বাংলার উৎসব প্রবন্ধ রচনা Class 10, 9, 8, 7

এখানে বাংলার উৎসব সম্পর্কে ১০০, ২৫০, ৩০০ এবং ৪০০ শব্দের মধ্যে প্রবন্ধ রচনা শেয়ার করা হলো।

বাংলার উৎসব প্রবন্ধ রচনা: ১

‘এত ভঙ্গ বঙ্গদেশ তবু রঙ্গে ভরা’

এই রঙ্গ আসলে উৎসবের আনন্দ। আমাদের বারো মাসে তেরো পার্বণ। বাঙালি উৎসবের আনন্দেই সারাবছর মেতে থাকে। পয়লা বৈশাখে হালখাতা উৎসবের দিয়ে শুরু, শেষ হয় চৈত্র সংক্রান্তিতে গাজন দিয়ে। রবীন্দ্রজয়ন্তী, স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবস, তেইশে জানুয়ারি-এসব তো রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত উৎসব।

এ ছাড়া ধর্মীয় উৎসব, যেমন- দুর্গাপুজো, কালীপুজো, ভ্রাতৃদ্বিতীয়া, রথযাত্রা, ঝুলন, ইদ, মহরম, বড়োদিন, পৌষপার্বণ- এসবকে কেন্দ্র করেই বাংলা সারাবছর মুখরিত। প্রাত্যহিক জীবনের একঘেয়েমি এবং ক্লান্তি থেকে উৎসব মানুষকে মুক্তি দেয়। উৎসবের প্রাঙ্গণ হল মহামিলনের ক্ষেত্র।

বহু মানুষের সমাগমে আমাদের সামাজিক সংহতি দৃঢ় হয়। মানুষ ভেদাভেদ ভুলে পরস্পরের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে। আজকাল ‘বইমেলা’ একটা সামাজিক উৎসবে পরিণত হয়েছে। সংস্কৃতির বিকাশে এই মেলার গুরুত্ব অপরিসীম। উৎসবে বহু মানুষ একত্রিত হয় বলে কুটিরশিল্পজাত দ্রব্য বিক্রি করার সুযোগ থাকে। ফলে গ্রামীণ শিল্পের বিকাশ ঘটে।

বাংলার উৎসব প্রবন্ধ রচনা: ২

কথায় আছে বাংলার ‘বারো মাসে তেরো পার্বণ’। উৎসব ও পার্বণের দিনগুলোতেই বাঙালির প্রাণের প্রকৃত পরিচয় ফুটে ওঠে। নানান ধর্মের মানুষ বছর জুড়ে নানান সময়ে তাঁদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলি নিষ্ঠার সঙ্গে উদযাপন করে থাকেন।

বাঙালির সবচেয়ে বড়ো উৎসব দুর্গাপূজা ও ইদ। হিন্দুদের মধ্যে পালিত হয় লক্ষ্মীপূজা, কালীপূজা, সরস্বতীপূজা, বিশ্বকর্মাপূজা, মনসাপূজা, ধর্মপূজা প্রভৃতি। মুসলিম সম্প্রদায়ের উৎসবগুলির মধ্যে রয়েছে মহরম, ইদ, সবেবরাত ইত্যাদি। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা পালন করেন খ্রিস্টজন্মদিবস, গুড ফ্রাইডে, ইস্টার স্যাটারডে প্রভৃতি উৎসব।

এইসব উৎসব ছাড়াও বাঙালির সামাজিক উৎসবের মধ্যে অন্নপ্রাশন, জন্মদিন, বিবাহ, বিভিন্ন ব্রত-পার্বণ রয়েছে।

এছাড়াও বাঙালি নবান্ন, পৌষপার্বণ, দোলযাত্রা, নববর্ষ প্রভৃতি উৎসবে শামিল হয়। স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবস, রবীন্দ্র জয়ন্তী, নজরুল জয়ন্তী, নেতাজি জয়ন্তী প্রভৃতি দিনগুলিকে বাঙালিরা জাতীয় উৎসব রূপে পালন করে থাকেন। এইসব উৎসবের মধ্যে দিয়েই মানুষে মানুষে সুন্দর সম্পর্ক গড়ে ওঠে, সুদৃঢ় হয় সামাজিক বন্ধন।

বাংলার উৎসব প্রবন্ধ রচনা: ৩

“এত ভঙ্গ বঙ্গদেশ তবু রঙ্গে ভরা” -ঈশ্বর গুপ্ত

ভূমিকা:

মানবজীবনের অপরিহার্য অঙ্গ হল উৎসব। মানুষ কেবল খেয়ে-পরে বেঁচেই সন্তুষ্ট হয় না। সে অনেকের সঙ্গে নিজেকে মিলিয়ে দিতে চায়, দৈনন্দিন জীবনের একঘেয়েমি থেকে মুক্তি চায়, শ্রমক্লান্ত জীবনে পেতে চায় অনাবিল আনন্দ। আর সেজন্যই মানুষ উৎসবে মেতে ওঠে। উৎসব মানুষকে আনন্দ দেয়, প্রসারিত করে তার অস্তিত্বকে।

ধর্মীয় উৎসব:

নানান ধর্মসম্প্রদায়ের বাস এই বাংলায়। সকল সম্প্রদায়ই আপন আপন ধর্মীয় উৎসবে মেতে ওঠে। হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপুজো। শরৎকালে দেবী দুর্গার আরাধনাকে কেন্দ্র করে কয়েকদিনের জন্য ধর্মমত নির্বিশেষে বাঙালিজীবন আনন্দমুখর হয়ে ওঠে।

দুর্গাপুজো ছাড়া কালীপুজো, সরস্বতীপুজো, লক্ষীপুজো, বিশ্বকর্মাপুজো, মনসাপুজো, ধর্মপুজো প্রভৃতিও বাংলার বিশিষ্ট ধর্মীয় উৎসব। এ ছাড়া আরও নানা ধরনের ধর্মীয় উৎসব পালিত হয় হিন্দুসমাজে। মহরম, ইদ, সবেবরাত প্রভৃতি মুসলমান সম্প্রদায়ের উৎসবও বাঙালি-জীবনের সঙ্গে অচ্ছেদ্যভাবে জড়িত। বাঙালি-খ্রিস্টানদের মধ্যে রয়েছে বড়োদিন, গুড ফ্রাইডে, ইস্টার স্যাটারডে প্রভৃতি উৎসব।

সামাজিক-পারিবারিক উৎসব:

মানুষ সামাজিক জীব। ব্যক্তিগত আনন্দ-অনুষ্ঠানকেও সে ভাগ করে নিতে চায় আর পাঁচজনের সঙ্গে। বিবাহ, অন্নপ্রাশন, জন্মদিন, উপনয়ন, ভ্রাতৃদ্বিতীয়া-এই পরিবারকেন্দ্রিক অনুষ্ঠানগুলিও শেষপর্যন্ত বাংলার সামাজিক উৎসবে পরিণত হয়। এগুলির মধ্যে দিয়ে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গেও নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সুদৃঢ় হয় সামাজিক বন্ধন।

ঋতু-উৎসব:

বিভিন্ন ঋতুতে বাংলা দেশে অনুষ্ঠিত হয় বর্ণময় উৎসব।
এগুলির মধ্যে প্রধান কয়েকটি হল নবান্ন, পৌষপার্বণ, মাঘোৎসব, দোলযাত্রা, নববর্ষোৎসব প্রভৃতি। রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতনে বৃক্ষরোপণ, বর্ষামঙ্গল, বসন্তোৎসব প্রভৃতি ঋতু-উৎসব বিশেষ গুরুত্ব সহকারে উদ্যাপিত হয়। রবীন্দ্রনাথের ধারা অনুসরণ করে এই সমস্ত উৎসব আজ শান্তিনিকেতনের বাইরেও বিভিন্ন জায়গায় অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

জাতীয় উৎসব:

শুধু ধর্মীয়, সামাজিক-পারিবারিক কিংবা ঋতু-উৎসব নয়, স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবস, রবীন্দ্রজয়ন্তী, নজরুলজয়ন্তী, নেতাজিজয়ন্তী ইত্যাদি পালন উপলক্ষ্যে বাঙালি উৎসবে মেতে ওঠে।.

উপসংহার:

বাঙালি উৎসব প্রিয় জাতি। সেজন্যই বাঙালি সমাজে বারো মাসে তেরো পার্বণের সমারোহ। এইসব উৎসব একের সঙ্গে অন্যকে মিলিয়ে দেওয়ার, নিজের সংকীর্ণ গণ্ডি থেকে বেরিয়ে আসার মাধ্যম। উৎসব আছে বলেই সমস্যা জটিল দুঃখ জর্জর জীবনেও বেঁচে থাকার আশ্বাস পাওয়া যায়। উৎসবের মধ্যেই রয়ে যায় বাঙালির প্রাণের পরিচয়।

বাংলার উৎসব প্রবন্ধ রচনা: ৪

“দুন্দুভি বেজে ওঠে ডিম্-ডিম্ রবে,
সাঁওতাল পল্লীতে উৎসব হবে”।

ভূমিকা:

শুধু সাঁওতাল পল্লীতেই নয়, বাংলার যে কোনো উৎসবের দিনই জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমস্ত মানুষের হৃদ-মাঝারে বেজে ওঠে দ্রিদিম দ্রিদিম হর্ষদুন্দুভি। মানব জীবনে উৎসবের গুরুত্ব অপরিসীম। উৎসব মানুষকে অনাবিল আনন্দে বাঁচতে শেখায়, শেখায় সৌভ্রাতৃত্ব, শেখায় সমগ্র জাতির মধ্যে অভেদ কল্পনা করতে।

বাঙালি হলে তো আর কথাই নেই। বাঙালির আন্তরিক মানসিকতাই উৎসব অন্য মাত্রা পায়। তাই, অভাব-অনটন, দুঃখ-দারিদ্র্য, দুর্যোগ-দুর্বিপাক, শোষণ- অত্যাচার সত্ত্বেও বাংলার গ্রাম-গঞ্জ, নগর প্রান্তরে আজও বাঙালি- মেতে ওঠে আনন্দ উৎসবে – ‘বারো মাসে তেরো পার্বণ’ এ, মহামিলনের আনন্দযজ্ঞে।

উৎসবের বৈচিত্র্য:

বৈশাখের শুরু থেকে চৈত্রের শেষ দিন পর্যন্ত উৎসবের ঘনঘটায় বাঙালি থাকে আনন্দমুখর। বাংলা ও বাঙালির উৎসবকে নানা ভাগে ভাগ করে আলোচনা করা যায়। —

ধর্মীয় উৎসব:

বাংলায় যেহেতু বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের বসবাস তাই অধিকাংশ উৎসবই প্রধানত ধর্মকেন্দ্রিক। নববর্ষের প্রাক্কালে গণেশপূজা দিয়ে শুরু হয় বাঙালির ধর্মীয় উৎসব যাত্রা। সারাবছর ধরে চলে উৎসবের মিছিল, নববর্ষের পর দশহরা, স্নানযাত্রা, রথযাত্রা, মনসাপুজো, বিশ্বকর্মাপুজো।

এর পর আসে বাঙালির আসল উৎসব দুর্গোৎসব। ঘরের মেয়েকে সামনে রেখে আনন্দে ওই কটা দিন বিহ্বল হয়ে থাকে আপামর বাঙালি। তারপর কোজাগরী পূর্ণিমায় সম্পদের অধিষ্ঠাতা দেবী লক্ষ্মীর পুজো, অমাবস্যার অন্ধকার দূর করতে দীপ জ্বলে ওঠে ঘরে ঘরে, পূজিতা হন শক্তির অধিষ্ঠাতা দেবী কালীর। তারপর কার্তিক, জগদ্ধাত্রী, সরস্বতী আরো কত কী। বছর শেষ হয় শিব গাজন ও অন্নপূর্ণা পূজা দিয়ে।

অহিন্দু বাঙালি উৎসব:

এগুলো তো গেল হিন্দু ধর্মের উৎসব, তাছাড়া রয়েছে অন্যান্য ধর্মাবলম্বী বাঙালির উৎসব, যেমন- বৌদ্ধদের– বুদ্ধ পূর্ণিমা, উপনয়ন, শ্রাদ্ধানুষ্ঠান, অন্নপ্রাশন; জৈনদের পরেশনাথ উৎসব, মহাবীর জয়ন্তী; ইসলামদের-ঈদ, শবেবরাত, মহরম, ঈদ-উল-ফেতর; খ্রিস্টানদের– গুড ফ্রাইডে, বড়দিন, ইস্টার সাটারডে; শিখদের – গুরু নানকের জন্মদিন ও তিরোধান দিবস ইত্যাদিতে বাঙালি সমানভাবে অংশগ্রহণ করে। ধর্মীয় উৎসব মানুষকে দীক্ষিত করে ধর্মীয় স্বাধীনতার মন্ত্রে এবং কামনা করে চিরন্তন কল্যাণ।

ঋতু উৎসব:

সবুজ প্রকৃতিই মানুষের প্রধান দেবতা।
প্রকৃতিকে কেন্দ্র করেই বিভিন্ন ধরণের উৎসব পালিত হয় ঋতু উৎসবগুলি ঋতুচক্রের সাথেই হাত ধরাধরি করে চলে। বছরের শুরুতেই বৈশাখে নববর্ষ উদ্‌-যাপন, হাল খাতা, বর্ষার শুরুতে বর্ষাবন্দনা, বৃক্ষরোপণ, বীজবপন, ধান্যরোপণ, বনমহোৎসব, অঘ্রানে ‘নতুন ধান্যে হয় নবান্ন সবাকার ঘরে ঘরে’, পৌষে পৌষমেলা, পিঠেপার্বণ আর ফাল্গুনে পলাশের রক্তিম আভায় পালিত হয় দোল উৎসব। চৈত্রে চড়ক-গাজন, – এসবই বাঙালি প্রাণের ঋতুকেন্দ্রিক উৎসব।

সামাজিক ও পারিবারিক উৎসব:

সামাজিক উৎসবই হলো মানুষের প্রধান ঐক্যবোধের ও সোহার্দ্য স্থাপনের মঞ্চ। বাঙালির সামাজিক ও পারিবারিক উৎসবের মধ্যে রয়েছে বার ব্রত, বিবাহ, জামাইষষ্ঠী, ভ্রাতৃদ্বিতীয়া ইত্যাদি- এইসবে বাঙালি সমাজ এক ও অদ্বিতীয়।

লোকউৎসব:

প্রান্তিক জনজীবনে প্রচলিত নানা লোকউৎসবও রয়েছে যেমন- ইতুপুজো, ভাদুপুজো, টুসুপুজো।

জাতীয় উৎসব:

বিভিন্ন জাতীয় উৎসবের মধ্য দিয়ে বাংলায় দেশাত্মবোধক ও দেশের প্রতি বিভিন্ন মনিষীদের বলিদানের মন্ত্র উচ্চারিত হয়। উল্লেখযোগ্য উৎসবগুলি
হলো – নেতাজির জন্মদিবস, স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবস, রবীন্দ্রজয়ন্তী প্রভৃতি।

স্থানভিত্তিক উৎসব:

বিশেষ কিছু উৎসব বিভিন্ন স্থানে বিশেষভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, যেমন- মাহেশের রথ, চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো, ইস্কনের রথ, শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলা ইত্যাদি।

আধুনিকতম উৎসব:

আধুনিক শিক্ষিত মানুষের মনের চাহিদা পূরণ করতে বর্তমানে নতুনভাবে সংযোজিত হয়েছে বইমেলা। এছাড়াও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস I পালন করা উৎসবের অঙ্গ। যেমন প্রতিবন্ধী দিবস, পরিবেশ দিবস, নারীদিবস, শিশুদিবস, Mothers’ Day ইত্যাদি।

প্রাচীনকালের উৎসব:

সেকালের যেকোনো উৎসবই ছিল প্রাণের কেন্দ্রবিন্দু। ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সকলের হৃদয়ের যোগে গড়ে উঠত আনন্দসেতু। হয়তো এখনকার মতো জাঁকজমক ছিল না ঠিকই, কিন্তু ছিল প্রাণশক্তি।

বর্তমান কালের উৎসবের অশুভ দিক:

বর্তমানের উৎসবে প্রাণের স্পর্শ যেন নেই, নেই পারস্পরিক কল্যাণ কামনা। আছে শুধু বহিরঙ্গের সাজসজ্জা, সমারোহ, মাইকের গগণবিদারী আর্তনাদ আর বারোয়ারী উৎসব। কিছু ক্ষেত্রে দেখতে পাই মাতব্বরদের জুলুমি চাঁদা আদায়, উগ্র গান সহযোগে কুৎসিত অঙ্গভঙ্গিতে নাচ, উৎকট রুচিহীন হুল্লোড়বাজি। প্রায় সবই যেন লোক দেখানি, মেকি মেকি। উৎসব এখন বিপণনে পরিণত হয়েছে।

উৎসবের গুরুত্ব:

বলেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় “আমার আনন্দে সকলের আনন্দ হউক, আমার শুভে সকলের শুভ হউক, আমি পাই তাহা পাঁচজনের সহিত মিলিত হইয়া উপভোগ করি। এই কল্যাণী ইচ্ছাই উৎসবের প্রাণ”। তাই উৎসব মানুষের হৃদয়কে প্রসারিত করে শুভবোধকে জাগ্রত করে, মানুষ মিলেমিশে যেন বলে, “এক সূত্রে বাঁধিয়াছি সহস্রটি প্রাণ”।

প্রাত্যহিক নিরানন্দময় জীবনযাত্রায় আমরা ক্লান্ত, এর থেকে মুক্তি পেতেই উৎসবের আনন্দযজ্ঞে ঝাঁপিয়ে পড়ি, সেই ক্ষণিকের ভিন্ন জীবনযাত্রা আমাদের হৃদ-মাঝারে এনে দেয় এক ঝলক টাটকা সুবাস, দূর হয় দুঃখ, ক্রোধ, ক্লান্তি, বিদ্বেষ। উৎসবই একমাত্র পারে বিভিন্ন জাতির মধ্যে মিলন ঘটাতে।

উপসংহার:

উৎসবের মধ্য দিয়ে বাংলা ও বাঙালি খুঁজে পায় প্রাণের আরাম, মনের শান্তি, আত্মার তৃপ্তি। তাই বাঙালী একদিন তার অতীত, ঐতিহ্য উষ্ণতার প্রাণবন্যায় তার উৎসবগুলিকে অপার প্লাবিত করে তুলবে- এ প্রত্যয় ছাড়া আর উপায় নেই। উৎসব যেন জাঁকজমক ও রঙ্গ রসিকতার মঞ্চ না হয়ে ওঠে, সেখানে যেন জাতির মিলন হয়, মানব সত্ত্বা প্রস্ফুটিত হয়।
কারণ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন- ‘প্রতিদিন মানুষ ক্ষুদ্র, দীন, একাকী। কিন্তু উৎসবের দিন মানুষ বৃহৎ – সেদিন সে সমস্ত মনুষ্যত্বের শক্তি অনুভব করিয়া মহৎ’।

আরও দেখো:

মোবাইলের ভালো মন্দ রচনা

Leave a Comment

CLOSE

You cannot copy content of this page