নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি প্রতিবেদন রচনা

নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি সম্পর্কে ৫ টি ফরম্যাটে প্রতিবেদন রচনা লিখে দেওয়া হলো।

প্রশ্ন: “নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী” – এ বিষয়ে সংবাদপত্রের জন্য কমবেশি 150 টি শব্দে একটি প্রতিবেদন রচনা করো।

নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি প্রতিবেদন রচনা: ১

সাম্প্রতিককালে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির জন্য সাধারণ মানুষের অসহায়তা

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা, ৩ নভেম্বর: চৈত্র মাসের সূচনাতেই প্রকৃতির রাজ্যে যেমন নেমে আসে দাবদাহের আগুন ঠিক তেমনি রাজ্যের আপামর সাধারণ মানুষ বেশ কয়েক মাস ধরে পুড়ছেন মূল্যবৃদ্ধির আগুনে। চাল, গম, আলু থেকে শুরু করে প্রতিটি নিত্যব্যবহার্য জিনিসের দাম এখন আকাশ ছোঁয়া। দিন দিন সোনার দাম যেমন লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে, তেমনি চাল, ডাল, মাছ, তরিতরকারি এবং ওষুধও অগ্নিমূল্য। সরকারি কর্মচারী, আধা সরকারি কর্মচারী এবং অন্যান্য উচ্চ বেতনভোগীদের অবশ্য মূল্যবৃদ্ধির অনুপাতে বেতন বাড়ছে।

কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এবং তাদের পরিবার আজ এক দুর্বিষহ অবস্থার মধ্য দিয়ে চলেছে। নিম্নবিত্ত মানুষ আজ সন্তানকে দুমুঠো অন্ন তুলে দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। এদিকে বারবার ডিজেল এবং পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধি হওয়াতে অবস্থা আরো চরম জায়গায় পৌঁছাচ্ছে। অর্থনীতিবীদ এবং কৃষিবিদরা জানিয়েছেন যে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলে খাদ্যদ্রব্যের দাম আরো বাড়বে। কয়েকদিন আগে দক্ষিণ 24 পরগনা জেলার এক গ্রামের একটা গোটা পরিবার চরম দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পেতে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। সুতরাং কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার যদি অবিলম্বে সাধারণ মানুষের পাশে এসে না দাঁড়ায়, তবে দেশ এক চরম সর্বনাশের অবস্থায় এসে পৌঁছাবে।

নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি প্রতিবেদন রচনা: ২

নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধিতে দুশ্চিন্তায় ক্রেতাকুল

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা, ৫ জানুয়ারি: আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধির সাথে সামঞ্জস্য রেখে ভারত সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বাড়িয়েছে, যা সাধারণ মানুষের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থনীতিবিদদের ধারণা, এই মূল্যবৃদ্ধির ধারা আরও ঊর্ধ্বমুখী হবে এবং চলতি বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকতে পারে। সুতরাং, গোটা শীতের মরশুমে বাজারের আগুন আরও বাড়তে পারে।

ইতিমধ্যে, গত মাসের তুলনায় শাক-সবজির দাম ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও বনস্পতি, বিভিন্ন ধরনের ডাল, নারকেল তেল, সূর্যমুখী তেল—সবকিছুরই দাম বেড়েছে। এক বছরে লিটার প্রতি ডিজেলের দাম ৮ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে, যার ফলে পরিবহণ ব্যয়ও পাল্লা দিয়ে বেড়েছে। পাইকারি ও খুচরা বাজারের মূল্যবৃদ্ধি গৃহস্থের ভাঁড়ারে টান ধরিয়েছে। গত এক বছরের পরিসংখ্যান অনুসারে, সব পণ্যের গড় দাম প্রায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বেড়েছে।

এই পরিস্থিতিতে, মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের কপালের ভাঁজ আরও চওড়া হওয়া স্বাভাবিক। চাহিদার সাথে জোগানের সামঞ্জস্য না থাকলে মূল্যবৃদ্ধি অবশ্যম্ভাবী, এ সাধারণ অর্থনীতির তত্ত্ব সকলের জানা। তাই জোগান বৃদ্ধির দিকে সকলের নজর। পণ্য উৎপাদনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নতুন নোট ছাপানো দরকার, তবে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে যাতে মুদ্রাস্ফীতি মূল্যবৃদ্ধির কারণ না হয়ে দাঁড়ায়। ঘাটতি বাজেটের প্রতিকূল দিকটি মোকাবেলার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে সরকার—এটাই সকলের প্রত্যাশা।

নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি প্রতিবেদন রচনা: ৩

নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের দুর্বিষহ অবস্থা

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা, ১২ই ফেব্রুয়ারি:

বর্তমান সময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশছোঁয়া হয়ে উঠেছে, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে অত্যন্ত দুর্বিষহ করে তুলেছে। চাল, গম, তেল, ডাল থেকে শুরু করে শাকসবজি, মাছ, এমনকি ঔষধের দামও অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। একদিকে সোনা, রুপা, হিরের দাম লাফিয়ে বাড়ছে, অন্যদিকে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন ব্যবহারের সামগ্রীগুলোর দামও লাগামছাড়া হয়ে পড়েছে।

সরকারি ও বেসরকারি কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দ্রব্যমূল্যের এই ক্রমবর্ধমান প্রবণতা নিম্নবিত্ত এবং সীমিত আয়ের মানুষের জীবনকে ক্রমশ শোচনীয় করে তুলছে। বেতন বাড়লেও, তা এই মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারছে না। এর ফলে বহু পরিবারেই দুমুঠো অন্ন জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। শাক-সবজি কিংবা মাছ-মাংসের মতো প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী তো দূরের কথা, সাধারণ পরিবারের লোকেরা প্রায়ই ঔষধের মতো গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী কিনতেও হিমশিম খাচ্ছে।

এই মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে যোগ হয়েছে পেট্রোল-ডিজেলের দাম বৃদ্ধির বিষয়টিও। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি শুধুমাত্র পরিবহণ খরচ বাড়িয়েছে তা নয়, এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে বাজারের প্রতিটি পণ্যের দামে। পেট্রোল-ডিজেলের এই মূল্যবৃদ্ধির ফলে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষেরা একপ্রকার নাকাল অবস্থার সম্মুখীন হচ্ছে।

দ্রব্যমূল্যের এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধির পেছনে ঠিক কী কারণ রয়েছে, তা খুঁজে বের করে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। বিশেষজ্ঞদের মতে, মুদ্রাস্ফীতি, জোগানের ঘাটতি, এবং আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামের ঊর্ধ্বগতি—এসবই মূলত এই সংকটের পেছনে কাজ করছে।

যদি এই অবস্থার দ্রুত সমাধান না করা হয়, তবে দেশের সাধারণ মানুষ এক চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়বে, যা সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে। সরকারকে অবিলম্বে এই পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা সহজ করা যায় এবং দেশে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।

নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি প্রতিবেদন রচনা: ৪

নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধিতে নাভিশ্বাস আমজনতার

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা, ২ মার্চ: নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি আজ নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষের জীবনকে অত্যন্ত সঙ্কটময় করে তুলেছে। চাল, ডাল, তেল, নুন, শাকসবজি, ঔষধসহ প্রতিদিনের ব্যবহারের সবকিছুর দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ক্রমশ তলানিতে এসে ঠেকেছে, এবং বেঁচে থাকাই একপ্রকার প্রশ্নের মুখে পড়েছে।

নিম্ন আয়ের মানুষরা যা উপার্জন করছে, তা পুরোপুরি জীবনধারণে ব্যয় হয়ে যাচ্ছে, ফলে চিকিৎসা, শিক্ষা, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় খাতে খরচ করার মতো কোনো সঞ্চয় থাকছে না। খরচ যে হারে বাড়ছে, তার তুলনায় আয় বৃদ্ধির হার অত্যন্ত সামান্য।

সরকারের পক্ষ থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে কিছু প্রচেষ্টা দেখা গেলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপর্যাপ্ত। একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার লোভে খাদ্যশস্য মজুত করে বাজারে কৃত্রিম অভাব সৃষ্টি করছে এবং বেশি দামে পণ্য বিক্রি করছে। এর ফলে, বিশেষ করে বয়স্ক মানুষদের ক্ষেত্রে ঔষধের দাম বৃদ্ধির প্রভাব আরও তীব্র হয়ে উঠছে।

যদিও সরকার টাস্ক ফোর্স গঠন করে দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে, কিছু অসাধু ব্যক্তির অসততা এবং যথাযথ নজরদারির অভাবে এই ব্যবস্থা ব্যর্থ হচ্ছে। পর্যাপ্ত জোগান থাকা সত্ত্বেও জিনিসপত্রের দাম অযৌক্তিকভাবে বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা সাধারণ মানুষের জীবনকে আরও কঠিন করে তুলেছে।

এমতাবস্থায়, মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে জনমত গঠন করা এবং সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা জরুরি। সরকার যদি আরো সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করে এবং কঠোরভাবে নজরদারি চালায়, তবে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে বলেই বিশ্বাস করা হয়।

নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি প্রতিবেদন রচনা: ৫

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস

নিজস্ব সংবাদদাতা, দুর্গাপুর, ৭ মার্চ ২০২২: বর্তমান সময়ে একটি গুরুতর সমস্যা যা সকলকে ভাবিয়ে তুলেছে, তা হলো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সীমাহীন মূল্যবৃদ্ধি। এই অস্বাভাবিক ও ক্রমাগত দাম বৃদ্ধির ফলে গরিব ও সাধারণ মানুষের জীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। প্রতিদিনের ব্যবহারের প্রায় প্রতিটি পণ্যের দাম দ্রুত বেড়ে চলেছে। চাল, গম, মসলা, শাকসবজি, তেল ইত্যাদির মূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। শিশুর খাবার, পড়াশোনার উপকরণ, কাপড়, এবং ঔষধের দামও প্রচুর পরিমাণে বেড়েছে, যা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করছে গরিব ও মধ্যবিত্ত মানুষদের।

দেশের একটি বড় অংশের জনসাধারণ অর্থের অভাবে তাদের পরিবার ঠিকমতো চালাতে পারছে না, এবং তারা আজ চরম অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সাথে সাথে চিকিৎসার খরচও আকাশছোঁয়া হয়ে উঠেছে। ফলে অনেক দরিদ্র রোগী টাকার অভাবে সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে অসহায় অবস্থায় মারা যাচ্ছে।

অধিকাংশ শিল্পজাত ও কৃষিজাত দ্রব্য ট্রাকের মাধ্যমে বাজারে পৌঁছায়, এবং পেট্রোলিয়াম দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির ফলে সমস্ত জিনিসের দাম নিয়মিতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিটি পণ্যের উৎপাদন খরচ ডিজেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্যের উপর নির্ভরশীল, এবং যেহেতু এগুলোর দাম দিন দিন বাড়ছে, তাই নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্রের দামও বাড়ছে। পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যের দাম বৃদ্ধি মাঝে মাঝেই ঘটছে, এবং কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পণ্যের যোগান বন্ধ রেখে বাজারে কৃত্রিম ঘাটতি সৃষ্টি করে, যা পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

এই পরিস্থিতিতে দরিদ্র ও সাধারণ মানুষের জন্য প্রতিটি প্রয়োজনীয় পণ্যের স্থায়ী মূল্য নির্ধারণ করা উচিত, যাতে তারা ন্যায্যমূল্যে প্রয়োজনীয় সামগ্রী পেতে পারে এবং তাদের জীবনযাত্রা কিছুটা হলেও স্বস্তিদায়ক হয়।

আরও প্রতিবেদন দেখার জন্য এই পেজটি ভিজিট করুন:

প্রতিবেদন রচনা সকল

আরও দেখুন: পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা প্রবন্ধ রচনা

Leave a Comment

CLOSE

You cannot copy content of this page