এখানে আবহমান কবিতার প্রশ্ন উত্তর শেয়ার করা হলো। / নবম শ্রেণী বাংলা WBBSE আবহমান নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
নবম শ্রেণী বাংলা
আবহমান কবিতার MCQ প্রশ্ন উত্তর
১. ‘আবহমান’ কবিতাটির কবি—
ক) শঙ্খ ঘোষ
খ) অমিয় চক্রবর্তী
গ) জয় গোস্বামী
ঘ) নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
উত্তর: ঘ) নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
২. ‘আবহমান’ কবিতাটির স্তবকসংখ্যা—
ক) ৫
খ) ৬
গ) ৭
ঘ) ৮
উত্তর: গ) ৭
৩. ‘আবহমান’ শব্দের প্রকৃত অর্থ কী?
ক) আহ্বান
খ) চিরন্তন
গ) আগমন
ঘ) ক্ষণকালীন
উত্তর: খ) চিরন্তন
৪. ‘যা গিয়ে ওই উঠানে তোর দাঁড়া’ — এখানে যে-ভাবনাটি ব্যস্ত হয়েছে, তা হল—
ক) বাড়ির উঠোনে গিয়ে দাঁড়াতে বলা হয়েছে
খ) জীবনের উঠোনে গিয়ে দাঁড়াতে বলা হয়েছে
গ) শৈশবের স্মৃতিভূমিতে গিয়ে দাঁড়াতে বলা হয়েছে
ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তর: গ) শৈশবের স্মৃতিভূমিতে গিয়ে দাঁড়াতে বলা হয়েছে
৫. ‘লাউমাচাটার পাশে।’ — এখানে ‘লাউমাচা’ হল—
ক) বাঙালির চিরকালীন ঐতিহ্যের প্রতীক
খ) বাঁশ-কঞ্চির মাচা
গ) যেখানে লাউ গাছ জড়িয়ে ওঠে
ঘ) গ্রামে এরকম মাচা দেখা যায়
উত্তর: ক) বাঙালির চিরকালীন ঐতিহ্যের প্রতীক
৬. লাউমাচাটি আছে—
ক) উঠোনে
খ) বেড়ার পাশে
গ) ঘরের কোণে
ঘ) রাস্তার পাশে
উত্তর: ক) উঠোনে
৭. ছোট্ট ফুল কোন্ সময়ের বাতাসে দোলে?
ক) সকালের
খ) বিকালের
গ) সন্ধ্যার
ঘ) গোধূলির
উত্তর: গ) সন্ধ্যার
৮. কবি দাঁড়ানোর কথা বলেছেন—
ক) চালতা গাছের পাশে
খ) কুমড়োমাচার পাশে
গ) লাউমাচার পাশে
ঘ) পদ্ম বিলের পাশে
উত্তর: গ) লাউমাচার পাশে
৯. ‘ফুল দুলছে, ফুল, সন্ধ্যার বাতাসে।’ — এখানে যে-ভাবনাটি ব্যস্ত হয়েছে, তা হল—
ক) সান্ধ্য বাতাসে ফুল দুলছে
খ) ফেলে আসা শৈশবের স্মৃতি হাতছানি দিচ্ছে
গ) সন্ধ্যার বাতাস জীবনকে আন্দোলিত করছে
ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তর: খ) ফেলে আসা শৈশবের স্মৃতি হাতছানি দিচ্ছে
১০. ফুল দোলার কারণ—
ক) ভোরের বাতাস
খ) সন্ধ্যার বাতাস
গ) মধ্যাহ্নের বাতাস
ঘ) রাতের বাতাস
উত্তর: খ) সন্ধ্যার বাতাস
১১. ‘এই মাটিকে এই হাওয়াকে’ —
ক) শ্রদ্ধা করে না
খ) ভালোবাসে না
গ) মনে রাখে না
ঘ) আবার ভালোবাসে
উত্তর: ঘ) আবার ভালোবাসে
১২. ‘কে এইখানে হারিয়ে গিয়েও আবার ফিরে আসে’ — তাদের ফিরে আসার কারণ—
ক) মাটিকে ভালোবাসা
খ) মাটি আর হাওয়াকে ভালোবাসা
গ) জলকে ভালোবাসা
ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তর: খ) মাটি আর হাওয়াকে ভালোবাসা
১৩. যে-গাছটি ‘বুড়িয়ে ওঠে, কিন্তু মুড়য় না’—
ক) নটে
খ) শটি
গ) পাট
ঘ) বট
উত্তর: ক) নটে
১৪. ‘নটেগাছটা বুড়িয়ে ওঠে, কিন্তু’—
ক) ফুরোয় না
খ) জুড়য় না
গ) মুড়য় না
ঘ) বিকোয় না
উত্তর: গ) মুড়য় না
১৫. ‘নটেগাছটা বুড়িয়ে ওঠে, কিন্তু মুড়য় না।’ — এখানে যে-ভাবনাটি প্রকাশ পেয়েছে, তা হল—
ক) নটে গাছটা বুড়ো হলেও তার পাতা ঝরে যায়
খ) মানুষের বয়স বাড়ে, কিন্তু মনের আকুলতা কমে না
গ) জীবনে স্মৃতিসুখ বলে কিছু নেই
ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তর: খ) মানুষের বয়স বাড়ে, কিন্তু মনের আকুলতা কমে না
১৬. কখনোই ফুরিয়ে যায় না—
ক) যাওয়া-আসা
খ) যাওয়া
গ) আসা
ঘ) ফেরা
উত্তর: ক) যাওয়া-আসা
১৭. দুরন্ত পিপাসা ফুরোয় না—
ক) দস্যি ছেলেটির
খ) জেদি ছেলেটির
গ) একগুঁয়ে ছেলেটির
ঘ) দুষ্টু ছেলেটির
উত্তর: গ) একগুঁয়ে ছেলেটির
১৮. একগুঁয়েটার যা কিছুতেই ফুরোয় না, তা হল—
ক) দুরন্তপনা
খ) দুরন্ত দুষ্টুমি
গ) দুরন্ত দৌড়
ঘ) দুরন্ত পিপাসা
উত্তর: ঘ) দুরন্ত পিপাসা
১৯. ‘ফুরয় না সেই একগুঁয়েটার দুরন্ত পিপাসা।’ — এখানে কোন্ পিপাসার কথা বলা হয়েছে—
ক) জলের দেখার পিপাসা
খ) গ্রামে ফিরে আসার পিপাসা
গ) শহরে চলে যাওয়ার পিপাসা
ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তর: খ) গ্রামে ফিরে আসার পিপাসা
নবম শ্রেণী বাংলা
আবহমান কবিতার MCQ প্রশ্ন উত্তর
২০. মানুষটি সারাটা দিন আপন মনে মাখে—
ক) ঘাসের গন্ধ
খ) ফুলের গন্ধ
গ) রৌদ্রের গন্ধ
ঘ) ফলের গন্ধ
উত্তর: ক) ঘাসের গন্ধ
২১. ‘আপন মনে ঘাসের গন্ধ মাখে’ — এখানে যে-ভাবনাটি প্রকাশ পেয়েছে—
ক) সারাদিন ঘাসে নিজের খেয়ালে গড়াগড়ি খায়
খ) সারাদিন নিজের খেয়ালে শৈশবের স্মৃতিভূমিতে বিচরণ করে
গ) সারাদিন ঘাসের গন্ধ প্রাণভরে নেয়
ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তর: খ) সারাদিন নিজের খেয়ালে শৈশবের স্মৃতিভূমিতে বিচরণ করে
২২. সারাটা রাত তারায় তারায় এঁকে চলে—
ক) ছবি
খ) তৈলচিত্র
গ) স্বপ্ন
ঘ) চিত্র
উত্তর: গ) স্বপ্ন
২৩. ‘সারাটা রাত স্বপ্ন এঁকে রাখে’ — শূন্যস্থান পূরণ করুন—
ক) আলোয়-আলোয়
খ) ঘাসে-ঘাসে
গ) তারায়-তারায়
ঘ) মেঘে-মেঘে
উত্তর: গ) তারায়-তারায়
২৪. ‘নেভে না-‘ — তার যা নেভে না, তা হল—
ক) কষ্ট
খ) দুঃখ
গ) যন্ত্রণা
ঘ) হাসি
উত্তর: গ) যন্ত্রণা
২৫. ‘হাসি।’ — শূন্যস্থান পূরণ করুন — ক) বকুল ফুলের, খ) শিউলি ফুলের, গ) কুন্দফুলের, ঘ) চাঁপা ফুলের
উত্তর: গ) কুন্দফুলের
২৬. ‘আবহমান’ কবিতায় বাগান থেকে যা না-হারানোর কথা বলা হয়েছে—
ক) চাঁদের হাসি
খ) কুন্দফুলের হাসি
গ) আলোর হাসি
ঘ) রৌদ্রের হাসি
উত্তর: খ) কুন্দফুলের হাসি
২৭. ‘হারায় না তার বাগান থেকে কুন্দফুলের হাসি।’ — এখানে যে-ভাবনাটি প্রকাশ পেয়েছে, তা হল—
ক) বাগানে ফুটে থাকা কুন্দফুল ঝরে পড়ে না
খ) মানুষ যতই কঠিন বর্তমানের মুখোমুখি হোক, তার স্মৃতিপট থেকে কখনোই শৈশবের আনন্দময় দিনগুলি মুছে যায় না
গ) বাগানে কুন্দফুল সবসময় ফুটে থাকে
ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তর: খ) মানুষ যতই কঠিন বর্তমানের মুখোমুখি হোক, তার স্মৃতিপট থেকে কখনোই শৈশবের আনন্দময় দিনগুলি মুছে যায় না
২৮. ‘তেমনি করেই __ ওঠে,’ — শূন্যস্থান পূরণ করুন—
ক) চন্দ্র
খ) সূর্য
গ) গ্রহ
ঘ) তারা
উত্তর: খ) সূর্য
২৯. সান্ধ্য নদীর হাওয়া ছুটে আসে—
ক) সূর্য উঠলে
খ) ছায়া নামলে
গ) কুন্দফুল ফুটলে
ঘ) বৃষ্টি হলে
উত্তর: খ) ছায়া নামলে
নবম শ্রেণী বাংলা
আবহমান কবিতার অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
১. ‘আবহমান’ কবিতাটি কোন্ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে?
উত্তর: ‘আবহমান’ কবিতাটি কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর ‘অন্ধকার বারান্দা’ নামক কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
২. “যা গিয়ে ওই উঠানে তোর দাঁড়া,” — কবি উঠানে গিয়ে দাঁড়াতে বলেছেন কেন?
উত্তর: কবি ফেলে আসা শৈশবজীবনের কথা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্যই উঠানে গিয়ে দাঁড়াতে বলেছেন।
৩. সন্ধ্যার বাতাসে কী দুলছে?
উত্তর: ‘আবহমান’ কবিতায় ছোট্ট ফুলটি সন্ধ্যার বাতাসে দুলছে।
৪. “লাউমাচাটার পাশে” — কবি লাউমাচার অনুষঙ্গ ব্যবহার করেছেন কেন?
উত্তর: গ্রামবাংলার চিরায়ত রূপটিকে ফুটিয়ে তোলার জন্য কবি ‘লাউমাচা’-র অনুষঙ্গ ব্যবহার করেছেন, যেখানে শৈশবকে খুঁজে পাওয়া যেতে পারে।
৫. “তোর” — বলতে কাকে সম্বোধন করা হয়েছে?
উত্তর: ‘আবহমান’ কবিতার কবি এখানে ‘তোর’ বলতে স্বদেশহারা, গ্রামছাড়া ব্যক্তিমনকে সম্বোধন করেছেন।
৬. ‘ছোট্ট একটা ফুল দুলছে,’ — কীসের ‘ফুল’ দুলছে?
উত্তর: বর্তমানের প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে কবি বারবার ফেলে আসা শৈশবের স্মৃতিগুলিকেই ফুল দোলার সঙ্গে তুলনা করেছেন।
৭. ‘কে এইখানে এসেছিল অনেক বছর আগে’ — এখানে অনেক বছর আগে মানুষটি কী করেছিল?
উত্তর: অনেক বছর আগে মানুষটি এই গাঁয়ে নিবিড় অনুরাগ ও ভালোবাসায় ঘর বেঁধেছিল।
৮. কবি উঠানের লাউমাচাটির পাশে গিয়ে দাঁড়াতে বলেছেন কেন?
উত্তর: ফেলে আসা গ্রামজীবনে ফিরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে, কবি স্মৃতিবিজড়িত উঠানের লাউমাচার পাশে গিয়ে দাঁড়াতে বলেছেন।
৯. ‘যা গিয়ে ওই উঠানে তোর দাঁড়া,’ — এখানে ‘উঠান’ কীসের প্রতীক বলে তোমার মনে হয়?
উত্তর: ‘উঠান’ হল জন্মস্থান বা মাতৃভূমিস্বরূপ স্বাধীন উন্মুক্ত পরিসরের প্রতীক।
১০. ‘কে এইখানে হারিয়ে গিয়েও আবার ফিরে আসে’ — হারিয়ে যাওয়ার কারণ কী?
উত্তর: পরিস্থিতির চাপে মানুষকে স্বদেশ বা জন্মস্থান ছেড়ে যেতে হয়, তাই সে তার স্বদেশ ও শৈশবকে হারিয়ে ফেলে।
১১. ‘ফুরয় না, তার কিছুই ফুরয় না,’ — কী ফুরোয় না?
উত্তর: মানুষের মাতৃভূমির প্রতি আকর্ষণ, ভালোবাসা এবং টান কখনোই ফুরোয় না।
১২. কবি ‘আবহমান’ কবিতায় নটেগাছটি সম্পর্কে কী বলেছেন? অথবা, ‘নটেগাছটা বুড়িয়ে ওঠে,’ — ‘নটেগাছ’ বলতে কার বা কীসের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: ‘নটেগাছ’ হল মানুষ ও তার মাতৃভূমির সম্পর্কের আবহমানতার প্রতীক।
১৩. ‘বুড়িয়ে ওঠে’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: ‘বুড়িয়ে ওঠে’ বলতে মানুষের বয়স বেড়ে যাওয়ার কথা বুঝিয়েছেন।
১৪. ‘কিন্তু মুড়য় না।’ — ‘মুড়য় না’ বলতে কবি কী বলতে চেয়েছেন?
উত্তর: অগ্রসরমান সময়ের নিরিখে মাতৃভূমির সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের মধ্যে সময়ের ছাপ পড়লেও তা কখনও মুছে যায় না। কবি সে-কথাই বোঝাতে চেয়েছেন।
১৫. যাওয়া-আসা না-ফুরোনোর কারণ কী?
উত্তর: কবি মাতৃভূমিহারা মানুষটির স্মৃতিতাড়িত স্বভূমিতে যাওয়া-আসার অন্তহীন মানসযাত্রার কথা ব্যক্ত করেছেন।
নবম শ্রেণী বাংলা
আবহমান কবিতার অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
১৬. ‘ফুরয় না সেই একগুঁয়েটার দুরন্ত পিপাসা।’ — ‘দুরন্ত পিপাসা’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: কবি স্বদেশচ্যুত মানুষটির স্বভূমিতে ফিরে আসার দুর্নিবার ইচ্ছাকেই ‘দুরন্ত পিপাসা’ বলেছেন।
১৭. ‘একগুঁয়েটা’-র পিপাসা কী রকমের?
উত্তর: স্বদেশহারা মানুষটির আপন জন্মভূমিতে ফিরে আসার অন্তহীন ‘পিপাসা’ বা ইচ্ছাকে ফুটিয়ে তুলতে কবি এ কথাটি বলেছেন।
১৮. ‘সারাটা দিন আপন মনে ঘাসের গন্ধ মাখে,’—উদ্ধৃতিটির সরলার্থ কী?
উত্তর: জন্মভূমি থেকে দূরে থাকা মানুষ মনে মনে সবুজ ঘাসে ভরা জন্মভূমির স্নেহস্পর্শ শরীরে মেখে নেয়।
১৯. ‘সারাটা রাত তারায়-তারায় স্বপ্ন এঁকে রাখে’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: কবি ফেলে আসা শৈশব ও স্বদেশের স্মৃতি ফিরে পাওয়ার অপূর্ণ বাসনার ছবি, সুদুরের হাতছানি দেওয়া তারায় তারায় এঁকে রাখেন।
২০. ‘নেভে না তার যন্ত্রণা’—কীসের যন্ত্রণা?
উত্তর: ‘আবহমান’ কবিতায় কবি মাতৃভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার অনিঃশেষ মানসিক যন্ত্রণার কথা বলেছেন।
২১. ‘দুঃখ হয় না বাসি,’- দুঃখ বাসি হয় না কেন?
উত্তর: মানুষের শৈশব বা স্বদেশ হারানোর দুঃখযন্ত্রণা সর্বদা তার স্মৃতিতে সজীব থাকে। তাই কবি এমন উক্তি করেছেন।
২২. কুন্দফুলের হাসি কখনও হারায় না বলার কারণ কী?
উত্তর: মানুষের শৈশব ও স্বদেশ হারানোর দুঃখযন্ত্রণা যেমন হারিয়ে যায় না, ঠিক একইভাবে বাগান থেকে কুন্দফুলের হাস্যময় ছবিও হারিয়ে যায় না।
২৩. ‘আবহমান’ কবিতায় কী কখনও হারায় না বলা হয়েছে?
উত্তর: ‘আবহমান’ কবিতায় বাগান থেকে কুন্দফুলের হাসি কখনও হারায় না বলে কবি মনে করেছেন।
২৪. ‘তেমনি করেই সূর্য ওঠে’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: কবি ‘আবহমান’ কবিতায় মানুষের দুঃখযন্ত্রণা, বাগানের কুন্দফুলের হাসির চিরন্তনতার অনুষঙ্গে সূর্য ওঠার প্রসঙ্গ এনে শৈশবের প্রাকৃতিক অনুষঙ্গগুলির অপরিবর্তনীয়তা বোঝাতে চেয়েছেন।
২৫. ‘তেমনি করেই সূর্য ওঠে, তেমনি করেই ছায়া’—এখানে উভয় ক্ষেত্রেই ‘তেমনি করেই’ শব্দবন্ধ ব্যবহার করে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর: কবি দুঃখযন্ত্রণার পাশে কুন্দফুলের আনন্দঘন অবস্থানের প্রসঙ্গ টেনে সূর্যের উদয়-অস্তের আলো-ছায়াময় চিরন্তনতার কথা বোঝাতেই ‘তেমনি করেই’ শব্দবন্ধটি ব্যবহার করেছেন।
২৬. ‘এখনও সেই ফুল দুলছে, ফুল দুলছে,’—ছোট্ট ফুলটির সন্ধ্যার বাতাসে দোলার কারণ কী?
উত্তর: জন্মভূমির সৌন্দর্য আর আকর্ষণ বুকে নিয়ে কর্মের টানে মানুষ গ্রাম ছাড়ে। মনে থেকে যায় জন্মভূমিতে ফেরার বাসনা।
নবম শ্রেণী বাংলা
আবহমান কবিতার ৩ মার্কের প্রশ্ন উত্তর
১. কে এইখানে ঘর বেঁধেছে নিবিড় অনুরাগে; কোন প্রসঙ্গে বস্তা এরূপ উক্তি করেছেন? ‘নিবিড় অনুরাগে’ বিশেষণটি ব্যবহারের প্রাসঙ্গিকতা লেখো।
উত্তর: কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তাঁর ‘আবহমান’ কবিতায় এই উক্তিটি করেছেন। একদা বঙ্গভূমির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে এখানে বহু মানুষ ভালোবাসার নীড় রচনা করেছেন। তাদের এই মাটি, এই দেশ, এই শ্যামলিমা এবং স্নিগ্ধতার প্রতি গভীর ভালোবাসাই নিবিড় অনুরাগের প্রকাশ।
‘নিবিড় অনুরাগ’ বিশেষণটি গভীর ভালোবাসা বা আত্মিক সম্পর্ক বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে। কোনো সম্পর্কের মধ্যে যদি গভীরতা ও আন্তরিকতা না থাকে, তবে সে সম্পর্ক কখনোই স্থায়ী শান্তি বা সুখের বাসা গড়তে পারে না। দেশের প্রতি ওই নিবিড় ভালোবাসা, মাতৃভূমির প্রতি মমতা থেকেই সৃষ্টি হয় ‘নিবিড় অনুরাগ’, যা মাটির সঙ্গে মানুষের একাত্মতার মূল কারণ।
২. ফুরয় না, তার কিছুই ফুরয় না’ – কী ফুরয় না?
উত্তর: কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তাঁর ‘আবহমান’ কবিতায় এই উক্তিটি করেছেন। এখানে ‘ফুরয় না’ বলতে কবি দেশমাতার প্রতি সন্তানের অম্লান ভালোবাসা এবং তার ফিরে আসার আকাঙ্ক্ষাকে বোঝাতে চেয়েছেন। যদিও মানুষ নিজের স্বার্থে জন্মভিটে ছেড়ে চলে যায়, তবে সে যখন ফিরে আসে, তখন দেশমাতার স্নেহ-মমতা কখনোই ফুরিয়ে যায় না। কবি বলছেন যে, দেশমাতার প্রতি সন্তানের আকর্ষণ, ভালোবাসা কখনোই শেষ হয় না, তা কখনও ফুরায় না।
এটি বোঝাতে, কবি মানুষের অন্তর্গত অনুভূতি এবং মাতৃভূমির প্রতি তার অবিচলিত ভালোবাসার কথা বলেছেন, যা সময় বা দূরত্বের সাথে কখনোই বিলীন হয় না।
৩. ‘ছোট্ট একটা ফুল দুলছে, ফুল দুলছে, ফুল/ সন্ধ্যার বাতাসে।-এখানে কোন্ ফুলের কথা বলা হয়েছে? উক্তিটির প্রাসঙ্গিকতা আলোচনা করো।
উত্তর: কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তাঁর ‘আবহমান’ কবিতায় ‘ছোট্ট ফুল’ বলতে গ্রামবাংলার পরিচিত লাউ ফুলের কথা বলেছেন। পল্লিগ্রামের শান্ত-স্নিগ্ধ পরিবেশে লাউ ফুল একটি অত্যন্ত পরিচিত দৃশ্য, যা সন্ধ্যার মৃদু বাতাসে দুলতে থাকে। এই উক্তির প্রাসঙ্গিকতা বোঝায় যে, লাউ ফুল গ্রামবাংলার এক চিরায়ত অঙ্গ এবং এটি একটি বিশেষ দৃশ্য, যা সাধারণত গ্রামাঞ্চলে দেখা যায়। কবি এখানে এই পরিচিত দৃশ্যের মাধ্যমে দেশহারা মানুষের স্মৃতিকে উজ্জীবিত করতে চেয়েছেন।
গ্রামবাংলার শান্ত পরিবেশ এবং সন্ধ্যার বাতাসে লাউ ফুলের মৃদু দোলনা, স্মৃতির এক তাজা ছবি সৃষ্টি করে, যা বাংলার সাধারণ মানুষের মননে গেঁথে থাকে। এভাবেই কবি গ্রামবাংলার ঐতিহ্য এবং শৈশবের স্মৃতির সঙ্গে কবিতার প্রাসঙ্গিকতা জড়িয়ে দিয়েছেন।
নবম শ্রেণী বাংলা
আবহমান কবিতার ৩ মার্কের প্রশ্ন উত্তর
৪. “সারাটা দিন আপন মনে ঘাসের গন্ধ মাখে” – প্রসঙ্গসহ উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য আলোচনা করো।
উত্তর: কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তাঁর ‘আবহমান’ কবিতায় এই উদ্ধৃতাংশটি ব্যবহার করেছেন জন্মভূমি থেকে দূরে থাকা মানুষের আত্মিক অবস্থা ও অনুভূতির প্রতিনিধিত্ব করতে। “সারাটা দিন আপন মনে ঘাসের গন্ধ মাখে”—এই উক্তি প্রমাণ করে যে, জন্মভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন মানুষ তার মাতৃভূমির প্রকৃতির স্নেহস্পর্শে প্রবলভাবে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে।
ঘাসের গন্ধ, যা প্রকৃতির এক কোমল, শান্তিদায়ক উপাদান, সেই গন্ধের মাধ্যমে মানুষ তার শৈশব, জন্মভূমি ও মাতৃভূমির প্রতি তার অবিচ্ছিন্ন ভালোবাসা অনুভব করে। ঘাসের গন্ধ মাখার মাধ্যমে তাকে যেন তার মাতৃভূমির স্নেহস্পর্শ অনুভূত হয়, যা তার মনে শান্তি এনে দেয়। এই গন্ধ তার মন ও শরীরকে উদ্দীপ্ত করে, পিতৃভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে প্রবাসে থাকা কষ্টের অনুভূতিকে কিছুটা উপশম দেয়।
কবি এইভাবে প্রকৃতির সবুজের মাধ্যমে বাংলার ঐতিহ্য, মাটির প্রতি মানুষের নিবিড় ভালোবাসা এবং মাতৃভূমির সঙ্গে গভীর সম্পর্কের প্রাধান্য তুলে ধরেছেন।
৫. ‘নেভে না তার যন্ত্রণা যে, দুঃখ হয় না বাসি’ -এই আংশে কবির বক্তব্য পরিস্ফুট করো।
উত্তর: কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তাঁর ‘আবহমান’ কবিতায় এই উদ্ধৃতাংশের মাধ্যমে মাতৃভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া সন্তানের মনের অবস্থা এবং সেই সম্পর্কিত ক্রন্দনময় অনুভূতির গভীরতা ফুটিয়ে তুলেছেন। ‘নেভে না তার যন্ত্রণা যে, দুঃখ হয় না বাসি’—এই উক্তিটি বঙ্গমাতার অন্তহীন দুঃখ ও যন্ত্রণার কথা বলে, যা কখনও পুরনো হয় না, বরং চিরকালীন থাকে।
কবি এখানে বুঝাতে চেয়েছেন যে, একদা যারা তাদের জন্মভূমিকে ছেড়ে চলে গেছে, তাদের প্রতি মাতৃভূমির অবিরাম যন্ত্রণা শেষ হয় না। সেই দুঃখ কখনও শুকায় না, কখনো পুরনো হয় না। বঙ্গমাতার হৃদয়ের ক্রন্দন কখনো থামে না, কারণ তার সন্তানেরা যতই দূরে যাক না কেন, সেই দুঃখের বেদনা মায়ের কাছে চিরকালীন থাকে।
এই বেদনা এত গভীর এবং অনন্ত যে, তা যেন সময়ের ঊর্ধ্বে, সর্বদা একসঙ্গে থাকে। তবুও, মাতার হৃদয়ে তার সন্তানের জন্য আকাঙ্ক্ষা এবং আশিসের কামনা কখনও কমে না। এইভাবেই কবি মায়ের বেদনা ও স্নেহের সম্পর্ককে এক অসীম গভীরতায় চিত্রিত করেছেন।
নবম শ্রেণী বাংলা
আবহমান কবিতার ৫ মার্কের প্রশ্ন উত্তর
১. ‘আবহমান’ কবিতার মধ্য দিয়ে গ্রামীণ প্রকৃতির যে প্রতিচ্ছবি প্রকাশিত হয়েছে তার পরিচয় দাও।
উত্তর: কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তাঁর ‘আবহমান’ কবিতায় গ্রামীণ প্রকৃতির চিরকালীন, স্নিগ্ধ এবং পরিচিত প্রতিচ্ছবি প্রকাশ করেছেন। কবিতায় গ্রামীণ জীবনের সরলতা ও সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে, যেখানে প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের এক অঙ্গীকারিত সম্পর্ক প্রাধান্য পেয়েছে।
কবিতায় গ্রামীণ প্রকৃতির প্রতিচ্ছবির মধ্যে যেমন লাউ গাছ এবং তার সাথে সম্পর্কিত লাউ মাচা, তেমনি ছোট্ট ফুল, সন্ধ্যার বাতাস এবং ঘাসের গন্ধ উল্লেখযোগ্য স্থান পেয়েছে। কবি এই সকল প্রাকৃতিক উপাদানকে এমনভাবে চিত্রিত করেছেন, যা আমাদের গ্রামের প্রতি আকর্ষণ ও ভালোবাসার অনুভূতি জাগ্রত করে। কবি পল্লিগ্রামের সাধারণ দৃশ্যগুলিকে সুনিপুণভাবে চিত্রিত করেছেন, যেখানে লাউ গাছের পাশে দুলতে থাকা ফুলের মৃদু চিত্র আমাদের মনে সেই গ্রামীণ পরিবেশের প্রশান্তি এবং স্নিগ্ধতার অনুভূতি সৃষ্টি করে।
কবিতায় “সারাটা দিন আপন মনে ঘাসের গন্ধ মাখে”—এই উক্তির মাধ্যমে কবি জানিয়ে দিয়েছেন যে, যে কেউ জন্মভূমি থেকে দূরে চলে গেলে, তার মন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও মাটির প্রতি গভীর আবেগে নিবদ্ধ থাকে। এমনই এক চিত্র কবি ফুটিয়ে তুলেছেন, যেখানে মানুষ ও প্রকৃতির সম্পর্ক এক অদৃশ্য বন্ধনে বাঁধা থাকে।
এই কবিতার মাধ্যমে গ্রামীণ প্রকৃতির প্রতিচ্ছবি—যে প্রকৃতি সময়ের সাথে বদলায় না, বরং চিরকালীন থাকে—প্রকাশ পেয়েছে। কবি এই প্রকৃতির অপরিবর্তনীয়তা, শান্তি, এবং সেই সঙ্গে মানুষের আবেগের অন্তর্গত সম্পর্কের কথা তুলে ধরেছেন।
২. ‘ফুরয় না সেই একগুঁয়েটার দুরন্ত পিপাসা,’ ‘একগুঁয়েটা’ কে? তার ‘দুরন্ত পিপাসা ফুরয় না’ বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর: কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তাঁর ‘আবহমান’ কবিতায় ‘একগুঁয়েটা’ বলতে বঙ্গমাতাকে বা জন্মভূমির প্রতি নিবিড় ভালোবাসার নিদর্শন বহনকারী বাঙালি সন্তানদের বুঝিয়েছেন। এখানে ‘একগুঁয়েটা’ একটি প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে, যা সেই মাতৃভূমি, বঙ্গদেশের প্রতি মানুষের গভীর, অবিচলিত ভালোবাসা ও ফিরে আসার আকাঙ্ক্ষাকে তুলে ধরে।
কবি ‘দুরন্ত পিপাসা’ শব্দবন্ধটি দিয়ে বুঝিয়েছেন, এই একগুঁয়ে মনোভাবের মধ্যে যে অদম্য আকাঙ্ক্ষা থাকে, তা কখনোই ফুরায় না। ‘দুরন্ত পিপাসা’ হলো একটি অনবদ্য ইচ্ছা, যা ঘরবাড়ি ছেড়ে, স্বার্থ বা কর্মসূত্রে দূরে যাওয়া সত্ত্বেও মনের মধ্যে জন্মভূমির প্রতি গভীর সম্পর্কের আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি করে।
এখানে, ‘দুরন্ত পিপাসা’ বলতে কবি মায়ের সেই অবিরাম অপেক্ষার কথা বলেছেন, যার মধ্যে সন্তানের ফিরে আসার আকাঙ্ক্ষা এবং দেশভূমির প্রতি অমিত ভালোবাসা লুকিয়ে রয়েছে। মা কখনও ভাবতে পারে না যে তার সন্তান ফিরবে না; সে বারবার ফিরে আসার আশা নিয়েই বাঁচে। এমনকি কষ্টের মাঝেও মা সন্তানের জন্য তার মায়া ও ভালোবাসা কোনোদিন ফুরায় না।
এভাবে, কবি ‘ফুরয় না সেই একগুঁয়েটার দুরন্ত পিপাসা’ বলে বলেছেন, মাতার অন্তরের শুভ কামনার অবসান হয় না, সে চিরকাল সন্তানের ফিরে আসার স্বপ্নে বিভোর থাকে। এর মধ্যে পল্লি মাতার ঐকান্তিক ভালোবাসা, শাশ্বত আশা ও অদম্য মনোবলের চিত্র ফুটে উঠেছে।
নবম শ্রেণী বাংলা
আবহমান কবিতার ৫ মার্কের প্রশ্ন উত্তর
৩. “ফুরয় না তার কিছুই ফুরয় না, / নটেগাছটা বুড়িয়ে ওঠে, / কিন্তু মুড়য় না।” কী ফুরয় না বলে কবি মনে করেন? ‘নটেগাছটা মুড়য় না’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: এই পঙক্তিগুলি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী রচিত ‘আবহমান’ কবিতা থেকে নেওয়া। কবি এখানে বঙ্গজননীর (মাতৃভূমি) সন্তানদের প্রতি চিরন্তন ভালোবাসা ও সেই ভালোবাসার অফুরান টান বোঝাতে চেয়েছেন।
কবির মতে, মায়ের সন্তানের প্রতি ভালোবাসা, মাতৃভূমির প্রতি সন্তানের টান – এই আত্মিক বন্ধন কখনোই ফুরায় না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছু বদলায়, মানুষ বার্ধক্যে পৌঁছায়, জীবন পাল্টে যায়; তবুও জন্মভূমির টান, সেই নাড়ির সম্পর্ক, স্মৃতি আর ভালোবাসা কখনো পুরনো হয় না বা শেষ হয় না। এই ‘ফুরয় না’ কথার মধ্য দিয়ে কবি সেই চিরন্তন আবেগ ও টানকেই বোঝাতে চেয়েছেন।
লোককথায় প্রচলিত ‘নটেগাছ মুড়ে না’ কথাটিকে কবি একটু ভিন্নভাবে ব্যবহার করেছেন। নটেগাছ একটি এমন গাছ যা বয়স হলে বুড়িয়ে যায়, কিন্তু তার ডাল মুড়ে বা নুয়ে পড়ে না। কবি এই প্রতীকের মাধ্যমে বোঝাতে চেয়েছেন—প্রবাসী মানুষ বার্ধক্যে পৌঁছালেও তার হৃদয়ের গভীরে মাতৃভূমির স্মৃতি নুয়ে পড়ে না বা হারিয়ে যায় না। সে স্মৃতি চিরকাল তাজা থাকে। সেই টান, সেই আবেগ কখনো ‘মুড়ে’ বা মুছে যায় না। তাই ‘নটেগাছটা বুড়িয়ে ওঠে, কিন্তু মুড়য় না’ – এটি আসলে মানুষের মনোজগতে জন্মভূমির অমলিন উপস্থিতিরই প্রতীক।
এইভাবে, কবি ‘আবহমান’ কবিতায় মাতৃভূমির প্রতি সন্তানের চিরন্তন টান ও সম্পর্কের গভীরতাকে তুলে ধরেছেন।
৪. “তেমনি করেই সূর্য ওঠে, তেমনি করেই ছায়া / নামলে আবার ছুটে আসে সান্ধ্য নদীর হাওয়া।” সূর্য ওঠা ও ছায়ার ব্যাপারটি বুঝিয়ে দাও। নদীর হাওয়া ছুটে আসার তাৎপর্য লেখো।
উত্তর: এই পঙক্তিদুটি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী রচিত ‘আবহমান’ কবিতা থেকে নেওয়া। এখানে সূর্য ওঠা ও ছায়া নামা একটি প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
কবি প্রতিদিনের স্বাভাবিক প্রকৃতির চলাচলের সঙ্গে জীবনের চিরন্তন চক্রের তুলনা করেছেন।
– “সূর্য ওঠা” বোঝায় নতুন দিনের সূচনা, জীবনের আনন্দ, আশার আলো এবং গৃহে সন্তানের ফিরে আসার আনন্দঘন মুহূর্ত।
– “ছায়া নামা” বোঝায় দুঃখ, বিচ্ছেদ বা সন্তানহীনতার শূন্যতা।
তবে প্রকৃতির নিয়মে যেমন সূর্য ওঠে আর ছায়া নামে, তেমনি জীবনের সুখ ও দুঃখও আসে-যায়। সময় পাল্টালেও প্রকৃতির এই ছন্দ একইরকম থাকে। কবি দেখাতে চেয়েছেন, জন্মভূমি বাংলার প্রকৃতি সময়ের সাথে বদলায় না—তবে মানুষের জীবনে সুখ-দুঃখের ভাটাচড়াই চলে।
সান্ধ্যকালীন নদীর হাওয়া একাধারে প্রকৃতির স্নিগ্ধতা ও শান্তির প্রতীক।
প্রবাসে থাকা সন্তানদের স্মৃতিতে এই নদীর হাওয়া তাদের নাড়ির টানের অনুভূতিকে জাগিয়ে তোলে।
এ যেন জন্মভূমির অদৃশ্য ডাক, মায়ের আদর ও প্রকৃতির পরম শান্তির স্পর্শ।
অর্থাৎ, কবির মতে—প্রকৃতি, বিশেষ করে নদীর এই স্নিগ্ধ বাতাস প্রবাসী সন্তানদের মনে জন্মভূমির মমতা ও টান জাগিয়ে তোলে।
৫. “যা গিয়ে ওই উঠানে তোর দাঁড়া / লাউমাচাটার পাশে।” পঙ্ক্তিটি কবিতায় কতবার ব্যবহৃত হয়েছে পঙ্ক্তিটির একাধিকবার ব্যবহারের তাৎপর্য লেখো।
উত্তর: নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী রচিত ‘আবহমান’ কবিতায় “যা গিয়ে ওই উঠানে তোর দাঁড়া / লাউমাচাটার পাশে” পঙ্ক্তিটি চারবার ব্যবহৃত হয়েছে।
এই পঙ্ক্তিটির পুনঃপুন ব্যবহার কবিতায় একটি আবেগঘন ও প্রতীকী আহ্বান হয়ে উঠেছে। জন্মভূমির সঙ্গে প্রবাসী সন্তানের নাড়ির টান ও স্মৃতির টানাপড়েনই এতে প্রকাশ পেয়েছে।
– এখানে লাউমাচা শুধুই এক গাছ নয়; এটি শৈশব, মা, ঘর, আত্মিক শান্তি এবং ফেলে আসা মাটির প্রতীক।
– কবি এই পঙ্ক্তিটি বারবার ব্যবহার করে দেখাতে চেয়েছেন যে, মাতৃভূমি সন্তানের অপেক্ষায় চিরকাল দাঁড়িয়ে থাকে।
– এই পংক্তি যেন এক অনবদ্য মায়াভরা ডাক—প্রবাসী সন্তানকে ফিরে আসার আহ্বান।
– তাই এর পুনরাবৃত্তি বঙ্গমাতার আবেগ, আশাবাদ এবং সন্তানের সঙ্গে চিরন্তন বন্ধনের গভীরতা বোঝায়।
আরও দেখো: রাধারাণী গল্পের প্রশ্ন উত্তর