চিঠি রচনার প্রশ্ন উত্তর / নবম শ্রেণীর বাংলা WBBSE স্বামী বিবেকানন্দ

এখানে চিঠি রচনার প্রশ্ন উত্তর শেয়ার করা হলো। / নবম শ্রেণীর বাংলা WBBSE চিঠি স্বামী বিবেকানন্দ

নবম শ্রেণীর বাংলা
চিঠি রচনার MCQ প্রশ্ন উত্তর

১.১ “এই আমার প্রতিজ্ঞা।” — এখানে কার প্রতিজ্ঞার কথা বলা হয়েছে?
(ক) ভগিনী নিবেদিতা
(খ) মিসেস বুল
(গ) স্বামী বিবেকানন্দ
(ঘ) মিস ম্যাকলাউড

উত্তর: স্বামী বিবেকানন্দ

১.২ “কারও পক্ষপুটে আশ্রয় নিলে চলবে না।” — পক্ষপুটে আশ্রয় না-নিয়ে যা করতে হবে, তা হল—
(ক) বেদান্ত ধর্ম ত্যাগ করতে হবে
(খ) এদেশীয়দের ঘৃণা করতে হবে
(গ) কঠোর সংকল্প করতে হবে
(ঘ) নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে

উত্তর: নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে

১.৩ “দুর্ভাগ্যক্রমে এই ধারণা ছেলেবেলা থেকেই তাঁর মাথায় ঢুকেছে” — যে ধারণাটি মাথায় ঢুকেছে, তা হল—
(ক) মিস মুলার আজন্ম নেত্রী
(খ) মিস মুলারকে বনিয়ে চলা অসম্ভব
(গ) মিস মুলার দুনিয়াটাকে ওলট-পালট করে দিতে পারেন
(ঘ) কোনোটিই নয়

উত্তর: মিস মুলার আজন্ম নেত্রী

১.৪ মিস মুলারের ধারণা কী?
(ক) তিনি আজন্ম নেত্রী
(খ) তিনি সবার চেয়ে ভালো মানুষ
(গ) তাঁর কারও সাহায্যের প্রয়োজন নেই
(ঘ) তাঁর মতো অর্থ কারও নেই

উত্তর: তিনি আজন্ম নেত্রী

১.৫ “তাঁর সঙ্গে বনিয়ে চলা অসম্ভব।” — এখানে ‘তাঁর’ বলতে বোঝানো হয়েছে—
(ক) মিস নো
(খ) মিসেস বুল
(গ) মিস মুলার
(ঘ) স্টার্ডি

উত্তর: মিস মুলার

১.৬ “তার বর্তমান সংকল্প এই যে,” — সংকল্পটি কী?
(ক) এদেশীয়দের ওপর মুরুব্বিয়ানা দেখানো
(খ) তিনি কলকাতায় একটি বাড়ি ভাড়া নেবেন
(গ) দুনিয়াকে ওলট-পালট করে দেবেন
(ঘ) কোনোটিই নয়

উত্তর: তিনি কলকাতায় একটি বাড়ি ভাড়া নেবেন

১.৭ “তাঁর মঠাধ্যক্ষাসুলভ সংকল্পটি দুটি কারণে কখনও সফল হবে না” — কারণ দুটি কী?
(ক) তাঁর রুক্ষ মেজাজ ও নেত্রীসুলভ মনোভাব
(খ) অর্থসর্বস্ব মনোভাব ও সময়ের অভাব
(গ) রুক্ষ মেজাজ ও অদ্ভুত অস্থিরচিত্ততা
(ঘ) ওলট-পালট মানসিকতা ও পরিচিতির অভাব

উত্তর: রুক্ষ মেজাজ ও অদ্ভুত অস্থিরচিত্ততা

১.৮ “তাঁর রুক্ষ মেজাজ এবং অদ্ভুত অস্থিরচিত্ততা” — কার চরিত্রের পরিচয়?
(ক) মিসেস বুল
(খ) ম্যাকলাউড
(গ) মিস মুলার
(ঘ) মিসেস সেভিয়ার

উত্তর: মিস মুলার

১.৯ “নারীকুলের রত্নবিশেষ; এত ভালো, এত স্নেহময়ী তিনি।” — এই প্রশংসাটি কাকে উদ্দেশ করে বলা হয়েছে?
(ক) মিসেস বুল
(খ) ম্যাকলাউড
(গ) মিসেস সেভিয়ার
(ঘ) নিবেদিতা

উত্তর: মিসেস সেভিয়ার

১.১০ “রামকৃষ্ণ সংঘে ‘মাদার’ নামে পরিচিত ছিলেন” — কে?
(ক) মিস ম্যাকলাউড
(খ) ভগিনী নিবেদিতা
(গ) মাদার টেরেসা
(ঘ) মিসেস সেভিয়ার

উত্তর: মিসেস সেভিয়ার

নবম শ্রেণীর বাংলা
চিঠি রচনার MCQ প্রশ্ন উত্তর

১.১১ ইংল্যান্ডে স্বামী বিবেকানন্দকে বেদান্ত প্রচারে সাহায্য করেন—
(ক) মিস মুলার
(খ) মিস্টার স্টার্ডি
(গ) মিসেস বুল
(ঘ) মিসেস সেভিয়ার

উত্তর: মিস্টার স্টার্ডি

১.১২ “মায়াবতী অদ্বৈত আশ্রম” — প্রতিষ্ঠা করেন—
(ক) মিস ম্যাকলাউড ও মিসেস বুল
(খ) মিস মুলার ও মিসেস সেভিয়ার
(গ) মিসেস সেভিয়ার
(ঘ) মি. ই টি স্টার্ডি

উত্তর: মিসেস সেভিয়ার

১.১৩ “যাঁরা এদেশীয়দের ঘৃণা করেন না” — এখানে কার কথা বলা হয়েছে?
(ক) স্টার্ডি
(খ) মিস ম্যাকলাউড
(গ) মিসেস বুল
(ঘ) সেভিয়ার দম্পতি

উত্তর: সেভিয়ার দম্পতি

১.১৪ “তাঁদের এখনও কোনো নির্দিষ্ট কার্যপ্রণালী নেই।” — এখানে ‘তাঁদের’ বলতে বোঝানো হয়েছে—
(ক) সেভিয়ার দম্পতি
(খ) ভারতীয়রা
(গ) মিস মুলার ও ম্যাকলাউড
(ঘ) মিসেস সেভিয়ার ও মিসেস বুল

উত্তর: সেভিয়ার দম্পতি

১.১৫ “তোমার সহকর্মিরূপে তাঁদের পেতে পারো” — এখানে যাঁদের পাওয়া যেতে পারে, তাঁরা হলেন—
(ক) সেভিয়ার দম্পতি
(খ) ইংরেজরা
(গ) ম্যাকলাউড ও বস্টনের মিসেস বুল
(ঘ) ভারতীয়রা

উত্তর: সেভিয়ার দম্পতি

১.১৬ “তোমার ও তাঁদের উভয়েরই সুবিধা হবে” — যাঁদের সুবিধা হবে, তাঁরা হলেন—
(ক) সেভিয়ার দম্পতি ও নিবেদিতা
(খ) ম্যাকলাউড ও মিসেস বুল
(গ) স্টার্ডি ও মার্গারেট নো
(ঘ) এঁদের কেউই নন

উত্তর: সেভিয়ার দম্পতি ও নিবেদিতা

১.১৭ “নিজের পায়ে অবশ্যই দাঁড়াতে হবে” — স্বামীজি এ কথা বলেন কেন?
(ক) অর্থ উপার্জনের প্রয়োজন বোঝাতে
(খ) ভারতের আর্থসামাজিক কাঠামোয় নিবেদিতার মনের অভিপ্রায় পূরণ করতে
(গ) দেশভ্রমণের প্রয়োজন বোঝাতে
(ঘ) ঈশ্বর সাধনায় উৎসাহ দিতে

উত্তর: ভারতের আর্থসামাজিক কাঠামোয় নিবেদিতার মনের অভিপ্রায় পূরণ করতে

১.১৮ “এই শরৎকালেই ভারত পরিভ্রমণে আসছেন।” — যাঁদের উদ্দেশে এ কথা বলা হয়েছে, তাঁরা হলেন—
(ক) মিস নো ও মিস মুলার
(খ) ম্যাকলাউড ও স্টার্ডি
(গ) ম্যাকলাউড ও মিসেস বুল
(ঘ) মিস মুলার ও মিসেস বুল

উত্তর: ম্যাকলাউড ও মিসেস বুল

১.১৯ চিঠিটি তিনি মিস নো-কে লিখেছিলেন—
(ক) আলমোড়া থেকে
(খ) সিকিম থেকে
(গ) দার্জিলিং থেকে
(ঘ) কার্সিয়াং থেকে

উত্তর: আলমোড়া থেকে

১.২০ আলমোড়া অবস্থিত—
(ক) হিমাচল প্রদেশে
(খ) উত্তরপ্রদেশে
(গ) উত্তরাঞ্চলে
(ঘ) উত্তরাখণ্ডে

উত্তর: উত্তরাখণ্ডে

নবম শ্রেণীর বাংলা
চিঠি রচনার MCQ প্রশ্ন উত্তর

১.২১ “কল্যাণীয়া মিস” বলে স্বামী বিবেকানন্দ সম্বোধন করেছেন—
(ক) স্টার্ডিকে
(খ) মুলারকে
(গ) ম্যাকলাউডকে
(ঘ) নো-কে

উত্তর: নো-কে

১.২২ মিস নোব্‌ল-এর সম্পূর্ণ নাম—
(ক) মিস হেনরিয়েটা নো
(খ) মিস মার্গারেট এলিজাবেথ নোব্‌ল
(গ) মিস জোসেফাইন নোব্‌ল
(ঘ) মিস জোসেফাইন মার্গারেট নোব্‌ল

উত্তর: মিস মার্গারেট এলিজাবেথ নোব্‌ল

১.২৩ “সম্পূর্ণ নাম মিস মার্গারেট নোব্‌ল” — মার্গারেট নোব্‌ল এদেশে কী নামে পরিচিত?
(ক) ভগিনী নিবেদিতা
(খ) মিস
(গ) নিবেদিতা
(ঘ) মিস মার্গারেট ই নোব্‌ল

উত্তর: ভগিনী নিবেদিতা

১.২৪ “স্বামীজির শিষ্যাদের মধ্যে অন্যতমা ও অগ্রগণ্যা” — কে?
(ক) মিস মুলার
(খ) মিস ম্যাকলাউড
(গ) মিসেস সেভিয়ার
(ঘ) মিস নোব্‌ল

উত্তর: মিস নোব্‌ল

১.২৫ “একখানা চিঠি কাল পেয়েছি।” — এখানে যাঁর চিঠি পাওয়ার কথা বলা হয়েছে, তিনি—
(ক) মিসেস সেভিয়ার
(খ) মিস মুলার
(গ) মি. ই টি স্টার্ডি
(ঘ) মিস নোব্‌ল

উত্তর: মি. ই টি স্টার্ডি

১.২৬ মি. স্টার্ডি যে কাজে স্বামী বিবেকানন্দকে সাহায্য করেছিলেন—
(ক) আশ্রম প্রতিষ্ঠা
(খ) মানুষকে প্রভাবিত করা
(গ) বেদান্ত প্রচার
(ঘ) অর্থসংগ্রহ

উত্তর: বেদান্ত প্রচার

১.২৭ “প্রথম জীবনে যখন ভারতে ছিলেন তখন আলমোড়ায় তপস্যা করেন” — কে তপস্যা করেছিলেন?
(ক) মিসেস সেভিয়ার
(খ) মিস ম্যাকলাউড
(গ) মি. ই টি স্টার্ডি
(ঘ) স্বামী বিবেকানন্দ

উত্তর: মি. ই টি স্টার্ডি

১.২৮ মি. স্টার্ডি কোথায় স্বামী বিবেকানন্দকে বেদান্ত প্রচারে সাহায্য করেছিলেন?
(ক) আমেরিকায়
(খ) ইংল্যান্ডে
(গ) ইউরোপে
(ঘ) রাশিয়ায়

উত্তর: ইংল্যান্ডে

১.২৯ “তুমি ভারতে আসতে এবং সবকিছু চাক্ষুষ দেখতে দৃঢ়সংকল্প” — এখানে কার কথা বলা হয়েছে?
(ক) নিবেদিতা
(খ) স্বামী বিবেকানন্দ
(গ) মি. স্টার্ডি
(ঘ) মিসেস সেভিয়ার

উত্তর: ভগিনী নিবেদিতা

১.৩০ “কাল তার উত্তর দিয়েছি” — এখানে কাল কার চিঠির উত্তর দেওয়া হয়েছে?
(ক) মিস মুলার
(খ) মিসেস সেভিয়ার
(গ) ভগিনী নিবেদিতা
(ঘ) মি. স্টার্ডি

উত্তর: মি. স্টার্ডির চিঠির

১.৩১ “তোমার কর্মপ্রণালী সম্বন্ধে যা জানতে পারলাম” — কার কাছ থেকে কর্মপ্রণালীর কথা জেনেছিলেন?
(ক) মি. স্টার্ডির
(খ) মিস মুলারের
(গ) মিসেস সেভিয়ারের
(ঘ) স্বামী বিবেকানন্দের

উত্তর: মিস মুলারের

নবম শ্রেণীর বাংলা
চিঠি রচনার MCQ প্রশ্ন উত্তর

১.৩২ মিস মুলার স্বামীজিকে অর্থসাহায্য করেছিলেন—
(ক) বেলুড় মঠ স্থাপনের সময়
(খ) বেদান্ত প্রচারের সময়
(গ) মায়াবতী অদ্বৈত আশ্রম প্রতিষ্ঠার সময়
(ঘ) ভারতে ফেরার সময়

উত্তর: বেলুড় মঠ স্থাপনের সময়

১.৩৩ “এ পত্রখানিও আবশ্যক হয়ে পড়েছে” — কেন স্বামীজি চিঠি লেখা আবশ্যক মনে করেছিলেন?
(ক) নিবেদিতাকে সরাসরি তৎকালীন ভারতের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করতে
(খ) ভারতে আসতে নিষেধ করতে
(গ) ভারত সম্পর্কে ভয় দেখাতে
(ঘ) ভারতের দ্রষ্টব্য স্থান সম্পর্কে জানাতে

উত্তর: নিবেদিতাকে সরাসরি তৎকালীন ভারতের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করতে

১.৩৪ “সরাসরি তোমাকে লেখা ভালো” — এখানে ‘তোমাকে’ বলতে বোঝানো হয়েছে—
(ক) মিস নোব্‌ল
(খ) মিসেস সেভিয়ার
(গ) মিসেস বুল
(ঘ) মিস ম্যাকলাউড

উত্তর: মিস নোব্‌ল

১.৩৫ মিস নোব্‌লকে স্বামীজি যে নামে আখ্যায়িত করেছিলেন, সেটি হল—
(ক) মুক্তিপ্রাণা
(খ) মাতৃময়ী
(গ) অন্নপূর্ণা
(ঘ) নিবেদিতা

উত্তর: নিবেদিতা

১.৩৬ “স্ত্রীশিক্ষার প্রচলনের জন্য কলকাতার বাগবাজারে একটি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন” — বিদ্যালয়টির নাম কী?
(ক) নিবেদিতা বালিকা বিদ্যালয়
(খ) বাগবাজার বালিকা বিদ্যালয়
(গ) ভগিনী নিবেদিতা বিদ্যালয়
(ঘ) বাগবাজার মাল্টিপারপাস স্কুল

উত্তর: নিবেদিতা বালিকা বিদ্যালয়

১.৩৭ “নিবেদিতা বালিকা বিদ্যালয়” স্থাপন করেছিলেন—
(ক) সেভিয়ার দম্পতি
(খ) স্বামী বিবেকানন্দ
(গ) মিস নোব্‌ল
(ঘ) জোসেফাইন ম্যাকলাউড

উত্তর: মিস নোব্‌

১.৩৮ The Master as I Saw Him, The Web of Indian Life — এই গ্রন্থ দুটির রচয়িতা কে?
(ক) স্বামী বিবেকানন্দ
(খ) মিস ম্যাকলাউড
(গ) মিসেস বুল
(ঘ) মিস নোব্‌ল

উত্তর: মিস নোব্‌ল

ক্লাস 9 বাংলা
চিঠি রচনার অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

১. মিস মুলার কীভাবে স্বামীজিকে সাহায্য করেছিলেন?

উত্তর: মিস মুলার বেলুড় মঠ স্থাপনের কাজে স্বামীজিকে অর্থ সাহায্য করেছিলেন।

২. ‘এ পত্রখানিও আবশ্যক হয়ে পড়েছে’—কেন স্বামী বিবেকানন্দ এ কথা বলেছেন?

উত্তর: স্বামীজি মিস মুলারের কাছে নিবেদিতার ভারতে এসে কাজ করার কথা শুনে তাঁর প্রিয় শিষ্যাকে ভারতের বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করার কর্তব্যবোধ থেকে এ কথা বলেছেন।

৩. ‘তোমাকে খোলাখুলি বলছি’—বক্তা কী বলেছেন?

উত্তর: বক্তা স্বামীজি স্পষ্ট ভাষায় নিবেদিতাকে জানিয়েছেন যে, তিনি বিশ্বাস করেন ভারতের কাজে নিবেদিতার এক বিরাট ভবিষ্যৎ রয়েছে।

৪. ‘এখন আমার দৃঢ় বিশ্বাস হয়েছে যে,’—দৃঢ় বিশ্বাসটি কী?

উত্তর: স্বামী বিবেকানন্দের দৃঢ় বিশ্বাস হয়েছে যে, ভারতের কাজে বিশেষত নারীসমাজের জন্য মিস নোবল-এর একটি বিরাট ভবিষ্যৎ রয়েছে।

৫. ‘একজন প্রকৃত সিংহীর প্রয়োজন’—’প্রকৃত সিংহী’ কাকে বলা হয়েছে এবং কেন?

উত্তর: স্বামীজির কথায় এক্ষেত্রে প্রকৃত সিংহী হলেন মিস নোবল। তাঁর চারিত্রিক দৃঢ়তা, সাহস এবং অনমনীয় ব্যক্তিত্বের জন্যই তাঁকে প্রকৃত সিংহী বলা হয়েছে।

৬. ‘সর্বোপরি তোমার ধমনিতে প্রবাহিত কেল্টিক রক্তের জন্য’—স্বামী বিবেকানন্দ এরূপ বলার কারণ কী?

উত্তর: মিস নোবল ভারতে যে প্রতিকূল পরিবেশে কাজ করতে চেয়েছিলেন, তার জন্য দরকার অনমনীয় দৃঢ়তা, ধৈর্য ও সাহস। স্বামীজির মতে, কেল্টিক জাতির উত্তরসূরি হিসাবে নিবেদিতা তা পারবেন।

৭. ‘তুমি ঠিক সেইরূপ নারী, যাকে আজ প্রয়োজন’—কাকে উদ্দেশ্য করে স্বামী বিবেকানন্দ একথা বলেছেন?

উত্তর: উদ্ধৃত উক্তিটি স্বামী বিবেকানন্দ মিস নোবল তথা নিবেদিতাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন।

৮. ‘তুমি ঠিক সেইরূপ নারী, যাকে আজ প্রয়োজন’—’সেইরূপ’ বলতে কোরূপ বোঝানো হয়েছে?

উত্তর: কুসংস্কার ও অজ্ঞানতায় ভরা ভারতের সামাজিক ক্ষেত্রে কাজ করতে গেলে যে ঐকান্তিকতা, শিক্ষা, পবিত্রতা, অসীম ভালোবাসা ও চারিত্রিক দৃঢ়তার প্রয়োজন, তা নিবেদিতার মধ্যে ছিল।

৯. ‘যাকে আজ প্রয়োজন’—কাকে প্রয়োজন বলে মনে করেছেন বক্তা?

উত্তর: স্বামী বিবেকানন্দ ভারতের নারীসমাজের উন্নতির জন্য মিস নোবল তথা ভগিনী নিবেদিতাকে প্রয়োজন বলে মনে করেছেন।

১০. ‘কিন্তু বিঘ্নও আছে বহু’—কোন বিঘ্নের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: নিবেদিতার ভারতে এসে সামাজিক ক্ষেত্রে উন্নতির পথে অন্তরায় হল কুসংস্কার, জাতিভেদ ও অস্পৃশ্যতা।

১১. ‘তারা শ্বেতাঙ্গদের এড়িয়ে চলে’—’তারা’ বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে এবং কেন তারা এড়িয়ে চলে?

উত্তর: ‘তারা’ বলতে নিরক্ষর ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন ভারতীয়দের বোঝানো হয়েছে, যারা শ্বেতাঙ্গদের ভয় ও ঘৃণা করে এড়িয়ে চলে।

১২. ‘প্রত্যেকটি গতিবিধি সন্দেহের চক্ষে দেখবে’—কার গতিবিধির কথা বলা হয়েছে? কারা তা সন্দেহের চোখে দেখবে?

উত্তর: এখানে স্বামীজির প্রিয় শিষ্যা নিবেদিতার গতিবিধির কথা বলা হয়েছে, যা ভারতের সাধারণ মানুষ সন্দেহের চোখে দেখবে।

নবম শ্রেণীর বাংলা
চিঠি রচনার অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

১৩. ‘তা ছাড়া, জলবায়ু অত্যন্ত গ্রীষ্মপ্রধান’—কোথাকার জলবায়ুর কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: এখানে ভারতের গ্রীষ্মপ্রধান জলবায়ুর কথা বলা হয়েছে, যা ইউরোপের তুলনায় ভিন্ন ও কঠিন।

১৪. ‘দক্ষিণাঞ্চলে তো সর্বদাই আগুনের হলকা চলছে’—’দক্ষিণাঞ্চল’ বলতে লেখক কী বুঝিয়েছেন?

উত্তর: দক্ষিণাঞ্চল বলতে স্বামীজি ভারতবর্ষের দক্ষিণের রাজ্যগুলিকে বুঝিয়েছেন, যেখানে প্রচণ্ড গরম পড়ে।

১৫. ‘সেটুকু দিয়ে আমি অবশ্যই তোমায় সাহায্য করব’—কে কাকে কীভাবে সাহায্য করার কথা বলেছেন?

উত্তর: স্বামীজি নিবেদিতাকে বলেছেন যে, ভারতে কাজ করতে গিয়ে যে প্রতিকূলতার সম্মুখীন হবেন, তাতে তিনি সাহায্য করবেন।

১৬. ‘আমাকে আমরণ তোমার পাশেই পাবে’—কে কাকে আমরণ পাশে পাবে?

উত্তর: স্বামীজি নিবেদিতাকে আশ্বস্ত করে বলেছেন যে, তিনি কাজ করতে গিয়ে অসফল হলেও আমরণ তাঁর পাশে থাকবেন।

১৭. ‘আমাকে আমরণ তোমার পাশেই পাবে’—কী ঘটলে বক্তা উদ্দিষ্ট ব্যক্তির পাশে থাকবেন?

উত্তর: যদি নিবেদিতা কাজে বিরক্ত হন, ব্যর্থ হন বা ভারতের জন্য কাজ করতে চান কিংবা না চান, যেকোনো অবস্থাতেই স্বামীজি আমরণ তাঁর পাশে থাকবেন।

নবম শ্রেণীর বাংলা
চিঠি রচনার ৩ মার্কের প্রশ্ন উত্তর

১. “… তাঁর সঙ্গে বনিয়ে চলা অসম্ভব।” — কার সঙ্গে বনিয়ে চলা অসম্ভব এবং কেন?

উত্তর: ভগিনী নিবেদিতাকে লেখা এক চিঠিতে স্বামী বিবেকানন্দ জানিয়েছেন যে, মিস মুলারের সঙ্গে বনিয়ে চলা অসম্ভব।
স্বামী বিবেকানন্দের মতে, মিস মুলার নিজের ভাবনায় একজন চমৎকার মহিলা হলেও, ছোটোবেলা থেকেই তাঁর মনে এই ভুল ধারণা ঢুকে গেছে যে তিনি আজন্ম নেত্রী এবং অর্থের সাহায্যেই দুনিয়াকে বদলে দেওয়া যায়।
তাঁর রুক্ষ মেজাজ এবং অদ্ভুত অস্থিরচিত্ততা তাঁর সকল কাজের উপর প্রভাব ফেলে।
এই আচরণ ও মনোভাবের জন্যই তাঁর সঙ্গে বনিয়ে কাজ করা কঠিন হয়ে ওঠে।

২. “তাঁর মঠাধ্যক্ষাসুলভ সংকল্পটি দুটি কারণে কখনও সফল হবে না” — কার সম্পর্কে এবং কেন এইরূপ মন্তব্য করা হয়েছে?

উত্তর: ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুলাই, ভগিনী নিবেদিতাকে লেখা এক চিঠিতে স্বামী বিবেকানন্দ মিস মুলার সম্পর্কে এই মন্তব্য করেন।
স্বামীজির মতে, মিস মুলার নিজের চিন্তাভাবনায় একজন চমৎকার মহিলা এবং তাঁর মধ্যে মঠাধ্যক্ষাসুলভ মানসিকতা বা নেতৃত্বের ভাবও রয়েছে।
তবে তাঁর চরিত্রে দুটি গুরুতর ত্রুটি রয়েছে—
(১) তাঁর মেজাজ অত্যন্ত রুক্ষ এবং
(২) তাঁর চিত্তের স্থিরতা নেই, অর্থাৎ তিনি অস্থিরচিত্ত।
এই দুটি দুর্বলতার কারণে তাঁর কোনো মহৎ সংকল্প সফল হওয়া সম্ভব নয় বলে স্বামীজি মনে করেন।

৩. এই আমার প্রতিজ্ঞা।’—উদ্ধৃতাংশের উৎস লিখে বস্তার প্রতিজ্ঞার বিষয়টি লেখো।

উত্তর: উদ্ধৃতাংশ ‘এই আমার প্রতিজ্ঞা’ ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুলাই আলমোড়া থেকে স্বামী বিবেকানন্দ কর্তৃক মিস মার্গারেট এলিজাবেথ নোব্‌ল্ (ভবিষ্যতের ভগিনী নিবেদিতা)-কে লেখা একটি পত্র থেকে নেওয়া হয়েছে।

স্বামী বিবেকানন্দ এই চিঠিতে জানিয়েছিলেন, ভারতীয় নারীসমাজের উন্নয়নের উদ্দেশ্যে মিস নোব্‌ল্ যদি ভারতবর্ষে এসে কাজ করতে চান, তবে তাঁকে নানা বাধা-বিপত্তি ও প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। তা সত্ত্বেও যদি তিনি কাজে বিরক্ত বা ব্যর্থ হন, তবুও স্বামীজি তাঁর পাশে থাকবেন এবং যথাসাধ্য সাহায্য করবেন। তিনি তাঁর সাহায্যের হাত কখনোই মিস নোব্‌লের মাথা থেকে সরিয়ে নেবেন না—এই প্রতিশ্রুতি ও অটল সহযাত্রার সংকল্পই ছিল স্বামী বিবেকানন্দের প্রতিজ্ঞা।

৪. ‘তুমি ঠিক সেইরূপ নারী, যাকে আজ প্রয়োজন।’—লেখক এখানে কার প্রতি ইঙ্গিত করেছেন? তাঁকে আজ প্রয়োজন কেন?

উত্তর: উক্তিটি স্বামী বিবেকানন্দ লিখেছেন। এখানে তিনি তাঁর শিষ্যা মিস মার্গারেট নোব্‌ল্—অর্থাৎ ভগিনী নিবেদিতা-র প্রতি ইঙ্গিত করেছেন।

স্বামী বিবেকানন্দ অনুভব করেছিলেন, তৎকালীন ভারতীয় নারীসমাজ অশিক্ষা, কুসংস্কার ও আত্মঅবিশ্বাসে আচ্ছন্ন। তাদের মধ্যে ছিল না শিক্ষা, আত্মনির্ভরতা বা ব্যক্তিস্বাধীনতার বোধ। এই পরিস্থিতিতে এমন একজন শিক্ষিতা, সাহসিনী, দৃঢ়সংকল্প মহিলা দরকার, যিনি হৃদয়ে ভারতবর্ষের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রাখবেন এবং সমাজে নারীদের জাগরণের অগ্রদূত হয়ে উঠবেন।

ভগিনী নিবেদিতার মধ্যে তিনি সেই গুণাবলি খুঁজে পেয়েছিলেন—শিক্ষা, নিষ্ঠা, আত্মোৎসর্গ, ভারতের প্রতি ভালোবাসা এবং স্বাধীনতাপ্রিয় কেল্টিক রক্তের জোয়ার। তাই স্বামীজি উপলব্ধি করেছিলেন, নিবেদিতার মতো একজন নারীরই এই কাজে প্রয়োজন, এবং সে কারণেই তিনি এই কথা বলেন: ‘তুমি ঠিক সেইরূপ নারী, যাকে আজ প্রয়োজন।’

৫. ‘ভারতের কাজে তোমার এক বিরাট ভবিষ্যৎ রয়েছে;’—কে, কাকে, কোন্ কাজের কথা বলেছেন?

উত্তর: এই উক্তিটি স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর শিষ্যা মিস মার্গারেট নোব্‌ল্ (ভগিনী নিবেদিতা)-কে উদ্দেশ্য করে একটি চিঠিতে লিখেছেন।
স্বামীজি উপলব্ধি করেছিলেন যে, ভারতের নারীসমাজ বহুদিন ধরে অশিক্ষা, কুসংস্কার ও অজ্ঞানতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ। ফলে নারীদের ব্যক্তিত্ব ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এই সমাজকে মুক্ত করতে, শিক্ষিত ও আত্মনির্ভর করে গড়ে তুলতে প্রয়োজন একজন উৎসর্গিত, সাহসী ও শিক্ষিতা নারী।
স্বামীজি বিশ্বাস করতেন, মিস নোব্‌ল্‌-এর মধ্যে সেই যোগ্যতা ও আদর্শ আছে। তাই তিনি বলেন, ভারতের নারীসমাজের উন্নয়ন ও জাগরণের জন্য নিবেদিতার হাতে রয়েছে এক ‘বিরাট ভবিষ্যৎ’।

নবম শ্রেণীর বাংলা
চিঠি রচনার ৫ মার্কের প্রশ্ন উত্তর

১. ‘চিঠি’ রচনায় স্বামী বিবেকানন্দের মিস মুলার ও মিসেস সেভিয়ারের পরিচয় দিয়ে তাঁদের সম্পর্কে তাঁর যে মনোভাব ফুটে উঠেছে, তা লেখো।

উত্তর: ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুলাই, আলমোড়া থেকে মিস মার্গারেট নোব্‌ল্‌-এর উদ্দেশে স্বামী বিবেকানন্দ যে চিঠি লেখেন, তাতে তিনি মিস হেনরিয়েটা মুলার ও মিসেস সেভিয়ারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন।

মিস মুলার:

মিস হেনরিয়েটা মুলার ছিলেন একজন ধনী ও সহৃদয়া ইংরেজ মহিলা। ইউরোপ সফরের সময় স্বামীজি তাঁর আতিথ্য গ্রহণ করেছিলেন। বেলুড় মঠ নির্মাণে অর্থসাহায্য প্রদান করে তিনি স্বামীজির কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। স্বামীজি তাঁর দানশীলতা ও সহৃদয়তার প্রশংসা করলেও বলেন, মিস মুলারের মধ্যে টাকা দিয়ে সব কিছু পরিবর্তন করার মানসিকতা ছিল। তাঁর রুক্ষ ও অস্থির স্বভাবও স্বামীজির চোখে ত্রুটিপূর্ণ মনে হয়েছিল। তাই তাঁর সম্পর্কে স্বামীজির মনোভাব ছিল মিশ্র।

মিসেস সেভিয়ার:

মিসেস সেভিয়ার ছিলেন ক্যাপটেন জে.এইচ. সেভিয়ারের স্ত্রী এবং স্বামী বিবেকানন্দের প্রখ্যাত শিষ্যা। তিনি বেদান্ত প্রচার ও সেবার কাজে নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। তাঁর অনুপ্রেরণায় মায়াবতী অদ্বৈত আশ্রম প্রতিষ্ঠিত হয়। রামকৃষ্ণ সংঘে তিনি ‘মাদার’ নামে পরিচিত ছিলেন। স্বামীজি তাঁকে ‘নারীকুলের রত্ন’ বলে অভিহিত করেন এবং বলেন, সেভিয়াররাই একমাত্র ইংরেজ, যারা ভারতীয়দের প্রতি মুরুব্বিয়ানা করেন না। মিসেস সেভিয়ারের প্রতি স্বামীজির মনোভাব ছিল গভীর শ্রদ্ধায় পূর্ণ ও স্নেহসিক্ত।

২. মরদ কি বাত হাতি কা দাঁত।’—বক্তা কে? কাকে, কোন্ প্রসঙ্গে এই উক্তি করেছেন? উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: এই উক্তিটি বলেছেন স্বামী বিবেকানন্দ।
তিনি এটি বলেছেন তাঁর প্রিয় শিষ্যা মিস মার্গারেট নোব্‌ল্ (ভবিষ্যতের ভগিনী নিবেদিতা)-কে উদ্দেশ্য করে।
স্বামী বিবেকানন্দ ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুলাই আলমোড়া থেকে মিস নোব্‌ল্‌কে লেখা একটি চিঠিতে এই উক্তি করেন। তিনি চিঠিতে ভারতীয় নারীসমাজের অবস্থা তুলে ধরেন—যেখানে নারীরা অশিক্ষা, কুসংস্কার ও অবহেলার শিকার। স্বামীজি বিশ্বাস করতেন, মিস নোব্‌ল্‌ এই নারীসমাজের মুক্তির জন্য আলোর দিশা দেখাতে পারবেন।

কিন্তু এই কাজে তিনি নানা বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হবেন—সেই সতর্কতা স্বামীজি যেমন দিয়েছিলেন, তেমনি মিস নোব্‌ল্‌কে সাহস জোগাতে এবং তাঁর প্রতি নিজের অটল সমর্থনের কথা জানাতেও এই উক্তি করেন।
‘মরদ কি বাত হাতি কা দাঁত’—এই উর্দু প্রবাদটির অর্থ:
একজন সত্যিকারের পুরুষের কথা বা প্রতিজ্ঞা হাতির দাঁতের মতো, যা একবার মুখের বাইরে বেরিয়ে এলে আর ভিতরে ফেরে না। অর্থাৎ, যেমন হাতির দাঁত বের হলে আর ঢোকে না, তেমনই একজন প্রকৃত পুরুষ তাঁর দেওয়া প্রতিশ্রুতি থেকে কখনো পিছিয়ে আসেন না।

এই কথার মাধ্যমে স্বামীজি বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি মিস নোব্‌ল্‌-এর প্রতি যে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন—তা তিনি কোনো অবস্থাতেই ভাঙবেন না। মিস নোব্‌ল্‌ কর্মক্ষেত্রে সফল হোন বা ব্যর্থ, ভারতবর্ষের জন্য কাজ করুন বা না করুন—স্বামীজি তাঁর পাশে থাকবেন এবং সহযোগিতা করে যাবেন—এই ছিল তাঁর অটল প্রতিজ্ঞা।

৩. স্বামী বিবেকানন্দ লিখিত পাঠ্য চিঠির বিষয়বস্তু আলোচনা কর।

উত্তর: ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুলাই আলমোড়া থেকে স্বামী বিবেকানন্দ যে চিঠিটি লেখেন, তা তাঁর ইংরেজ শিষ্যা মিস মার্গারেট নোব্‌ল্‌—অর্থাৎ ভগিনী নিবেদিতা-কে উদ্দেশ্য করে লেখা। এই চিঠির মূল বিষয়বস্তু হল ভারতীয় নারীসমাজের উন্নয়নে নিবেদিতার ভূমিকা, তার প্রয়োজনীয়তা, সম্ভাব্য বাধাবিপত্তি, এবং স্বামীজির নিজের প্রতিশ্রুতি ও মনোভাব।

চিঠিতে স্বামীজি লেখেন, মি. স্টার্ডির চিঠি থেকে তিনি জানতে পেরেছেন যে মিস নোব্‌ল্‌ ভারত এসে দেশের বাস্তব পরিস্থিতি চাক্ষুষ করে কাজ করার দৃঢ়সংকল্প গ্রহণ করেছেন। আবার মিস মুলারের কাছ থেকেও তিনি নিবেদিতার চিন্তাধারা ও কর্মপ্রবণতা সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন। তবে স্বামীজি মনে করেন, ভারতের সামাজিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক পরিবেশ ইউরোপ-আমেরিকার থেকে একেবারেই আলাদা। এখানকার কুসংস্কার, অস্পৃশ্যতা, জাতিভেদ, ঔপনিবেশিক শাসনের অহংকার, চরম দারিদ্র্য ও উষ্ণ আবহাওয়া—সব মিলিয়ে এক জটিল বাস্তবতা। এই পরিবেশে বিদেশিনী হিসাবে কাজ করতে হলে নিবেদিতাকে অশেষ বাধা অতিক্রম করতে হবে।

তবে এই প্রতিকূলতার মধ্যেও স্বামীজি বিশ্বাস করেন, নিবেদিতার শিক্ষা, নিষ্ঠা, আত্মত্যাগের মনোভাব, ভারতবর্ষের প্রতি শ্রদ্ধা ও তাঁর কেল্টিক রক্তের দৃঢ়তা—এই সব মিলিয়ে ভারতীয় নারীসমাজের কল্যাণে তিনি বড় ভূমিকা রাখতে পারবেন। তাই তিনি লেখেন, “ভারতের কাজে তোমার এক বিরাট ভবিষ্যৎ রয়েছে।”
চিঠিতে স্বামীজি তাঁকে সতর্ক করলেও একই সঙ্গে সাহস ও উৎসাহ দিয়েছেন। তিনি বলেন, কর্মক্ষেত্রে ব্যর্থ হলেও তিনি আমরণ নিবেদিতার পাশে থাকবেন। স্বামীজি এক জায়গায় লেখেন, “মরদ কি বাত হাতি কা দাঁত”—অর্থাৎ, প্রকৃত পুরুষের কথা কখনও ফেরে না।

এছাড়াও, চিঠিতে তিনি মিস মুলার ও মিসেস সেভিয়ারের চরিত্র, মনোভাব ও কার্যপদ্ধতির তুলনামূলক বিশ্লেষণও করেছেন। মিস মুলারের মধ্যে কিছু সীমাবদ্ধতা থাকলেও তিনি সহৃদয়া। অন্যদিকে, মিসেস সেভিয়ার সম্পর্কে স্বামীজির মনোভাব ছিল শ্রদ্ধায় পূর্ণ—তাঁকে তিনি ‘নারীকুলের রত্ন’ বলেও অভিহিত করেন।

৪. “মনে হচ্ছে, সরাসরি তোমাকে লেখা ভালো।”—সরাসরি লেখা ভালো কেন? লেখক সরাসরি কী লিখেছিলেন?

উত্তর: এই উক্তিটি স্বামী বিবেকানন্দ ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুলাই আলমোড়া থেকে মিস মার্গারেট নোব্‌ল্‌-কে লেখা একটি চিঠিতে ব্যবহার করেন।
স্বামীজি জানতে পারেন যে মিস নোব্‌ল্‌ ভারতে এসে কাজ করতে দৃঢ়সংকল্প। মিস মুলারের কাছ থেকে তাঁর কর্মপ্রণালী ও চিন্তাভাবনার কিছু দিকও জানতে পারেন তিনি। সেই কারণে স্বামীজি মনে করেন, মিস নোব্‌ল্‌কে সরাসরি ভারতের বাস্তব পরিস্থিতি ও সম্ভাব্য সমস্যাগুলি জানানো উচিত—যাতে ভবিষ্যতে কোনো অসুবিধার মুখোমুখি হলে তিনি প্রস্তুত থাকেন এবং নিরাশ না হন।

স্বামীজি মিস নোব্‌ল্‌-কে সরাসরি বলেন যে ভারতীয় নারীসমাজের উন্নয়নের জন্য তাঁর মতো নারীর প্রয়োজন। তিনি তাঁর শিক্ষা, কাজের প্রতি নিষ্ঠা, ভারতপ্রেম এবং স্বাধীনচেতা কেল্টিক মনোভাবের প্রশংসা করেন। তবে তিনি সতর্ক করেন যে, ভারতে ইউরোপিয়ানদের অনেকেই ঘৃণার চোখে দেখে, কুসংস্কার ও অজ্ঞতা প্রচুর, এবং এখানকার গ্রীষ্মপ্রধান আবহাওয়া তাঁর জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে। এই সব প্রতিকূলতার কথাও স্বামীজি অকপটে উল্লেখ করেন।

৫. চিঠি রচনার আলোকে স্বামী বিবেকানন্দের স্বদেশভাবনার পরিচয় দাও।

উত্তর: স্বামী বিবেকানন্দ ছিলেন একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক ও মানবপ্রেমী সাধক। তিনি আমৃত্যু তাঁর কর্ম ও চিন্তাধারার মাধ্যমে ভারতবর্ষের সামাজিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য চেষ্টা করেছিলেন। আলোচ্য দুটি চিঠি—একটি তাঁর শিষ্যা মিম লোবেলকে এবং অন্যটি ভগিনী নিবেদিতাকে—তাঁর গভীর স্বদেশপ্রেমের উজ্জ্বল দলিল।

এই চিঠিগুলির মূল উদ্দেশ্য ভিন্ন হলেও এর মধ্যে স্বামীজির স্বদেশচিন্তা ও ভারতবাসীদের প্রতি আন্তরিক মমত্ববোধ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তিনি বিশেষভাবে ভারতের পিছিয়ে পড়া নারী সমাজের উন্নয়ন নিয়ে ভাবিত ছিলেন। তিনি মনে করতেন, একজন সত্যিকারের “সিংহী” নারীর মধ্যে থাকতে হবে শিক্ষা, একাগ্রতা, সহানুভূতি, আত্মবিশ্বাস ও অকুণ্ঠ ভালোবাসা। মিম লোবেলের কাছে তিনি এই ধরনের একজন আদর্শ নারী হয়ে ভারতীয় নারীদের জাগিয়ে তোলার আহ্বান জানান।

চিঠিতে তিনি ভারতের মানুষের দারিদ্র্য, কুসংস্কার, ছোঁয়াছুঁয়ি, জাতিভেদ, সামাজিক অবিচার ইত্যাদি সমস্যাগুলি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি দেশকে ভালো-মন্দ মিলিয়ে পুরোপুরি গ্রহণ করেছেন এবং তার উন্নতির জন্য বিদেশি অনুগামীদের সাহায্য কামনা করেছেন।

এইভাবে স্বামী বিবেকানন্দের চিঠিগুলি শুধু ব্যক্তিগত বার্তা নয়, বরং তাঁর স্বদেশচেতনা, দেশপ্রেম, ও দেশের প্রতি দায়বদ্ধতারই উজ্জ্বল পরিচায়ক।

আরও দেখো: আকাশে সাতটি তারা প্রশ্ন উত্তর

নবম শ্রেণীর বাংলা চিঠি রচনার প্রশ্ন উত্তর

CLOSE

You cannot copy content of this page