রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা ১০০, ১৫০, ২০০, ২৫০, ৪০০ শব্দে

Spread the love

এখানে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা ১০০, ১৫০, ২০০, ২৫০, ৪০০ শব্দে লিখে দেওয়া হলো।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা ১০০ শব্দে

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যের এক অনন্য জ্যোতিষ্ক। ১৮৬১ সালের ৭ মে কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে তাঁর জন্ম। ছোটবেলা থেকেই তাঁর প্রতিভার প্রকাশ ঘটে। কাব্য, গল্প, উপন্যাস, নাটক, গান, প্রবন্ধ—সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় তাঁর অসামান্য অবদান রয়েছে। তাঁর লেখা ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যের জন্য ১৯১৩ সালে তিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। স্বাধীনতা আন্দোলনেও তিনি সক্রিয় ছিলেন; ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ব্রিটিশ সরকারের নাইট উপাধি ত্যাগ করেন। তিনি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন এবং ‘জনগণমন’ জাতীয় সংগীত হিসেবে রচনা করেন। ১৯৪১ সালের ৭ আগস্ট তাঁর মৃত্যু হয়। আজও তিনি আমাদের জাতিসত্তার মূর্ত প্রতীক, চিরদিনের ‘অমোদের লোক’।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা ১৫০ শব্দে

ভূমিকা:

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, লেখক, নাট্যকার, সংগীতকার, চিত্রশিল্পী ও দার্শনিক। বিশ্বসাহিত্যে তার অবদান অসামান্য।

জন্ম ও বংশ পরিচয়:

তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৮৬১ সালের ৭ই মে, কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারে। পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও মাতা সারদা দেবী। ঠাকুর পরিবার ছিল বিদ্যাচর্চায় সমৃদ্ধ। দাদা জ্যোতিরিন্দ্রনাথের কাছ থেকে তিনি সাহিত্যচর্চার অনুপ্রেরণা পান।

ছাত্রজীবন:

প্রথমে ওরিয়েন্টাল সেমিনারি ও পরে নর্মাল স্কুলে পড়াশোনা করেন। স্কুলের পরিবেশে তার মন বসত না। পরে বাড়িতেই পড়াশোনা করেন। উচ্চশিক্ষার জন্য বিলেত গেলেও সেখানেও তার মন টেকেনি।

সাহিত্যকর্ম ও অবদান:

রবীন্দ্রনাথের রচনার সংখ্যা বিশাল। তিনি ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যের জন্য ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনি ভারতের ‘জনগণমন’ ও বাংলাদেশের ‘আমার সোনার বাংলা’ জাতীয় সংগীত রচনা করেন। শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী ও শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠা করেন।

উপসংহার:

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রয়াত হন ১৯৪১ সালের ৭ই আগস্ট। প্রতি বছর ২৫ বৈশাখে আমরা তার জন্মজয়ন্তী শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করি। তিনি চিরকাল বাঙালির হৃদয়ে অমর হয়ে থাকবেন।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা ২০০ শব্দে

ভূমিকা:

বাংলা সাহিত্যের আকাশে যে উজ্জ্বলতম নক্ষত্রের নাম শ্রদ্ধার সঙ্গে উচ্চারিত হয়, তিনি হলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর সাহিত্য, সংগীত ও চিন্তা আমাদের সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয়ের অমূল্য সম্পদ।

রবীন্দ্রনাথের কবিতা ঘরে ঘরে:

রবীন্দ্রনাথ শুধু একজন কবি নন, তিনি আমাদের হৃদয় ও চেতনার অংশ। তাঁর লেখা কবিতা ও গান বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছে। তিনি ছিলেন কবিদের কবি এবং গানের রাজা।

জন্ম ও বংশ পরিচয়:

১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ৭ মে (১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ) কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং মাতার নাম সারদা দেবী।

শিক্ষাজীবন:

তিনি ওরিয়েন্টাল সেমিনারি ও নর্মাল স্কুলে অল্পদিন পড়াশোনা করেন। পরে গৃহশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে পড়াশোনা চালিয়ে যান। ১৮৭৮ সালে ইংল্যান্ডে ব্যারিস্টারি পড়তে যান, কিন্তু ডিগ্রি না নিয়েই ফিরে আসেন। দেশে ফিরে সাহিত্যে মনোনিবেশ করেন।

সাহিত্যচর্চা ও কর্মজীবন:

তিনি অসংখ্য কবিতা, গান, ছোটগল্প, নাটক ও উপন্যাস লিখেছেন। তাঁর লেখা ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের জন্য ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে সম্মানিত হন। ভারতের ‘জনগণমন’ ও বাংলাদেশের ‘আমার সোনার বাংলা’—এই দুটি দেশের জাতীয় সংগীত তাঁরই লেখা। শান্তিনিকেতনে তিনি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় এবং শ্রীনিকেতনে পল্লী উন্নয়ন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন।

উপসংহার:

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯৪১ সালের ৭ আগস্ট পরলোক গমন করেন। তাঁর জন্মদিন ২৫ বৈশাখ বাঙালির কাছে আজও উৎসব। তাঁর সাহিত্য, গান ও জীবনদর্শন আজও আমাদের পথ দেখায়।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা ২৫০ শব্দে

সূচনা:

বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের কাছে চিরস্মরণীয়। সাহিত্যজগতের প্রতিটি শাখায় তাঁর অনবদ্য অবদান অতুলনীয়। তাঁর মতো সর্বগুণসম্পন্ন সাহিত্যিক বাংলা সাহিত্যে আর কেউ ছিলেন না।

জন্ম ও বংশ পরিচয়:

১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ৭ মে, কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং মাতার নাম সারদা দেবী।

বাল্য ও শিক্ষাজীবন:

রবীন্দ্রনাথ অল্প কিছুদিন ওরিয়েন্টাল সেমিনারি ও নর্মাল স্কুলে পড়াশোনা করেন। কিন্তু প্রথাগত শিক্ষাপদ্ধতি তাঁর ভালো না লাগায় তিনি গৃহশিক্ষকের কাছে পড়াশোনা চালিয়ে যান। ১৮৭৮ সালে ইংল্যান্ডে যান ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য পড়তে। তবে কোনো ডিগ্রি না নিয়েই দেশে ফিরে আসেন। পরবর্তীকালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সম্মানসূচক ডি.লিট উপাধি প্রদান করে। ব্রিটিশ সরকার তাঁকে নাইট উপাধি দিলেও ১৯১৯ সালের জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি তা ফিরিয়ে দেন।

কর্মজীবন:

রবীন্দ্রনাথ ছিলেন কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, সংগীতস্রষ্টা ও চিত্রশিল্পী। তাঁর লেখা ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের জন্য ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। শান্তিনিকেতনে তিনি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন এবং শ্রীনিকেতন গড়ে তোলেন গ্রামীণ উন্নয়নের জন্য। তিনি ছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ, মানবতাবাদী এবং একজন প্রকৃত স্বদেশপ্রেমিক। তাঁর রচিত ‘জনগণমন’ ও ‘আমার সোনার বাংলা’ যথাক্রমে ভারত ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত।

উপসংহার:

১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের ৭ আগস্ট, দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে জোড়াসাঁকোর পৈতৃক বাসভবনে ৮০ বছর ৩ মাস বয়সে তিনি পরলোকগমন করেন। তাঁর সাহিত্য ও আদর্শ চিরকাল আমাদের পথপ্রদর্শক হয়ে থাকবে।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা ৪০০ শব্দে

ভূমিকা:

কোনো জাতির সংস্কৃতি ও সভ্যতার শ্রেষ্ঠত্ব নির্ভর করে তার কবি ও সাহিত্যিকদের উপর। তাঁরাই মানব সভ্যতার আলোকস্তম্ভ—তাঁদের সৃষ্টি মানুষকে জ্ঞান ও আনন্দ দেয়। বাঙালির সাহিত্যের জগতে যে নামটি প্রথম মনে পড়ে, তিনি হলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি এমন এক বহুমুখী প্রতিভা, যিনি সর্বকালেই প্রাসঙ্গিক, নবীন ও চিরন্তন। রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে শরৎচন্দ্র লিখেছিলেন, “কবিগুরু, তোমার প্রতি চাহিয়া আমাদের বিস্ময়ের সীমা নাই।”

জন্ম ও পরিবার:

১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ২৫ বৈশাখ, কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও মাতা শ্রীমতী সারদা দেবী। তিনি ছিলেন পিতামাতার চতুর্থ সন্তান।

শিক্ষাজীবন:

শৈশবে গৃহশিক্ষকের মাধ্যমে তার প্রাথমিক শিক্ষার সূচনা হয়। পরে তিনি ওরিয়েন্টাল সেমিনারি, নর্মাল স্কুল, বেঙ্গল একাডেমি ও সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজিয়েট স্কুলে পড়েন। কিন্তু বিদ্যালয়ের বদ্ধ পরিবেশ ভালো না লাগায় গৃহশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে পড়াশোনা চালিয়ে যান। শহরের কোলাহল থেকে দূরে পানিহাটি ও বোলপুরে প্রকৃতির সান্নিধ্যে সময় কাটাতে তিনি বেশি পছন্দ করতেন। এসব সময়ে পিতার কাছ থেকে বিশ্বের নানা বিষয়ে শিক্ষালাভ করেন। ১৮৭৮ সালে ব্যারিস্টারি পড়ার উদ্দেশ্যে তিনি ইংল্যান্ডে যান, কিন্তু পড়াশোনা অসমাপ্ত রেখেই দেশে ফিরে আসেন।

বিবাহ ও ব্যক্তিগত জীবন:

১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিবাহ হয় বেণীমাধব রায়চৌধুরীর একাদশ বর্ষীয়া কন্যা ভবতারিণীর সঙ্গে। বিবাহের পর তিনি মৃণালিনী দেবী নামে পরিচিত হন। তাঁদের পাঁচজন সন্তান ছিল—মাধুরীলতা, রথীন্দ্রনাথ, রেণুকা, মীরা ও শমীন্দ্রনাথ। রেণুকা ও শমীন্দ্রনাথ শৈশবেই মৃত্যুবরণ করেন।

কর্মজীবন:

১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে পিতার আদেশে জমিদারি দেখাশোনার দায়িত্ব নেন। এর ফলে তিনি বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে দেখেন ও সাধারণ মানুষের জীবনের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে পরিচিত হন। এই অভিজ্ঞতা তাঁর সাহিত্যচর্চার জন্য ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কবিত্ব ও সাহিত্যকর্ম:

নয় বছর বয়সেই রবীন্দ্রনাথ কবিতা লিখতে শুরু করেন। ‘বনফুল’, ‘কবিকাহিনী’, ‘ভানুসিংহের পদাবলী’ তাঁর প্রথমদিকের কাব্য। ইংল্যান্ডে থাকাকালীন ‘ভারতী’ পত্রিকায় তাঁর ‘জুরোপ প্রবাসীর পত্র’ প্রকাশিত হয়। দাদা জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ও বৌঠান কাদম্বরী দেবী তাকে সাহিত্যচর্চায় অনুপ্রাণিত করতেন। কবিতা ছাড়াও তিনি গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ, গীতিনাট্য, নৃত্যনাট্য ও গান রচনা করেন। ‘কাবুলিওয়ালা’, ‘খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’, ‘পোস্টমাস্টার’, ‘দেনাপাওনা’ ইত্যাদি তাঁর বিখ্যাত ছোটগল্প। ‘নৌকাডুবি’, ‘চোখের বালি’, ‘গোরা’, ‘ঘরে বাইরে’, ‘রাজর্ষি’ ইত্যাদি উপন্যাস আজও সমান জনপ্রিয়। ‘বিসর্জন’, ‘রক্তকরবী’, ‘ডাকঘর’, ‘শ্যামা’, ‘চণ্ডালিকা’ প্রভৃতি নাটক ও নৃত্যনাট্যের মাধ্যমে তিনি নতুন ধারার সূচনা করেন।

কর্ম-কৃতিত্ব:

১৯১৩ সালে ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যের জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ব্রিটিশ সরকার তাঁকে ‘নাইট’ উপাধি দিলেও ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি তা ত্যাগ করেন। তিনি কেবল সাহিত্যিক নন, ছিলেন শিক্ষানুরাগী, মানবপ্রেমিক ও শিল্পসাধক। শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী ও পরে শ্রীনিকেতন স্থাপন তাঁর অন্যতম কীর্তি। তিনি কয়েক হাজার গান রচনা করেন ও সুরারোপ করেন, যা ‘রবীন্দ্রসঙ্গীত’ নামে পরিচিত। ভারত ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত তাঁরই লেখা।

উপসংহার:

১৩৪৮ বঙ্গাব্দের ২২ শ্রাবণ, ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে, এই মহান কবির মৃত্যু ঘটে। তাঁর অমর সাহিত্যকর্ম আজও আমাদের পথ দেখায়। তিনি শুধু বাঙালির নয়, বিশ্বের গর্ব।
“জগত্ কবির সভায় মোরা আজিকে করি গর্ব,
বাঙালি আজি গানের রাজা, সোনালী নহে খর্ব।”

আরও দেখো: মহাত্মা গান্ধী রচনা

CLOSE

You cannot copy content of this page