তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের প্রশ্ন উত্তর ক্লাস 11 // দ্বিতীয় সেমিস্টার একাদশ শ্রেণী বিষয় বাংলা

এখানে ক্লাস 11 এর বাংলা বিষয়ের তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের প্রশ্ন উত্তর শেয়ার করা হলো। Class 11 Second Semester Bengali // ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পটি প্রেমেন্দ্র মিত্রের লেখা।

তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের বড়ো প্রশ্ন উত্তর ক্লাস 11 দ্বিতীয় সেমিস্টার বাংলা

১. নিরঞ্জন কে? কোন পরিস্থিতিতে গল্পকথক নিরঞ্জনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন?

বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক প্রেমেন্দ্র মিত্রের “তেলেনাপোতা আবিষ্কার” গল্পে নিরঞ্জন হল যামিনীর মায়ের বোনপো।
যামিনীর মায়ের দূর সম্পর্কের আত্মীয় এই নিরঞ্জন বছর চারেক আগে যামিনীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিদেশে চলে যায়। কিন্তু নিরঞ্জন সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি, বরং অন্যত্র সংসার শুরু করেছে। যামিনীর মা এখনও মনে করেন নিরঞ্জন ফিরে এসে যামিনীকে বিয়ে করবে, আর সেই আশায় মৃত্যুশয্যায় পড়ে রয়েছেন।

গল্পকথক এবং তার বন্ধুরা তেলেনাপোতায় আসার পরদিন সকালে যামিনীদের বাড়িতে খাওয়ার আয়োজন হয়। সেই সময় থেকেই গল্পকথক যামিনীর মধ্যে একধরনের চাঞ্চল্য ও উদ্বেগ লক্ষ্য করেন। খাওয়ার পর, বিশ্রাম নেওয়ার সময় যামিনী দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে তার মনিদাকে ডেকে পাঠায়। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, গল্পকথকের বন্ধু মনি এবং যামিনীর মধ্যে ভগিনীস্থানীয় সম্পর্ক ছিল। যামিনী ও মনির নীরব কথোপকথন থেকে গল্পকথক নিরঞ্জনের প্রসঙ্গটি জানতে পারেন।

মনি গল্পকথককে জানায়, নিরঞ্জন একসময় যামিনীকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিদেশে গিয়েছিল যে ফিরে এসে তাকে বিয়ে করবে, কিন্তু এখন সে অন্যত্র সংসার করছে। যামিনীও এ কথা জানে, কিন্তু মাকে সত্যিটা জানাতে পারে না, কারণ এতে মা দুঃখে মৃত্যুর মুখে পড়তে পারেন।

গল্পকথক যামিনীর মায়ের কাছে নিরঞ্জনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে তার সঙ্গে দেখা করে, যাতে বৃদ্ধা শান্তিতে মৃত্যুবরণ করতে পারেন। বৃদ্ধা মনে করেন যে, তার বহু প্রতীক্ষিত নিরঞ্জন ফিরে এসেছে, এবং সেই শান্তিতে তার প্রাণবায়ু মুক্তি পায়।

২. ‘মনে হবে, তেলেনাপোতা বলে কোথায় কিছু সত্যি নেই’—কার মনে হবে? এই মনে হওয়ার কারণ কী?

উত্তর:
ছোট গল্পের আঙিনায় নবআলোকবর্তিকা কথাসাহিত্যিক প্রেমেন্দ্র মিত্রের লেখা “কুড়িয়ে ছাড়িয়ে” গল্পগ্রন্থের অন্তর্গত ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পে প্রশ্নদ্ধৃত উক্তিটি—ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মানসিক অবসাদে জর্জরিত গল্পকথকের এমনটা মনে হয়েছে।

আশৈশব কল্লোলীনি কোলকাতার কোলাহলমুখর আলোকোজ্জ্বল পরিবেশে বড়ো হয়ে কোলকাতার বাইরে অন্য পরিবেশে গিয়ে সেখানকার হতদরিদ্র অসহায় এক বৃদ্ধা এবং তার কন্যার চরম দূরবস্থা দেখে আবেগ তাড়িত হয়ে ছিলেন আমাদের গল্পকথক। আর এই আবেগের বশবর্তী হয়ে মধ্যবিত্ত মানসিকতা নিয়ে যামিনীকে উদ্ধারের মনোবাসনা জেগে ওঠে। তার মনের মধ্যে থাকা সুকুমার প্রবৃত্তিগুলি মহূর্তের মধ্যে আত্মপ্রকাশ করে। আর তাতেই বীর পুরুষের মতো নাম্নকোচীত ভঙ্গিমায় বলে ফেলেন:

“না, মাসিমা, আর পালাবো না।”

অর্থাৎ, যামিনীকে সে বিবাহ করবে। তেলেনাপোতার নির্মম বাস্তবতা তাকে ত্যাগব্রতে উদ্বুদ্ধ করেছিল। মুহূর্তের জন্য হলেও ভুলে গিয়েছিলেন:

“অরণ্য পুরীতে থাকা লোকাচার বর্জিত ভানুমতীদের সত্যচরণেরা কখনো কলকাতায় নিয়ে যেতে পারবেনা।”

ঘটেছিলও তাই। তাই মাছধরা শেষ করে ফিরে আসার সময় বর্শীটা অজান্তেই ফেলে রেখেছিল, কিংবা হয়তো ইচ্ছে করেই ফেলে এসেছিল, যাতে করে দ্বিতীয়বার ফিরে এসে নিজের দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারে। তবে গল্পের পরিবেশে দেখা যায় কলকাতার পরিচিত পরিবেশে ফিরে আসে এবং ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গল্পকথকের মনোজগতে গল্পের নায়িকা যামিনী যেন কোনো এক স্বপ্নপুরীর নায়িকার মতো হারিয়ে গেছে। তাই সেই মুহূর্তে তেলেনাপোতার স্মৃতি তার কাছে মানসিক অবসাদ ও মধ্যবিত্ত সুলভ পলায়নী মানসিকতার পরিচয় তুলে ধরে। আর তেলেনাপোতা? একবার ক্ষণিকের জন্য আবিষ্কৃত হয়ে চিরন্তন রাত্রির অতলায়তায় নিমগ্ন হয়ে গিয়েছে।

ক্লাস 11 তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের বড়ো প্রশ্ন উত্তর // ক্লাস 11 দ্বিতীয় সেমিস্টার বাংলা
৩. তেলেনাপোতা যাওয়ার কারন কী? একে লেখক আবিষ্কার বলেছেন কেন? ১+৪

প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্প অনুসারে তেলেনাপোতা যাওয়ার কারন হল অবসর সময় কাটানো এবং মৎস্য শিকার করা।

লেখক তেলেনাপোতা যাওয়াকে আবিষ্কার বলেছেন। সভ্য জগতের এত কাছাকাছি দূরত্বের মধ্যে এমন একটি দমবন্ধ করা পরিবেশে স্থির জীবন প্রবাহের সন্ধান পাওয়া শহরাঞ্চলের ব্যস্ত মানুষের কাছে এক বিস্ময়কর আবিষ্কার।

আবিষ্কার শব্দের দুটি অর্থ ইংরেজিতে পাওয়া যায়- Discovery ও Invention. প্রথমটির অর্থ যা প্রত্যক্ষ করা যায়, আছে কিন্তু তার সন্ধান মেলেনি। আর দ্বিতীয়টির অর্থ যা অপ্রত্যক্ষ তাকে খুঁজে নেওয়া। গল্পের তেলেনাপোতা আপাত প্রত্যক্ষগোচর হলেও শেষ পর্যন্ত আমরা উপলব্ধি করি যে তার অবস্থান মানুষের মনের মধ্যে। অপ্রত্যক্ষ তেলেনাপোতা খোঁজার মধ্যে আমরা প্রধানত Invention-এর বৈশিষ্ট্য পায়।

তেলেনাপোতা এমন এক জায়গা যেখানকার এক আশ্চর্য সরোবরে পৃথিবীর সবচেয়ে সরল মাছেরা প্রথম বড়শি বিদ্ধ হওয়ার অপেক্ষায় উদগ্রীব হয়ে আছে।এই অঞ্চল প্রকৃতপক্ষে এক শ্মশানের দেশ।এই অঞ্চলটির বেশিরভাগ মানুষের কাছে অজ্ঞাত। গ্রামীণ জীবনের এই পরিচিত রূপের মধ্যে মনের অচেনা এক জগৎকে উপলব্ধি করা হয়েছে বলেই লেখক একে আবিষ্কার বলেছেন।

৪. তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পে গোরুর গাড়ি চড়ে যাত্রাপথের যে বর্ণনা লেখক দিয়েছেন তা আলোচনা করো।

উত্তর: প্রেমেন্দ্র মিত্র রচিত ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পে’ তেলেনাপোতা আবিষ্কারের উদ্দেশ্যে গরুর গাড়িতে চড়ে যাত্রাপথের যে বর্ণনা লেখক দিয়েছেন তা রহস্য রোমাঞ্চে ভরা এক কাহিনির বর্ণনা। লেখক গল্পের শুরুতেই বলেছেন বিকেলের পড়ন্ত রোদে দুজন বন্ধুসহ একটি ভিড় বাসে উঠে যাত্রা করতে হবে। ঘন্টা দুয়েক পরে আচমকা রাস্তার মাঝখানে নেমে পড়তে হবে। প্রতীক্ষার অবসানে একটি গরুর গাড়ি জঙ্গলের ভিতর থেকে নালা দিয়ে ধীর মন্থর গতিতে এগিয়ে আসবে।

গরুগুলি যেমন ছোট গরুর গাডিটিও তেমনই ছোট।তিনজনে সেই ছোেট গরুর গাড়িতে কোনওরকমে বসবেন। গোরুর গাডিটি ঘন অন্ধকার, সুরঙ্গের মতো পথ দিয়ে চলতে শুরু করবে। প্রতি মুহূর্তে মনে হবে কালো অন্ধকারের দেয়াল বুঝি অভেদ্য। গরুর গাড়িটি ধীর গতিতে এগিয়ে যাবে। গাড়িতে জায়গার অভাবে অস্বস্তি বোধ হতে থাকবে। বন্ধুদের সঙ্গে অনিচ্ছাকৃত সংঘর্ষ বাঁধবে। চারিদিকের গাঢ় অন্ধকারে মনে হবে পরিচিত পৃথিবীকে দূরে কোথাও ফেলে এসেছেন। অনুভূতিহীন কুয়াশাময় এক জগৎ তখন শুধু চারিধারে। সময় সেখানে স্তদ্ধ ও স্রোতহীন | সময় স্তব্ধ সুতরাং এক আচ্ছন্ন ভাব ক্রমশ গ্রাস করবে।

হটাৎ এক সময় উৎকট এক বাদ্য ঝঞ্চনায় জেগে উঠে ছইয়ের ভিতর থেকে আকাশের তারা দেখা যাবে। গাড়ির গারোয়ান থেকে থেকে বাঘ তাড়ানোর জন্য ক্যানেস্তারা বাজাচ্ছে। ক্যানেস্তারা দিয়ে বাঘ তাড়ানো সম্ভব কিনা বা মহানগরী থেকে মাত্র ত্রিশ মাইল দূরে ব্যাঘ্রসংকুল স্থানের অস্তিত্ব কীভাবে সম্ভব হল এ প্রশ্ন মনে উঁকি দেবে। ততক্ষনে গোরুর গাড়িটি একটি বিশাল মাঠ পার হয়ে যাবে। কৃষ্ণপক্ষের চাঁদের স্থিমিত আলোয় প্রাচীন অট্টালিকার এক ধংসাবশেষের সামনে এসে দাঁড়াবেন। কাঠের পুতুলের মতো আড়ষ্ট ভাবে গরুর গাড়ি থেকে নামতে হবে। তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পে লেখক এভাবেই গরুর গাড়িতে চড়ে তেলেনাপোতা যাত্রার বর্ণনা দিয়েছেন।

ক্লাস 11 দ্বিতীয় সেমিস্টার বাংলা তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের বড়ো প্রশ্ন উত্তর
৫. ” কে, নিরঞ্জন এলি?” বক্তা কে? নিরজ্ঞন কে? বক্তা কেন উদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন?

উত্তর: প্রেমেন্দ্র মিত্র রচিত ‘ তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পে উদ্ধৃত লাইনটির বক্তা হলেন যামিনীর মা।

যামিনীর মার এক দূর সম্পর্কের বোনপোর একটি ছেলের সাথে ছেলেবেলায় যামিনীর বিয়ে ঠিক হয়েছিল, সে হোল নিরঞ্জন।

বক্তা অর্থাৎ যামিনীর মা উদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন কারন যামিনীর সঙ্গে নিরঞ্জনের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। চার বছর আগে সে বলে গিয়েছিল বিদেশের চাকরি থেকে ফিরে যামিনীকে সে বিয়ে করবে। সেই থেকে যামিনীর মা তার আশায় দিন গুনে চলেছে

যামিনীর মার কর্তব্য তার মেয়েকে সৎপাত্রে দান করা। নিরঞ্জন তাকে কথা দেওয়ায় বৃদ্ধা নিরঞ্জনের জন্য অপেক্ষা করে আছে। সংকীর্ণ অন্ধকার ঘরে অপেক্ষারত বৃদ্ধা তাই পুরুষকন্ঠের কণ্ঠস্বর শুনেই উৎকণ্ঠিত হয়ে ওঠেন। মনে করেন তার মেয়েকে বিয়ে করার জন্য বুঝিবা তার বোনপো উপস্থিত হয়েছে। তাই লেখক ও তার দুই বন্ধু তেলেনাপোতা আবিষ্কার করতে যামিনীদের বাড়িতে উপস্থিত হলে বৃদ্ধার সাথে দেখা করতে গেলে বৃদ্ধা উদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন।

৬. ‘রাত্রির মায়াবরন সরে গিয়ে তার নগ্ন ধ্বংসমূর্তি এত কুৎসিত হয়ে উঠতে পারে আপনি ভাবতে পারেননি।’ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে উদ্দিষ্ট লাইনটির তাৎপর্য বর্ণনা কর।

উত্তর: প্রেমেন্দ্র মিত্র রচিত ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পে লেখক ও তার দুই বন্ধু কলকাতা থেকে মাইল দূরে এক গ্রামে উপন্থিত হয়েছিলেন। তাদের লক্ষ্য ছিল তেলেনাপোতা আবিষ্কার। গোরুর গাড়ি চড়ে অন্ধকারে তারা এমন এক স্থানে উপন্থিত হলেন যেখানে বিশালায়তন একটি জীর্ন অট্টালিকা ভাঙা ছাদ, ধসে পড়া এক দেয়াল, পাল্লাহীন জানলা দুর্গের মতো দাঁড়িয়ে আছে। তারই একটি ঘরে তাদের বাসস্থান। দুইবন্ধু যখন ঘুমে আচ্ছন্ন, লেখক গরম ও মশাদের হাত থেকে পরিত্রান পেতে ছাঁদে চললেন। সেখানে দেখতে পাবেন এক রহস্যময় ছায়ামূর্তি। সকাল হলে সমস্ত আয়োজন নিয়ে পুকুরের ধারে লেখক গেলেন তেলেনাপোতা আবিস্কারের উদ্দেশ্যে।

কিন্তু সেখানে কলসি নিয়ে জল আনতে যাওয়া একটি মেয়ের শান্ত, মধুর ও গম্ভীর কন্ঠস্বর লেখককে তেলেনােপাতা আবিষ্কার থেকে বিচ্যুত করে দেবে। মেয়েটি যামিনী। যামিনীর দৈহিকরূপ প্রাচীন ধ্বসোন্মুখ অট্টালিকার মতোই শ্রীহীন জীর্ন। রাত্রির মায়াবরণ সরে গিযে তার নগ্ন ধ্বসমূর্তি এত ক্যুৎসিত হয়ে উঠতে পারে তা লেখকের চিন্তার বাইরে ছিল।

Class 11 Bengali Second Semester তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের ৫ নম্বরের প্রশ্ন উত্তর
৭. তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পের নামকরণের সার্থকতা আলোচনা করো।

‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পের নামকরণটি অভিনব এবং প্রচলিত নামকরণের কৌশল ভেঙে দিয়েছে। মধ্যমপুরুষের বয়ানে রচিত এই গল্পটি বাংলা সাহিত্যের একটি উল্লেখযোগ্য সৃষ্টি। আধা-বাস্তব ও স্বপ্নের সম্মিলনে এর নামকরণ অসীম ব্যঞ্জনাময়।

লেখক ‘আবিষ্কার’ শব্দটি বারবার ব্যবহার করে একটি রোমাঞ্চকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন। তিনি বলেন, “তেলেনাপোতা আপনারাও একদিন আবিষ্কার করতে পারেন।” আবার উল্লেখ করেন, “একদিন তেলেনাকে শোগ আপনি আবিষ্কার করতে পারেন।” পাঠকদের বোঝান যে, তেলেনাপোতা আবিষ্কার করতে হলে একদিন বিকেল বেলার ভিড়ে বের হতে হবে।

গল্পের শেষে কথকের আবিষ্কৃত তেলেনাপোতা স্মৃতি থেকে হারিয়ে যায়। ব্যস্ত শহরের জীবনে শান্তির স্থানটি এক পলকে দৃশ্যমান হয়ে আবার অদৃশ্য হয়ে যায়। লেখক প্রতীকের মাধ্যমে ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ নামটি সার্থকভাবে তুলে ধরেছেন, যা নামকরণের পর্যায়ে উন্নীত হয়।

৮. “আপনার আসল উদ্দেশ্যে আপনি নিশ্চয় বিস্মৃত হবেন না।” উদ্দেশ্যটি কী ছিল? উদ্দেশ্যে সফল হওয়ার জন্য ব্যক্তিটি কী ধরনের অবস্থার মধ্যে পড়েছিল? ব্যক্তিটি কি তার উদ্দেশ্যে সফল হয়েছিল?

উত্তর: প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পে কথকের আসল উদ্দেশ্য ছিল তেলেনাপোতা আবিষ্কার করা।

তেলেনাপোতা আবিষ্কারের জন্য গল্পকথক শ্যাওলা ঢাকা এক ভাঙা ঘাটের একদিকে বসে গুড়ি পানায় সবুজ জলের মধ্যে বঁড়শি দিয়ে মাছ ধরার আয়োজন করেছিলেন। কিন্তু বঁড়শিতে তেলেনাপোতা আবিষ্কৃত না হওয়ায় একটি মাছরাঙা পাখি বারবার উপহাস করার জন্য জলে ঝাঁপিয়ে পড়ছিল। দুটো ফড়িং কাচের মতো পাখা নেড়ে ফাটনাটার উপর বসার চেষ্টা করছিল। এক মোটা সাপ ভাঙা ঘাটের ফাটল থেকে বের হয়ে পুকুরটা সাঁতরে পার হয়ে যেতে লাগল। ব্যক্তিটি ঘুঘুর ডাকে আনমনা হয়ে গেল।

হঠাৎ তিনি দেখতে পেলেন পিতলের কলসিতে একটি মেয়ে জল ভরছে। কলসি নিয়ে ফিরে যেতে যেতে মেয়েটি ব্যক্তিটিকে বঁড়শিতে টান দিতে বলবে। কিন্তু মেয়েটির শান্ত গম্ভীর কণ্ঠস্বরের আকস্মিক চমকে ব্যক্তিটি ছিপে টান দিতে ভুলে যায়।

তাহলে, ব্যক্তিটির তেলেনাপোতা আবিষ্কারের উদ্দেশ্য সফল হয়নি। হতাশ হয়ে তাকে সাজসরঞ্জাম নিয়ে উঠে পড়তে হয়।

আরও দেখো: ছুটি গল্পের বড়ো প্রশ্ন এবং উত্তর

Leave a Comment

CLOSE

You cannot copy content of this page