবর্তিত পাঁচশালা বা ইজারাদারি বন্দোবস্ত চালুর প্রধান কারণ ছিল—

নিলামের মাধ্যমে জমি ইজারা দিয়ে সর্বাধিক রাজস্ব আদায় করা।
বাংলার ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থা পুরোপুরি কোম্পানির স্বার্থে কাজে লাগানো।
১৭৭০ সালের ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের ফলে রাজস্ব ঘাটতি পূরণ করা।

২. ইজারাদারি ব্যবস্থা তুলে দেওয়ার কারণ:
নানা সমস্যার কারণে শেষ পর্যন্ত ইজারাদারি বন্দোবস্ত বাতিল করতে হয়েছিল। এর প্রধান কারণ ছিল—

নিলামের মাধ্যমে ইজারাদাররা জমি ইজারা নিলেও, তারা রাজস্ব আদায়ের প্রকৃত পরিমাণ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখতেন না।
নির্ধারিত রাজস্ব ও আদায়কৃত রাজস্বের মধ্যে বড় ব্যবধান থাকত, ফলে কোম্পানির রাজস্ব আয় ব্যাহত হতো।
ইজারাদাররা সর্বোচ্চ রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে কৃষকদের ওপর চরম জুলুম করত, যা কৃষকদের দুর্দশার কারণ হয়ে ওঠে।
এর ফলে ১৭৭৭ খ্রিস্টাব্দে ইজারাদারি ব্যবস্থা বাতিল করে নতুন রাজস্ব ব্যবস্থা চালু করা হয়।

৫.৪ দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করো।

উত্তর: ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে মোগল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে বাংলার দেওয়ানি (রাজস্ব আদায়ের অধিকার) প্রদান করেন। ফলে বাংলায় দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা (Dual System of Administration) চালু হয়।

১. দ্বৈত শাসনের বৈশিষ্ট্য:
এই শাসনব্যবস্থায়—
বাংলার নবাব রাজনৈতিক ও আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্ব পালন করতেন, তবে তার হাতে প্রকৃত ক্ষমতা থাকত না।
রাজস্ব আদায় ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার সমস্ত ক্ষমতা কোম্পানির হাতে ছিল।
নবাবের হাতে অর্থনৈতিক ক্ষমতা না থাকায়, প্রশাসন দুর্বল হয়ে পড়ে।
ব্রিটিশ কোম্পানি সম্পূর্ণ দায়িত্বহীনভাবে রাজস্ব আদায় করত এবং একমাত্র লক্ষ্য ছিল সর্বোচ্চ লাভ অর্জন।

২. দ্বৈত শাসনের পরিণতি:
রাজস্ব লুটের ফলে বাংলার অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়ে।
নবাবের প্রশাসনিক দুর্বলতার কারণে আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ে।
১৭৭০ সালের ছিয়াত্তরের মন্বন্তরে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যায়, কিন্তু কোম্পানি রাজস্ব আদায় বন্ধ করেনি।
অবশেষে ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা বিলোপ করেন এবং কোম্পানির সরাসরি শাসন প্রতিষ্ঠা করেন।

অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস প্রশ্নপত্র প্রথম ইউনিট টেস্ট ২০২৫
Class 8 History Question Answer First Unit Test 2025
মডেল প্রশ্নপত্র সমাধান: ২

১. নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর বেছে লেখ:

১.১ স্বেচ্ছায় অধীনতামূলক মিত্রতার নীতি মেনে নিয়েছিলেন-
টিপু সুলতান / সাদাত খান / নিজাম

উত্তর: নিজাম।

১.২ ঔরঙ্গজেবের শাসনকালে মুর্শিদকুলি খান ছিলেন বাংলার-
দেওয়ান / ফৌজদার / জমিদার / নায়েব

উত্তর: দেওয়ান।

১.৩ ছিয়াত্তরের মন্বন্তর হয়েছিল-
১১৭৬ বঙ্গাব্দে / ১২৭৬ বঙ্গাব্দে / ১৩৭৬ বঙ্গাব্দে

উত্তর: ১১৭৬ বঙ্গাব্দে।

১.৪ মীর কাসিম বাংলার রাজধানী হিসেবে মুর্শিদাবাদের বদলে বেছে নিয়েছিলেন-
কলকাতা / কাটোয়া / মুঙ্গের / বর্ধমান

উত্তর: মুঙ্গের।

১.৫ স্বত্ববিলোপ নীতি প্রবর্তন করেন-
লর্ড কর্নওয়ালিস / লর্ড ডালহৌসি / লর্ড ক্যানিং

উত্তর: লর্ড ডালহৌসি।

২. নিচের প্রশ্নগুলোর এক কথায় উত্তর দাও:

২.১ পুদুচেরির (পন্ডিচেরির) ফরাসি গভর্নর কে ছিলেন?

উত্তর: জোসেফ ফ্রাঁসোয়া দুপ্লে।

২.২ কে, কবে ইজারাদারি ব্যবস্থা চালু করেন?

উত্তর: ওয়ারেন হেস্টিংস ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে ইজারাদারি ব্যবস্থা চালু করেন।

২.৩ সলবাইয়ের সন্ধি কবে স্বাক্ষরিত হয়?

উত্তর: ১৭৮২ খ্রিস্টাব্দে সলবাইয়ের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

২.৪ ফোর্ট উইলিয়াম কবে তৈরি হয়?

উত্তর: ফোর্ট উইলিয়াম ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে তৈরি হয়।

২.৫ অন্ধকূপ হত্যা ঘটনাটি কে অতিরঞ্জন বলে প্রমাণ করেন?

উত্তর: ঐতিহাসিক অক্ষয় কুমার মৈত্রেয়।

২.৬ কে, কবে বেনারস হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন?

উত্তর: ১৭৯১ খ্রিস্টাব্দে জনাথন ডানকান বেনারস হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।

২.৭ হিরাপদ শাহের বড় ছেলের নাম কী?

উত্তর: মানিক চাঁদ।

২.৮ বোম্বাই প্রেসিডেন্সির মূল গোড়াপত্তন কোথায় হয়েছিল?

উত্তর: সুরাটে।

২.৯ কত খ্রিস্টাব্দে মুর্শিদকুলি খান মারা যান?

উত্তর: ১৭২৭ খ্রিস্টাব্দে মুর্শিদকুলি খান মারা যান।

২.১০ কলকাতা মাদ্রাসা কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?

উত্তর: ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়।

৩. নিচের প্রশ্নগুলোর সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও:
৩.১ ফরাসি দখল সম্পর্কে কী জানা যায়?

উত্তর: ভারতে উপনিবেশ গড়ে তোলা এবং বাণিজ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা নিয়ে কুড়ি বছর ধরে ব্রিটিশদের সঙ্গে ফরাসিদের স্বার্থের সংঘাত চলেছিল। ১৭৪৪ থেকে ১৭৬৩ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে দক্ষিণ ভারতে কর্ণাটক অঞ্চলে তিনটি ইঙ্গ-ফরাসি যুদ্ধ ঘটে। ভারতে ফরাসিদের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল চন্দননগর ও পুদুচেরি (পন্ডিচেরি)। এই সময় পুদুচেরির ফরাসি গভর্নর ছিলেন জোসেফ ফ্রাঁসোয়া দুপ্লে। ১৭৬৩ খ্রিস্টাব্দে বন্দিবাসের যুদ্ধে ফরাসিদের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে। এই পরাজয়ের ফলে ভারতে ব্রিটিশদের ক্ষমতা বিস্তারের পথে আর কোনো ইউরোপীয় প্রতিদ্বন্দ্বীর বাধা রইল না।

৩.২ মুর্শিদকুলি খানের আমলে বাংলার ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ কেমন ছিল?

উত্তর: মুর্শিদকুলি খানের আমলে বাংলার রাজনৈতিক পরিবেশ ব্যবসা-বাণিজ্যের পক্ষে অনুকূল ছিল। স্থলপথ ও সমুদ্রপথে নানা দ্রব্য সুবা বাংলা থেকে রপ্তানি করা হতো। হিন্দু, মুসলমান ও আর্মেনীয় বণিকরা এই ব্যবসায় প্রভাবশালী ছিলেন। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন হিন্দু ব্যবসায়ী উমিচাঁদ ও আর্মেনীয় ব্যবসায়ী খোঁজা ওয়াজিদ। এই সব ধনী ব্যবসায়ী ও মহাজনদের হাতে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা কেন্দ্রীভূত ছিল। সুবা বাংলার কোষাগার ও টাঁকশাল তাদের পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণে চলত। শাসকেরা তাদের সহায়তার ওপরই নির্ভর করতেন।

৩.৩ পিট প্রণীত ভারত শাসন আইনে কী বলা হয়েছে?

উত্তর: ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী উইলিয়াম পিট একটি নতুন আইন তৈরি করেন, যা “পিটের ভারত শাসন আইন” নামে পরিচিত। এই আইনের মাধ্যমে একটি “বোর্ড অফ কন্ট্রোল” গঠিত হয়, যা কোম্পানির সামরিক ও অসামরিক শাসন ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা পরিচালনার দায়িত্ব পায়। এই আইনের মাধ্যমে ভারতে কোম্পানির সমস্ত প্রশাসনিক কার্যক্রম গভর্নর জেনারেলের নিয়ন্ত্রণাধীন হয়। ফলে ব্রিটেনের পার্লামেন্ট ভারতে কোম্পানির কার্যক্রমের ওপর সরাসরি নজরদারি করতে পারে।

৩.৪ আলীবর্দী খান বাংলায় কীভাবে শাসন কার্য পরিচালনা করতেন?

উত্তর: ১৭২৭ খ্রিস্টাব্দে মুর্শিদকুলি খানের মৃত্যুর পর তার উত্তরাধিকার নিয়ে গোলযোগ বাধে। সেই পরিস্থিতিতে জগত সেট ও কয়েকজন ক্ষমতাবান জমিদারের সহায়তায় সেনাপতি আলীবর্দী খান বাংলার শাসন ক্ষমতা দখল করেন। আলীবর্দীর শাসনকালে মুঘলদের হাত থেকে সুবা বাংলার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে যায়। যদিও তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মুঘল সম্রাটের কর্তৃত্ব স্বীকার করতেন, তবে কার্যত বাংলা, বিহার ও ওড়িশায় তিনি একটি স্বশাসিত শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করতেন।

৩.৫ কোম্পানি পরিচালিত আইন ব্যবস্থাকে সুসংহত করার ক্ষেত্রে লর্ড কর্নওয়ালিস কী ভূমিকা নিয়েছিলেন?

উত্তর: কোম্পানি পরিচালিত আইন ব্যবস্থাকে সুসংহত করার ক্ষেত্রে লর্ড কর্নওয়ালিস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

প্রথমত, জেলা থেকে সদর পর্যন্ত বিচার ব্যবস্থা সুপরিকল্পিতভাবে সাজানো হয়।
দ্বিতীয়ত, তিনি আইনগুলোকে সংহত করে একটি সুসংহত আদালত ব্যবস্থা চালু করেন।

৩.৬ স্বত্ববিলোপ নীতির মাধ্যমে কোম্পানি কীভাবে শাসন ক্ষমতা বিস্তার করে?

উত্তর: স্বত্ববিলোপ নীতির প্রবর্তক ছিলেন লর্ড ডালহৌসি। এই নীতির আওতায়, যেসব ভারতীয় শাসকদের কোনো পুরুষ উত্তরাধিকারী ছিল না, তাদের রাজ্য ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দখলে চলে যেত।

এই নীতির মাধ্যমে ডালহৌসি সাতারা, সম্বলপুর, ঝাঁসি প্রভৃতি অঞ্চল দখল করেন।
কোম্পানির সেনাবাহিনীর ব্যয়ভার বহনের জন্য তিনি হায়দরাবাদের বিশাল এলাকা দখল করেন।
অপশাসনের অভিযোগে তিনি অযোধ্যার বাকি অংশও কোম্পানির অধিকারে নিয়ে আসেন।
এইভাবে, ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে লর্ড ডালহৌসির নেতৃত্বে ভারতীয় উপমহাদেশের প্রায় ৬০% ভূখণ্ড ব্রিটিশ কোম্পানির অধীনে চলে যায়।

৪. নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
৪.১ ভারতে উপনিবেশিক শাসনে জমি-জরিপ করে রাজস্ব নির্ণয়ের প্রক্রিয়াটি আলোচনা কর।

উত্তর: ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে পলাশীর যুদ্ধের পর ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার নবাব মীরজাফরের কাছ থেকে কলকাতা থেকে কুলপি পর্যন্ত ২৪টি পরগনার জমিদারি লাভ করে। তখন রবার্ট ক্লাইভ নতুন জমিদারি মাপজোখের জন্য একদল জরিপবিদ খুঁজতে থাকেন।

১৭৬০ খ্রিস্টাব্দে ফ্রাঙ্কল্যান্ড ২৪ পরগনার জমি জরিপের কাজ শুরু করেন, কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার আগেই তিনি মারা যান। পরে হগ ক্যামেরন এই অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করেন।
১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দে বক্সারের যুদ্ধের পর কোম্পানি বাংলায় জমি জরিপ ও রাজস্ব নির্ণয়ে আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে।
১৭৬৭ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ কোম্পানি জেমস রেনেলকে ভারতের সার্ভেয়ার জেনারেল বা জরিপ বিভাগের প্রধান হিসেবে নিয়োগ করে। তিনি বাংলার নদীপথ জরিপ করে মোট ১৬টি মানচিত্র তৈরি করেন।
১৭৮৬ খ্রিস্টাব্দে বোর্ড অফ রেভিনিউ (রাজস্ব বোর্ড) গঠিত হয়, যা রাজস্ব সংক্রান্ত বিষয়ে তদারকি করত।

৪.২ মীরকাশিম ও ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মধ্যে বিবাদ শুরু হয় কেন?

উত্তর: ব্রিটিশ কোম্পানির সহায়তায় নবাবী পদ লাভ করে মীরকাশিম ব্রিটিশদের প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে প্রায় ২৯ লক্ষ টাকা, বর্ধমান, মেদিনীপুর ও চট্টগ্রামের জমিদারির অধিকার কোম্পানিকে প্রদান করেন। ফলে প্রথমদিকে ব্রিটিশরা তাকে অনুগত বলে মনে করলেও, পরে তাদের ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়।

মীরকাশিম নিজেকে স্বাধীনচেতা শাসক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চান।

তিনি মুর্শিদাবাদের পরিবর্তে মুঙ্গেরকে বাংলার রাজধানী ঘোষণা করেন।
নবাবের পুরনো সেনাবাহিনীর পরিবর্তে তিনি আধুনিক সেনাবাহিনী গঠন করেন।
তিনি জগত্‌ সেটদের মতো ক্ষমতাশালী মহাজনদের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখেন।
প্রাথমিকভাবে ব্রিটিশ কোম্পানি এসব পরিবর্তন নিয়ে চিন্তিত না হলেও, পরে তাদের মধ্যে বিবাদ শুরু হয় কোম্পানির কর্মচারীদের ব্যক্তিগত বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে।

১৭৬৩ খ্রিস্টাব্দে মীরকাশিমের সঙ্গে ব্রিটিশ কোম্পানির সরাসরি সংঘাত শুরু হয়। কাটোয়া, মুর্শিদাবাদ, গিরিয়া, উদয়নালা ও মুঙ্গের যুদ্ধে মীরকাশিম পরাজিত হন।
পরে তিনি অযোধ্যার শাসক সুজাউদ্দৌলা ও মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের সঙ্গে মৈত্রী গড়ে তোলেন এবং ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বক্সারের যুদ্ধ করেন।
বক্সারের যুদ্ধে ব্রিটিশ বাহিনী জয়ী হয় এবং মীরকাশিম পালিয়ে যান।

অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস প্রশ্নপত্র প্রথম ইউনিট টেস্ট ২০২৫
Class 8 History Question Answer First Unit Test 2025
মডেল প্রশ্নপত্র সমাধান: ৩

১. প্রতিটি প্রশ্নের মান: ১

১. ইজারাদারি ব্যবস্থা কবে প্রবর্তিত হয়?

উত্তর: ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে।

২. ‘Code of Gentoo Laws’-এর রচয়িতা কে?

উত্তর: নাথানিয়ান হালেদ।

৩. ওয়ারেন হেস্টিংস কলকাতা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন কবে?

উত্তর: ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে।

৪. সুপ্রিম কোর্টের প্রথম প্রধান বিচারপতি কে ছিলেন?

উত্তর: স্যার এলিজা ইম্পে।

২. প্রতিটি প্রশ্নের মান: ২

১. কবে কলকাতায় হিন্দু কলেজ স্থাপিত হয়?

উত্তর: ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে।

২. ফোর্ট উইলিয়াম কবে তৈরি হয়?

উত্তর: ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে।

৩. কে এবং কবে ইজারাদারি ব্যবস্থা চালু করেন?

উত্তর: ওয়ারেন হেস্টিংস, ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে।

৪. কলকাতা মাদ্রাসা কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?

উত্তর: ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে।

৫. ‘কাউন্সিল অফ এডুকেশন’ কবে গঠিত হয়?

উত্তর: ১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দে।

৬. সুপ্রিম কোর্টের প্রথম প্রধান বিচারপতি কে ছিলেন?

উত্তর: স্যার এলিজা ইম্পে।

৩. প্রতিটি প্রশ্নের মান: ৩
১. রেগুলেটিং অ্যাক্টে কী কী বলা হয়েছে?

উত্তর: রেগুলেটিং অ্যাক্ট (১৭৭৩ খ্রিস্টাব্দ) ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রশাসনিক ও শাসনব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনে।

বাংলা, বোম্বে ও মাদ্রাজের মধ্যে বাংলার গভর্নরকে ‘গভর্নর-জেনারেল’ পদে উন্নীত করা হয়।
গভর্নর-জেনারেলের অধীনে চারজন সদস্যের একটি কাউন্সিল গঠিত হয়।
মাদ্রাজ ও বোম্বের গভর্নরদের কার্যক্রম বাংলার গভর্নর-জেনারেলের অধীনস্থ করা হয়।
গভর্নর-জেনারেল ও তাঁর কাউন্সিলের কার্যকাল পাঁচ বছর নির্ধারিত হয়।
কলকাতাকে ভারতের ব্রিটিশ শাসনের রাজধানী ঘোষণা করা হয়।

২. উডের ডেসপ্যাচ সম্পর্কে লেখো।

উত্তর: ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে বোর্ড অফ কন্ট্রোলের সভাপতি চার্লস উড শিক্ষাব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য একটি প্রতিবেদন পেশ করেন, যা ‘উডের ডেসপ্যাচ’ নামে পরিচিত।

এতে প্রাথমিক শিক্ষা থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত একটি সুসংগঠিত কাঠামো গড়ে তোলার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
ইংরেজি ও ভারতীয় ভাষা উভয়েরই চর্চার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা, বোম্বে ও মাদ্রাজে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়।
উচ্চ বিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়ানোর কথা বলা হয়।

৩. মেকলের প্রতিবেদন কী?

উত্তর: ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের ২ ফেব্রুয়ারি, টমাস ব্যাবিংটন মেকলে শিক্ষা সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন (Minutes on Education) পেশ করেন।

এতে বলা হয়, ভারতে ইংরেজি শিক্ষিত একটি মধ্যবিত্ত শ্রেণি গড়ে তোলা হবে, যারা ব্রিটিশদের প্রতি অনুগত থাকবে।
ভারতীয় ভাষায় শিক্ষাদানকারী প্রতিষ্ঠান কোনো সরকারি অনুদান পাবে না।
মেকলের মতে, ব্রিটিশ সংস্কৃতি ও ভাষা ভারতীয় সংস্কৃতির চেয়ে উন্নত, তাই ভারতের আধুনিকায়নের জন্য ইংরেজি শিক্ষা অপরিহার্য।

৪. প্রতিটি প্রশ্নের মান: ৫

১. কর্নওয়ালিসের পুলিশ ব্যবস্থার বিবরণ দাও।

উত্তর: ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে লর্ড কর্নওয়ালিস ব্রিটিশ শাসিত বাংলায় একটি নতুন পুলিশ ব্যবস্থা চালু করেন।

প্রতিটি থানার দায়িত্বে একজন দারোগা নিযুক্ত করা হয়, যার অধীনে ছিল কয়েকজন পুলিশ কর্মী।
ম্যাজিস্ট্রেটরা দারোগাদের ওপর তদারকি করতেন এবং জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রাখতেন।
পুলিশ ব্যবস্থার লক্ষ্য ছিল আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা এবং জমিদারদের প্রভাব কমানো।
তবে দারোগারা অনেক সময় দুর্নীতিতে লিপ্ত হতো এবং জমিদারদের সঙ্গে মিলিত হয়ে সাধারণ জনগণকে শোষণ করত।
১৮১২ খ্রিস্টাব্দে দারোগা ব্যবস্থা বিলুপ্ত করা হয়, এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থার দায়িত্ব কালেক্টরের হাতে দেওয়া হয়।
১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দে সিন্ধু প্রদেশে নতুন পুলিশ ব্যবস্থা চালু করা হয়, যা আধুনিক ভারতীয় পুলিশের ভিত্তি স্থাপন করে।

অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস প্রশ্নপত্র প্রথম ইউনিট টেস্ট ২০২৫
Class 8 History Question Answer First Unit Test 2025
মডেল প্রশ্নপত্র সমাধান: ৪

প্রতিটি প্রশ্নের মান: ১

১. দ্বিতীয় ফরাসি বিপ্লব কবে সংগঠিত হয়?

উত্তর: আগস্ট, ১৭৯২ খ্রিস্টাব্দে।

২. বাংলার প্রথম গভর্নর কে ছিলেন?

উত্তর: রবার্ট ক্লাইভ।

৩. ছিয়াত্তরের মন্বন্তর কবে হয়েছিল?

উত্তর: ১১৭৬ বঙ্গাব্দে (১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে)।

৪. অন্ধকূপ হত্যার প্রচারক কে ছিলেন?

উত্তর: হলওয়েল।

প্রতিটি প্রশ্নের মান: ১

১. লাহোর চুক্তি কবে স্বাক্ষরিত হয়?

উত্তর: ১৮৪৬ খ্রিস্টাব্দে।

২. মুর্শিদ কুলি খান কবে মারা যান?

উত্তর: ১৭২৭ খ্রিস্টাব্দে।

৩. বক্সারের যুদ্ধ কবে হয়েছিল?

উত্তর: ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দে।

৪. বাংলায় দ্বৈত শাসন কে প্রবর্তন করেন?

উত্তর: রবার্ট ক্লাইভ।

৫. পলাশীর যুদ্ধ কবে সংঘটিত হয়?

উত্তর: ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে।

৬. অযোধ্যা রাজ্য কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?

উত্তর: ১৭২২ খ্রিস্টাব্দে।

৭. সিপাহী বিদ্রোহ কবে সংঘটিত হয়?

উত্তর: ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে।

৮. সিরাজউদ্দৌলা কবে কলকাতা আক্রমণ করেন? তিনি কলকাতার নাম কী রাখেন?

উত্তর: ১৭৫৬ খ্রিস্টাব্দে সিরাজউদ্দৌলা কলকাতা আক্রমণ করেন। তিনি কলকাতার নাম আলিনগর রাখেন।

৯. টিপু সুলতান কোথাকার শাসক ছিলেন? তার রাজধানীর নাম কী ছিল?

উত্তর: টিপু সুলতান মহীশূরের শাসক ছিলেন। তার রাজধানীর নাম ছিল শ্রীরঙ্গপত্তনম।

প্রতিটি প্রশ্নের মান: ৩

১. বক্সারের যুদ্ধ ও দেওয়ানী লাভ সম্বন্ধে যা জানো, লেখো।

উত্তর: ১৭৬৩ খ্রিস্টাব্দে বাংলার নবাব মীর কাসিম ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। কিন্তু কাটোয়া, গিরিয়া, মুর্শিদাবাদ, উদয়নালা ও মুঙ্গেরের যুদ্ধে তিনি পরাজিত হয়ে অযোধ্যার নবাব সুজাউদ্দৌলা ও মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের সঙ্গে জোট বাঁধেন। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে এই যৌথ বাহিনীর সঙ্গে ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দে বক্সারের যুদ্ধ সংঘটিত হয়।

যুদ্ধে ব্রিটিশ কমান্ডার হেক্টর মনরোর নেতৃত্বে কোম্পানি বাহিনী জয় লাভ করে। মীর কাসিম ও সুজাউদ্দৌলা পালিয়ে যান, এবং মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম ব্রিটিশদের সঙ্গে সন্ধি করতে বাধ্য হন।

১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে “আলাহাবাদ চুক্তির” মাধ্যমে দ্বিতীয় শাহ আলম বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানির অধিকার ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে প্রদান করেন। এর ফলে কোম্পানি প্রথমবারের মতো রাজস্ব সংগ্রহের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ পায় এবং ভারতে তাদের রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের পথ সুগম হয়।

২. মুঘল সাম্রাজ্যের অবনতির কারণ কী ছিল?

উত্তর: মুঘল সাম্রাজ্যের অবনতি বহুবিধ কারণের ফলে ঘটেছিল। প্রধান কারণগুলো হলো:

দুর্বল ও অদক্ষ শাসক: ঔরঙ্গজেবের পরবর্তী শাসকরা দুর্বল ও অযোগ্য ছিলেন। তারা সাম্রাজ্য পরিচালনায় দক্ষতা দেখাতে পারেননি, যার ফলে প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।

অতিরিক্ত ব্যয় ও অর্থনৈতিক দুর্বলতা: বিশাল সামরিক বাহিনী রক্ষা, বিলাসবহুল রাজপ্রাসাদ ও স্থাপত্য নির্মাণে বিপুল খরচ হওয়ায় রাজকোষ শূন্য হয়ে যায়।

প্রশাসনিক দুর্বলতা: মনসবদারি ও জায়গিরদারি ব্যবস্থার দুর্নীতি সাম্রাজ্যের শক্তি ক্ষয় করে।

বিক্ষিপ্ত বিদ্রোহ ও শত্রুর আক্রমণ:

মারাঠাদের বিদ্রোহ: ছত্রপতি শিবাজীর নেতৃত্বে মারাঠারা মুঘল শাসনের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

বিদেশি আক্রমণ:

পারস্যের নাদির শাহ (১৭৩৯ খ্রি.) ও আফগানিস্তানের আহমদ শাহ আবদালি (১৭৪৮-১৭৬১ খ্রি.) একাধিকবার ভারত আক্রমণ করেন এবং প্রচুর সম্পদ লুট করেন।

ইউরোপীয় শক্তির উত্থান:

১৭শ ও ১৮শ শতকে ব্রিটিশ, ফরাসি, ওলন্দাজরা ভারতে আসতে শুরু করে এবং তারা ক্রমশ মুঘল শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। ব্রিটিশরা বিশেষ করে মুঘল সাম্রাজ্যের পতনে প্রধান ভূমিকা রাখে।

এই সব কারণের ফলে মুঘল সাম্রাজ্য ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের পর মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরকে ক্ষমতাচ্যুত করে ব্রিটিশরা ভারতে সরাসরি শাসন প্রতিষ্ঠা করে।

আরও দেখো: ক্লাস 8 ভূগোল সাজেশন প্রথম ইউনিট টেস্ট 2025
CLOSE

You cannot copy content of this page