এখানে মোবাইলের ভালো মন্দ (মোবাইলের সুফল ও কুফল) সম্পর্কে Class 5, Class 6, Class 7, Class 8, Class 9 ও মাধ্যমিকের জন্য প্রবন্ধ রচনা লিখে দেওয়া হয়েছে।
মোবাইলের ভালো মন্দ রচনা: ১ (মাধ্যমিকের জন্য)
“কত অজানারে জানাইলে তুমি
কত ঘরে দিলে ঠাই
দুরকে করিলে নিকট বন্ধু
পরকে করিলে ভাই।”
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
ভূমিকা:
আধুনিক প্রযুক্তি বিদ্যার এক বিস্ময়কর আবিষ্কার হল মোবাইল ফোন। টেলিফোনের উন্নততর সংস্করণ। যোগাযোগ ব্যবস্থার অন্যতম হাতিয়ার হল মোবাইল ফোন।
এই ক্ষুদ্র মোবাইল যন্ত্রটির মাধ্যমে আমরা মুহূর্তে দেশে আর বিদেশে থাকা মানুষের সাথে সহজে যোগাযোগ করতে পারি।
গত কয়েক বছরের মধ্যে এই ছোট যন্ত্রটি আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দেখা দিয়েছে। মোবাইল ছাড়া আমাদের এক মুহূর্ত চলে না।
মোবাইল এর আবিষ্কার :
প্রথম মোবাইল ফোন তৈরি হয়েছিল ১৯৭৩ সালে আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে, আর তা তৈরি করেছিলেন ইঞ্জিনিয়ার মার্টিন কুপার। তাকেই বলা হয় মোবাইল ফোনের জনক।
মোবাইল ফোন ব্যবহারের প্রসার:
এখন মোবাইল ফোন ব্যবহার সর্বস্তরেই। সমাজের উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত বা নিম্নবিত্ত সব পরিবারেই মোবাইল ফোনের ব্যবহার চড়িয়ে পড়েছে।
সুবিধা জনক মূল্য ও আকর্ষণীয় শর্তে পাওয়া যায় বলে এটা সর্বস্তরের মানুষ ব্যবহার করেছে, বিশেষ করে আজ কালকার ছেলেমেয়েরা। ভবিষ্যৎ এ এর ব্যবহার আরও বৃদ্ধি পাবে বলে এদের ধারণা।
মোবাইল ফোনের সুবিধা /উপকারিতা:
মোবাইল ফোন এমন একটি বৈদ্যুতিক উপকরণ যার উপযোগিতা আধুনিক জীবনে সর্বাত্মক। চিঠি লেখার ও পাওয়ার অপেক্ষা ও অনিশ্চয়তাকে দূর করে মোবাইল নিয়ে এসেছে এস .এম. এস পরিষেবা। কম্পিউটারের দুনিয়াকেও অনেকটাই হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে মোবাইল ফোন।
স্থির এবং চলমান ফটোগ্রাফির অনাআসে সম্ভব এই মোবাইল ফোনের সাহায্য। মোবাইল রয়েছে বিনোদনের অসহ্য ব্যবস্থা। টিভির অনুষ্ঠানেও মোবাইল ফোনের সাহায্যে উপভোগ করা যায়।
মোবাইলের মাধ্যমে নেট ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাকে যেমন কার্যকর করা সম্ভব। তেমনি আগামী দিনে এটি ক্রেডিট কার্ডের বিকল্প হিসেবেই ব্যবহৃত হতে চলেছে। এভাবে মোবাইল ফোন এই একটি মাত্র যন্ত্র একের আধারে যেন আলাদিনের মায়ার প্রদীপের মতো জাদুময় শক্তির অধিকারী।
মোবাইল ফোনের সুবিধা বা খারাপ দিক:
বিজ্ঞানের যে কোন আবিষ্কারের মত মোবাইলেরও কিছু নেতিবাচক দিক আছে। কিশোর মনে মোবাইল ফোনের প্রতি যে আকর্ষণ তৈরি হচ্ছে তা এক নেতিবাচক সামাজিক চাহিদার জন্ম দিচ্ছে।
মোবাইলের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার বিদ্যালয়ের পরিবেশকে নষ্ট করে দিচ্ছে। আবার মনঃসংযোগেও ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। নানারকম সামাজিক দূষণ ও এর মাধ্যমে হয়।
নাগরিক জীবনে মোবাইলের অসতর্ক ব্যবহার, গাড়ি চালানোর সময় কিংবা রাস্তা পারাপার হওয়ার সময় দুর্ঘটনা ডেকে আনছে। সব মিলিয়ে মোবাইল ফোনের যথাযথ ব্যবহার অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। বিদ্যালয় স্তরে এর ব্যবহার নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রিত করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
উপসংহার:
নব প্রযুক্তির মানুষেরা মোবাইল ব্যবহারে এখন খুশি। দোষ নেই মোবাইলের বরং মানব সমাজে আমরা প্রতিনিয়ত এই যন্ত্রের অপব্যবহার করে পৌঁছে দিয়েছি অভিশাপের মহলে। আমাদের সচেতনতা বাড়ালে আর কোনো রকম অভিশাপ বস্তু হবেনা মোবাইল সর্বোপরি বলা যায় –
“ভালো-মন্দ সব মিলিয়ে আধুনিক এ কোন জয় করেছে সবার হৃদয় সব মানুষের মন।”
মোবাইলের সুফল ও কুফল রচনা: ২ ( Class 9 এর ছাত্রছাত্রীদের জন্য)
ভূমিকা:
আধুনিক সভ্যতায় বিজ্ঞানের সাম্প্রতিকতম আবিষ্কার মোবাইল ফোন। এটি আসলে প্রচলিত টেলিফোনেরই নবতম সংস্করণ। মোবাইল ফোন এখন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে। কী আনন্দে লাঠির মাথায় বেঁধে সেলফি তোলে, আর হাসে! শিশু, বৃদ্ধ, কৃষক, রিকশাওয়ালা, ড্রাইভার, গার্মেন্ট কর্মী, খেয়া নৌকার মাঝি-সব শ্রেণির মানুষের হাতে এখন মোবাইল ফোন। একে ছাড়া এখন আমরা একমুহূর্তও থাকতে পারি না।
মোবাইল ফোনের ভালো দিক:
বর্তমান বিশ্বকে আমাদের পকেটে এনে দিয়েছে মোবাইল ফোন। দূর আজ দূর নয়, দূরে থাকা মানুষ আজ প্রবাসী নয়। রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে, গাড়িতে বসে যেতে যেতে, খেলার মাঠে খেলা দেখতে দেখতে আমরা তাদের সঙ্গে চালিয়ে যেতে পারি একান্তের সংলাপ। রাস্তাঘাটে নিজে অথবা অন্য কেউ বিপদে পড়লে আমরা দ্রুত বাড়িতে খবর দিতে পারি। আকস্মিক বিপদে মোবাইল খুব গুরুত্বপূর্ণ।
তা ছাড়া জরুরি ক্ষেত্রে যেমন আগুন লাগলে, কেউ অসুস্থ হলে আমরা মোবাইলের সাহায্যে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারি। দাগি অপরাধী ধরার ক্ষেত্রেও এখন মোবাইল বেশ সহায়ক। অপরাধীর অবস্থান এবং গতিবিধি নির্ণয়ের জন্য পুলিশ এখন মোবাইল ফোনের টাওয়ার অঞ্চল দেখে অনুসন্ধানের পথকে সহজ করেছে। শুধু তাই নয়, বর্তমানে ব্যাংকের লেনদেনও ঘরে বসে মোবাইলের সাহায্যে করা যায়। এ ছাড়া বর্তমান ইনটারনেটের যুগে ফেসবুক বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম একটি মাধ্যম মোবাইল। এর মাধ্যমেই হোয়াটস অ্যাপ, ম্যাসেনজার ইত্যাদি অ্যাপসের মাধ্যমে ভাব বিনিময়ের পাশাপাশি দ্রুত আদানপ্রদান করা সম্ভব হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদির। সস্তা ও সময় স্বল্পতায় সব দিক থেকে মোবাইল ফোন খুবই জরুরি।
মোবাইল ফোনের মন্দ দিক:
প্রত্যেক জিনিসেরই একটি নেতিবাচক দিক থাকে। মোবাইল ফোনও তার ব্যতিক্রম নয়। অধিক মোবাইল ব্যবহারে মানুষের দেহে নানা ধরনের রোগ সৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে মস্তিষ্কঘটিত রোগের অন্যতম কারণ মোবাইল ফোন। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা WHO-এর মতে মোবাইলের ব্যাপক প্রচলনের ফলেই বহু প্রজাতির পাখি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে, নারকেল ইত্যাদি ফলের দারুণ ক্ষতি হচ্ছে, এ ছাড়া মানুষেরও নানাভাবে ক্ষতি হচ্ছে। মোবাইল বহু ক্ষেত্রে মনকে চঞ্চল করে আমাদের দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য করে দিচ্ছে, এর ফলে রাস্তাঘাটে প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটছে।
আজকাল মোবাইল কানে রাস্তা বা রেললাইন পার হতে গিয়ে বহু মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। গাড়ির চালকেরাও মোবাইলে কথা বলতে বলতে গাড়ি চালানোর ফলে ঘটছে দুর্ঘটনা। কিশোর বয়সের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার ক্ষতি করে মোবাইল ফোন। সেলফি তুলে নিজেকে অন্যের কাছে আরও আকর্ষণীয় করতে বর্তমান প্রজন্ম নিয়ে নিচ্ছে অসম্ভব সব ঝুঁকি যার ফলে দুর্ঘটনা ঘটছে। খবরের কাগজে নিয়ত প্রকাশ পাচ্ছে সেলফি তুলতে গিয়ে মৃত্যু। অপরাধ জগতেও অপরাধীরা নিজেদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করতে সক্ষম হচ্ছে। বিপদ ঘটার আগেই তারা সতীর্থদের মোবাইলের সাহায্যে সাবধান করে দিচ্ছে, যাতে তারা নিরাপদ আশ্রয়ে আত্মগোপন করতে পারে। সুতরাং, মোবাইল যে নিরঙ্কুশভাবে ভালো, তা বলা যায় না।
উপসংহার:
আসলে কোনো জিনিসেরই যথেচ্ছ ব্যবহার ভালো নয়। মোবাইল ফোনের ব্যবহার সম্পর্কে এখনও আমাদের সমাজে সচেতনতার অভাব। বর্তমানে সরকার আইন করে চালকদের গাড়ি চালানোর সময় 1 মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। আইন ভাঙলে জেল ও জরিমানা হতে পারে। তবে এই ব্যাপারে আইনের চেয়ে বড়ো জিনিস হল মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি। এই দিকটার ওপরই বেশি জোর দিতে হবে।
মোবাইলের ভালো মন্দ রচনা: ৩ (Class 6 এর ছাত্রছাত্রীদের জন্য)
সূচনা:
যোগাযোগের অন্যতম প্রধান মাধ্যম মোবাইল ফোন। মোবাইল ফোন টেলি যোগাযোগের ক্ষেত্রে এক নব দিগন্তের রচনা করেছে।
মোবাইল ফোন কি:
একটি ছোট আকারের ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস হল মোবাইল ফোন। এটি দিয়ে সাধারণত কথা বলা যায়। এছাড়া এটির সাথে ক্যামেরা থাকে, যা দিয়ে ছবি তোলা যায়। মোবাইলে রেডিওর অনুষ্ঠান শোনা যায়।
আবিষ্কার:
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকেই মোবাইল ফোনের উদ্ভাবন কাজ শুরু হয়। আমেরিকার বিখ্যাত বিজ্ঞানী গ্রাহাম বেল প্রথম টেলিফোন আবিষ্কার করেন । তা দুই সহকারি গবেষক ছিলেন রিচার্ড এইচ ফ্রাঙ্কিয়াল এবং জুয়েল এস এঞ্জেল। এরাই পর্বটি কালে মোবাইল ফোনের কৌশল উদ্ভাবন করেন। এরপর ১৯৭৩ সালে মার্টিন কুপার হাতে ধরা ছোট মোবাইল সেট তৈরি করেন।
ব্যবহারের অসুবিধা:
বর্তমানে মোবাইল ফোনের সুবিধার পাশাপাশি অসুবিধা আছে। এটি দিয়ে খুথে বাত্রা পাঠানো যায়। ভিডিও চিত্র ধারণ করে পাঠানো যায়। ছবি তোলা ও রেডিও শোনা যায়। তাছাড়া বর্তমানে কিছু মোবাইলের মাধ্যমে কম্পিউটারের কিছু কাজও করা যায়।
ব্যবহারের অসুবিধা:
বর্তমানে মোবাইল ফোনের সুবিধার পাশাপাশি অসুবিধা আছে। মোবাইল ফোনে খুব বেশি কথা বললে কানের সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া স্বাস্থ্যের ক্ষতি ও হতে পারে।
মোবাইল ফোনের গুরুত্ব:
আধুনিক জীবনে মোবাইল ফোনের গুরুত্ব অনেক। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তের মানুষের কথা মুহুর্তেই শোনা যায় ও বলা যায়। তাছাড়া মোবাইল ফোন বর্তমানে মিনি কম্পিউটার হিসেবে কাজ করছে।
উপসংহার:
মোবাইল ফোন তথ্য প্রযুক্তির এক অভিনব সংযোজন। এর দ্রুত প্রসার দূরত্বকে যেমন জয় করেছে তেমনি যোগাযোগের ক্ষেত্রে সৃষ্টি করেছে অবিচ্ছিন্ন বন্ধন। মোবাইল ফোনের প্রয়োজনীয় ব্যবহারের পাশাপাশি এর অপব্যবহার থেকে সকলকে সচেতন থাকতে হবে।
রচনাটির অন্য নাম: মোবাইল ফোন অথবা তথ্যপ্রযুক্তির বড় আবিষ্কার মোবাইল ফোন
মোবাইলের ভালো মন্দ রচনা: ৪ (Class 8 ও Class 7 এর ছাত্রছাত্রীদের জন্য)
ভূমিকা:
আধুনিক প্রযুক্তি বিদ্যার নবতম আবিষ্কার হল ইন্টারনেট, ইমেল ও মোবাইল ফোন। যোগাযোগ ব্যবস্থার অন্যতম হাতিয়ার হল মোবাইল ফোন। আজকের দিনে কোন আত্মীয় পরিজন, বন্ধুবান্ধব বা অন্য কাউকে চিঠি লিখে তার উত্তরের প্রতীক্ষায় ডাক পিয়নের পথ চেয়ে বসে থাকতে হয় না।
তার বিহীন এই ক্ষুদ্র মোবাইল যন্ত্রটির মাধ্যমে আমরা মুহূর্তে দেশে বা বিদেশে থাকা মানুষের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ করতে পারি, সমস্ত প্রকার খবরা-খবরের আদান-প্রদান করতে পারি। গত কয়েক বছরের মধ্যে এই ছোট যন্ত্রটি আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দেখা দিয়েছে। মোবাইল ফোন ছাড়া আমাদের এক মুহূর্ত চলে না।
মোবাইল ফোন ব্যবহারের প্রসার:
বর্তমানে মোবাইল ফোনের ব্যবহার সর্বস্তরেই। সমাজের উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত বা নিম্নবিত্ত সব পরিবারেই মোবাইল ফোনের ব্যবহার ছড়িয়ে পড়েছে। এই যন্ত্রটি স্বল্প মূল্যেও পাওয়া যায় আবার বেশি দামের স্মার্টফোনও আছে। সুবিধা জনক মরলে ও আকর্ষণীয় শর্তে পাওয়া যায় বলে এটা সর্বস্তরের মানুষ ব্যবহার করছে। বিশেষত বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের কাছে এর আকর্ষণ অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। ভবিষ্যতেও এর ব্যবহার আরো বৃদ্ধি পাবে বলে সকলের ধারণা।
মোবাইল ফোনের জনপ্রিয়তার কারণ:
বর্তমানে মোবাইল ফোনের জনপ্রিয়তার অনেকগুলো কারণের মধ্যে বিশেষ বিশেষ কারণগুলি হল প্রথমত- দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য মোবাইল ফোন এত জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। স্বল্পমূল্য কোনটি কেনা যায় বলে সব ধরনের মানুষ এটি ব্যবহার করতে পারে। দ্বিতীয়ত – মোবাইল ফোন সঙ্গে নিয়ে সর্বত্র যাওয়া যায় এবং সব জায়গায় এটা ব্যবহার করা যায় অতি সহজে। তৃতীয়ত – কম খরচে এস .এম. এস এর মাধ্যমে গ্রাহক যেকোনো সংবাদ আত্মীয় পরিজন, বন্ধুবান্ধব বা অন্য কোন জায়গায় পৌঁছে দিতে পারে। চতুর্থত- ল্যান্ড লাইন ফোনে মাঝে মাঝে প্রচুর টাকার বিল আসে। মোবাইল ফোনের ক্ষেত্রে এরকম ঘটনা ঘটে না।
পুলিশের যেকোনো তদন্তের কাজে মোবাইল ফোন একটা বড় হাতিয়ার রূপে কাজ করে। অপরাধীদের ব্যবহার করা মোবাইল ফোনের কল লিস্ট চেক করে অন্যান্য সন্দেহভাজন ব্যক্তির নাম খুঁজে পাওয়া যায়। যেকোনো অপরাধমূলক তদন্তের কাজে মোবাইল ফোন এখন একটি অপরিহার্য বস্তু। এছাড়া বর্তমানে স্মার্টফোন বা অ্যান্ড্রয়েড ফোনে বিভিন্ন বিষয়ের খোঁজখবর, প্রাত্যহিক খবর, এফ এম রেডিও, ক্যামেরা প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয় মোবাইল ফোন থেকে পাওয়া যায়। মোবাইল ফোন শুধু প্রয়োজন মেটাই না, চিত্ত বিনোদনের একটা মাধ্যম হয়ে উঠেছে। WhatsApp এর মাধ্যমে খুব কম সময়ে ছবি, বা কোন ঘটনা বা অফিস আদালতের সার্কুলার, মেমো প্রভৃতি খুব কম সময়ে পৌঁছে দেওয়া যায়। আজকের দিনে এই ব্যবস্থাটি খুবই কার্যকরী ও জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর প্রভাব:
মোবাইল ফোনের ব্যবহার সভ্য জীবনের একটা অপরিহার্য ব্যবস্থা হয়ে উঠলেও এর ক্ষতির দিক রয়েছে। মোবাইল ফোনে বেশি কথা বলা বা ব্যবহার করা ঠিক নয়। বর্তমানে ৮ থেকে ৮০ বছরের সবাই মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়ে পড়েছে যে এটা ঠিক নয়। এ বিষয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে। মোবাইল ফোনে অনর্থক কথা বলা, এস. এম এস করা, গেম খেলা, বা নানা ধরনের পর্নো ছবি দেখায় দীপ্ত থাকে যুবক-যুবতীরা।
এটি একটি নেশার মতো যুব সমাজকে গ্রাস করেছে। কানে মোবাইল ফোনের কড লাগিয়ে রাখাই কারোর কথা শুনতে পাই না বা শুনতে চাই না। একটা বেপরোয়া ভাব দেখা যায় এদের মধ্যে। আবার ফোনে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হওয়ার সময় কোন দিকে খেয়াল থাকে না, এতে অকালে অনেক প্রাণ চলে যায়। অনেকে গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে অনেকের বিপদ ডেকে আনে। অত্যাধিক মোবাইল ফোনের ব্যবহারে মস্তিষ্কে ক্যান্সারেও হতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা সমীক্ষা করে জানিয়েছেন
উপসংহার:
মোবাইল ফোন আমাদের জীবনযাত্রায় অনেক স্বচ্ছলতা এনে দিয়েছে, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটিয়েছে। কিন্তু ক্ষতিও প্রচুর হচ্ছে। মোবাইল ফোনের ব্যবহারে কিশোর কিশোরীরা এতটাই মগ্ন হয়ে পড়েছে, যে তারা পারেপার্সিকের দিক তাকাচ্ছে না। এমনকি পরিবারে বাবার আর্থিক অবস্থার কথাও ভাবছে না। তাদের চাহিদা পূরণের জন্য বাবা মার ওপর চাপ সৃষ্টি করে পরিবারে অশান্তি বাড়াচ্ছে।
নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা হবে ভবিষ্যতে দেশের কর্ণধার। তারা যদি এইভাবে গা বাঁচিয়ে চলে, তাহলে দেশটা গরবে কারা? আমাদের মনে রাখতে হবে ভারতের বেশিরভাগ মানুষ দরিদ্র অশিক্ষিত। সর্বাগ্রেএদের অন্যদের কথা চিন্তা করতে হবে। বৈজ্ঞানিক তথ্য ও প্রযুক্তির সাহায্যে দেশের জনসাধারণের মুখে হাসি ফোটানোই আমাদের জীবনের লক্ষ্য হওয়া উচিত অন্ধভাবে মোবাইল ফোন নিয়ে ৮২ তাই মগ্ন হয়ে থাকা নয়
মোবাইলের ভালো মন্দ রচনা: ৫ (Class 5 এর ছাত্রছাত্রীদের জন্য)
ভূমিকা:
আধুনিক বিজ্ঞানের অন্যতম আবিষ্কার হল মোবাইল ফোন। যোগাযোগ ব্যবস্থার অন্যতম এক হাতিয়ার হল মোবাইল ফোন। যা দূর কে করেছে নিকট বন্ধু, পর কে করেছে আপন। শিশু থেকে আবালবৃদ্ধবনিতা সকলেই বর্তমানে মোবাইল ব্যবহার করে।
মোবাইল ফোনের সুবিধা:
পূর্বে কোন সংবাদ চিঠির মাধ্যমে পেতে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস লেগে যেত। কিন্তু বর্তমানে মোবাইলের মাধ্যমে মুহূর্তের মধ্যে সংবাদ পৌঁছে যায়। দেশে বা বিদেশে থাকা মানুষ দের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ করা সম্ভব। গান শোনা, ভিডিও দেখা, সিনেমা দেখা, ফটো তোলার সহ সব বিনোদনের সুবিধা মোবাইলে রয়েছে। প্রশাসন বা বিদ্যালয় সরকারি ও বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠানের জীবনে প্রতিটি ক্ষেত্রে এর কম বেশি ব্যবহার রয়েছে। ব্যবসায়িক ক্ষেত্রেও এটি বিশেষ কার্যকরী। করোনা ভাইরাস যখন পুরো বিশ্বে মহামারীর আকার ধারণ করেছিল, তখন মোবাইলে ইন্টারনেট দ্বারা ঘরে বসে অনলাইন ক্লাস করা হয়েছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে পাশাপাশি এই মোবাইলের দ্বারা অনেকে ঘরে বসে ইনকাম করছে।
মোবাইল ফোনের অসুবিধা:
মোবাইলের দ্বারা যেমন মানুষের কল্যাণ হয়েছে তেমনি এটি অসুবিধারও সৃষ্টি করেছে। মোবাইলের ওপর অনেকেই বিশেষত শিক্ষার্থীরা আসক্ত হয়ে পড়ে। যার কারনে শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। ফোনের ডিসপ্লে থেকে বের হওয়ার রশ্মি চোখের অনেক ক্ষতি করে। এর মাধ্যমে বর্তমানে অন্যায় দুর্নীতি ও মিথ্যাচারের অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফোনে ব্যাবহিত নেট ওয়ার্কর কারণে প্রকৃতিও বিপদের সম্মুখীন হচ্ছে। অনেক অল্প বয়সে শিক্ষার্থীরা অসৎ কাজে লিপ্ত হয়েছে। আবার কেউ কেউ ইয়ারফোন লাগিয়ে রাস্তা পারাপারের সময় দুর্ঘটনার সম্মুখীন হচ্ছে।
উপসংহার:
মোবাইল ফোনের যেমন সুবিধা রয়েছে, ঠিক তেমনি অনেক অসুবিধা রয়েছে। প্রযুক্তি সুবিধা ও ভালো দিকগুলি গ্রহণ করে খারাপ দিকগুলো বর্জন করতে হবে, তবেই আমাদের সমাজ দেশ ও পৃথিবীর কল্যাণ হবে।
আরও দেখো:
২. পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার রচনা
বজ্রাসন এর উপকারিতা জেনে নিন।