আমাজনের জঙ্গলে প্রশ্ন উত্তর অমরেন্দ্র চক্রবর্ত/ চতুর্থ শ্রেণী বাংলা ( পাতাবাহার )

এখানে আমাজনের জঙ্গলে প্রশ্ন উত্তর / চতুর্থ শ্রেণী বাংলা / Class 4 Bengali Questions Answers Amajoner Jongole / ক্লাস 4 পাতাবাহার বই থেকে প্রশ্ন উত্তর। আমাজনের জঙ্গলে অমরেন্দ্র চক্রবর্তী

‘আমাজনের জঙ্গলে’ সারমর্ম:

এই গল্পে একজন কিশোরের দৃষ্টিভঙ্গিতে আমাজনের জঙ্গলের এক অনন্য অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয়েছে। সে একদিন তার সঙ্গী উবা-র সঙ্গে নৌকোয় ঘুরতে গিয়ে ‘বোতো’ নামের এক গোলাপি জলচর প্রাণীকে দেখতে পায়, যাকে স্থানীয়রা আমাজনের রক্ষাকর্তা ও সৌভাগ্যের প্রতীক বলে মানে।

বোতোকে দেখে সে আশায় বুক বাঁধে—সে যেন তার মা-বাবা ও বন্ধুদের কাছে ফিরে যেতে পারে।

এই গল্পে উবা নামের এক আদিবাসী চরিত্র গুরুত্বপূর্ণ। সে খুব কম কথা বলে, কিন্তু গভীরভাবে অনুভব করে। সে ছেলেটির চোখ দেখে বুঝতে চায় তার জগতের কথা। কাঠকুটো দিয়ে ছবি এঁকে সে জিজ্ঞাসা করে—ছেলেটির শহর কেমন।

ছেলেটি কলকাতার ছবি এঁকে বুঝিয়ে বলে তার জীবনযাত্রা। কিন্তু উবা ভাবে,
“কলকাতায় জঙ্গল নেই, পাখি নেই, নদী নেই—তাহলে ওরা বাঁচে কী করে?”

শেষে উবা ছেলেটির হাত ধরে চুপচাপ ভাবে বলে—
“তুমি আর ওই দেশে ফিরে যেও না।”

এই গল্পে প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক, শহর বনাম জঙ্গলজীবনের দ্বন্দ্ব এবং নিঃশব্দে গড়ে ওঠা এক মানবিক সম্পর্ক স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

লেখক পরিচিতি: অমরেন্দ্র চক্রবর্তী –

অমরেন্দ্র চক্রবর্তী (জন্ম ১৯৪১) একজন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী সাহিত্যিক। তিনি কেবল কবি নন, ছিলেন পর্যটক, পত্রিকা সম্পাদক, আলোকচিত্রী ও তথ্যচিত্র নির্মাতা। তবে তিনি সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিক হিসেবে। তিনি বহু দেশ ভ্রমণ করেছেন এবং তাঁর লেখা বহু ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে শাদ্য ঘোড়া, আমাজনের জন্মালে, হীরু ডাকাত, গৌর যাযাবর, টিয়াগ্রামের ফিতে নদী। তিনি কালের কষ্টিপাথর, ছেলেবেলা, ভ্রমণ, কর্মক্ষেত্র পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন।

চতুর্থ শ্রেণী
বাংলা (পাতাবাহার)
আমাজনের জঙ্গলে হাতে-কলমে প্রশ্ন ও উত্তর (অমরেন্দ্র চক্রবর্তী)

১. নীচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:

১.১ অমরেন্দ্র চক্রবর্তীর লেখা দুটি বইয়ের নাম লেখো।

উত্তর: শাদা ঘোড়া, হীরু ডাকাত।

১.২ ভ্রমণ পত্রিকা ছাড়াও তিনি আর কোন পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন?

উত্তর: ছেলেবেলা, কর্মক্ষেত্র পত্রিকার।

২. ঠিক উত্তরের তলায় দাগ দাও:

২.১ লেখক গল্পটিতে যে জায়গার উল্লেখ করেছেন সেটি হলো- (ইউক্রেন / আমাজন / সুন্দরবন)

উত্তর: আমাজন।

২.২ আমাদের একেবারে (পিছনের / সামনের পাশের) নৌকা থেকে ভারি সুরেলা বাজনা ভেসে আসছিল।

উত্তর: সামনের।

২.৩ কোনো একটা নৌকা থেকে বোতোর দেখা পাওয়ার (মিনিট দুয়েকের / মিনিট সাতেকের / মিনিট দশেকের) মধ্যেই সব নৌকায় সেই সুখবর ছড়িয়ে যায়।

উত্তর: মিনিট দুয়েকের।

২.৪ (উবা / বোতো / টোবো) আমার চোখের দৃষ্টি দেখে বুঝতে চায় আমি কে?

উত্তর: উবা।

২.৫ উবা (চকখড়ি / লতাপাতা / কাঠকুটো) দিয়ে ছবি আঁকায় ভারি ওস্তাদ।

উত্তর: কাঠকুটো।

৩. ‘গান বাজনা’ শব্দটির প্রথম অংশ ‘গান’ এবং দ্বিতীয় অংশ ‘বাজনা’ পরস্পরের পরিপূরক। নীচের শব্দগুলির পরে তাদের সমার্থক বা প্রায় সমার্থক অন্য শব্দ জুড়ে নতুন শব্দজোড় তৈরি করো:
লোক, রোগ, ভাবনা, ডাক্তার, আশা, হাঁক, কাঠ, ধন

উত্তর: লোকজন,
রোগব্যাধি,
ভাবনাচিন্তা,
ডাক্তারবৈদ্য,
আশাভরসা,
হাঁকডাক,
কাঠকুটো,
ধনসম্পত্তি

৪. নীচে কিছু কর্তা, কর্ম ও ক্রিয়া ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। কর্তার সাথে কর্ম ও ক্রিয়াকে মিলিয়ে ৫টি বাক্য লেখো।

উত্তর:
আমি প্রার্থনা করলাম।
উবা স্কুলে যাচ্ছে।
বোতো পাখি দেখছে।
সে ছবি আঁকছিল।
ছেলেমেয়েরা আকাশে দেখো।

৫. নীচের শব্দগুলি দিয়ে বাক্যরচনা করো।

উত্তর:
ধীরে ধীরে = বয়স্ক ব্যক্তিটি ধীরে ধীরে হাঁটছেন।

বসে বসে = বসে বসে কাজ করতে রুম্পার একদম পছন্দ নয়।

আগে আগে = দলের সর্দার আগে আগে হেঁটে চলেছেন।

হেঁটে হেঁটে = স্কুল শেষে সকলে হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফিরি।

জেগে জেগে = রাহুল রাত জেগে জেগে পড়াশোনা করে।

৬. গল্পের ঘটনা অনুযায়ী নীচের বাক্যগুলি পরপর সাজিয়ে লেখো।

৬.১ বোতোকে দেখা গেছে।

৬.২ বোতোকে দেখার জন্য আমি ব্যাকুল হয়ে পড়েছিলাম।

৬.৩ বোতো মনের ভেতরের সুরে তালে ছন্দে নেচে বেড়াচ্ছে।

৬.৪ একটা নৌকায় গানবাজনা থেমে গেলে বাকিরা যারা যত আগে খেয়াল করবে তারা তত আগে তাদের নৌকার বাজনা থামাবে।

৬.৫ সামনের নৌকা থেকে সুরেলা বাজনা ভেসে আসছিল।

উত্তর:
৬.৫ সামনের নৌকা থেকে সুরেলা বাজনা ভেসে আসছিল।

৬.১ বোতোকে দেখা গেছে।

৬.৪ একটা নৌকায় গানবাজনা থেমে গেলে বাকিরা যারা যত আগে খেয়াল করবে তারা তত আগে তাদের নৌকার বাজনা থামাবে।

৬.২ বোতোকে দেখার জন্য আমি ব্যাকুল হয়ে পড়েছিলাম।

৬.৩ বোতো মনের ভেতরের সুরে তালে ছন্দে নেচে বেড়াচ্ছে।

চতুর্থ শ্রেণী
বাংলা (পাতাবাহার)
আমাজনের জঙ্গলে হাতে-কলমে প্রশ্ন ও উত্তর (অমরেন্দ্র চক্রবর্তী)

৭. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাও।

৭.১ লেখক কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলেন?

উত্তর: লেখক আমাজনের জঙ্গলে হারিয়ে গিয়েছিলেন।

৭.২ লেখক কাকে বন্ধু হিসেবে পেয়েছিলেন?

উত্তর: লেখক উবাকে তাঁর বন্ধু হিসেবে পেয়েছিলেন।

৭.৩ জলের দেবতা বলে কাকে আমাজনের বাসিন্দারা মানে?

উত্তর: আমাজনবাসীরা বোতোকে জলের দেবতা বলে মানে।

৭.৪ উবা কোন্ শহরকে ‘বালির দেশ’ বলে বুঝিয়েছিল?

উত্তর: উবা কলকাতা শহরকে ‘বালির দেশ’ বলে বুঝিয়েছিল।

৭.৫ বালির দেশ-কথাটির অর্থ কী?

উত্তর: বালির দেশ কথাটির অর্থ মরুভূমি

৮. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো।
৮.১ কাকাদের সঙ্গে না থাকাকে পাঠ্যাংশের আগন্তুক ছেলেটি সৌভাগ্যজনক মনে করেছে কেন?

উত্তর: কাকারা সঙ্গে থাকলে তার আমাজনের সুন্দর জঙ্গলে নদী, চাঁদ ও মানুষজনকে দেখা হত না। তাই কাদের সঙ্গে না থাকাকে আগন্তুক ছেলেটির সৌভাগ্যজনক মনে হয়েছে।

৮.২ কোন উৎসবের কথা পাঠ্যাংশে রয়েছে? কীভাবেই বা সে প্রসঙ্গ উপস্থাপিত হয়েছে?

উত্তর: আলোচ্য পাঠ্যাংশে নৌকো উৎসবের কথা রয়েছে।

আমাজনের দেবতা বোতো জলের নীচে ভেসে বেড়াচ্ছে বলে উবা তার বন্ধু অর্থাৎ কাহিনির কথককে জানিয়েছিল। বোতো এসেছে জেনেই নৌকার গানবাজনা থেমে যায়। এই প্রসঙ্গেই নৌকা উৎসবের কথা উত্থাপিত হয়েছে।

৮.৩ ‘বোতো সম্পর্কে আমাজন অঞ্চলে প্রচলিত বিশ্বাসটি কী? তার সম্বন্ধে সকলে কী কল্পনা করে?

উত্তর: বোতো সম্পর্কে আমাজন অঞ্চলে প্রচলিত বিশ্বাসটি হল বোতোর দেখা পাওয়া মানে তা অন্যন্ত শুভ।
তার সম্বন্ধে সকলের কল্পনা এই বোতোই আমাজনের বিপদে আপদে মানুষকে রক্ষা করে।

৮.৪ গল্প কথকের চোখে দেখা বোতোর শারীরিক গঠনের পরিচয় দাও। তাকে দেখে আগন্তুক ছেলেটির কেমন লাগলো?

উত্তর: গল্পকথকের চোখে বোতো খুব লম্বা আকৃতির জলজ প্রাণী। তার নাক বা ঠোঁট খুব সরু, লম্বায় সে এক-দেড় হাত। বোতোর মাথা মস্ত বড়ো এবং মস্তিষ্কও মানুষের মস্তিষ্কের চাইতে বড়ো। আর-পাঁচটা মাছের মতো এর লেজ দু-দিকে ভাগ হয়ে গেছে। বোতোর গায়ের রং গোলাপি-ঘেঁষা।

তাকে দেখে আগন্তুক ছেলেটি বিস্মিত হয় এবং বিপদ থেকে মুক্তি পেতে মনে মনে তার কাছে প্রার্থনা করে।

৮.৫ যে রাতের ছবি পাঠ্যাংশে রয়েছে তার বিশেষত্ব কী?

উত্তর: যে রাতের ছবি পাঠ্যাংশে আছে তা ছিল পূর্ণিমার রাত্রি। আর সেদিন ছিল নৌকা উৎসব। সেখানকার অধিবাসীরা সারারাত ধরে উৎসবে মেতেছিল।

৮.৬ বোতোর কাছে আগন্তুক ছেলেটির নীরব প্রার্থনাটি কী ছিল?

উত্তর: আমাজনের রক্ষাকর্তা বোতোর কাছে আগন্তুক ছেলেটির নীরব প্রার্থনা ছিল তিনি যেন ছেলেটিকে তার মা বাবা আর স্কুলের বন্ধুদের কাছে ফিরে যাবার ব্যবস্থা করে দেন।

৮.৭ ছবি এঁকে আগন্তুক ছেলেটি উবাকে কী বোঝাতে চেয়েছিল?

উত্তর: আগন্তুক ছেলেটি ছবি এঁকে উবাকে বোঝাতে চেয়েছিলেন তার নিজের কথা, তার বাবা মায়ের কথা, স্কুলের বন্ধুদের কথা, তার শহর ঘরবাড়ি দোকান বাজারের কথা।

৮.৮ উবার কলকাতা সম্বন্ধে কী ধারণা হল?

উত্তর: উবা আগন্তুক ছেলেটির কাছ থেকে যখন জানতে পারল কলকাতায় জঙ্গল, পাখি, প্রজাপতি, নদনদী নেই, তখন তার ধারণা হয়েছিল কলকাতা হল বালির দেশ।

৮.৯ কলকাতা সম্পর্কে ‘উবা’র ধারণাকে বদলে দিতে তুমি কী কী করতে চাও, লেখো।

উত্তর: কলকাতায় সবুজ গাছপালা ও ফাঁকা জমির অভাব রয়েছে। আমি চাই, আমার পরিচিতদের সঙ্গে নিয়ে শহরে বেশি করে গাছ লাগাতে। জলাভূমি ভরাটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করব, গাছ কাটা বন্ধের জন্য সচেতনতা গড়ব। এভাবে শহরকে সবুজ করে তুললে ‘উবা’র চোখে কলকাতা আর ‘বালির দেশ’ না থেকে হয়ে উঠবে এক ‘সবুজ শহর’।

৮.১০ কলকাতার আকর্ষণ ছাড়িয়ে দিতে ‘উবা’ যে জগতে আগন্তুক ছেলেটিকে আহ্বান জানিয়েছিল তার বর্ণনা দাও।

উত্তর: ‘উবা’ ছেলেটিকে এমন এক দেশের কথা জানায়, যেখানে নেই ধুলো, কাদা, বালি কিংবা ধোঁয়া। সেই দেশ ভরা সবুজ গাছপালা, ফুল, ফল ও প্রজাপতিতে। সেখানে দূষণ নেই, চারপাশে নির্মল বাতাস ও স্বচ্ছ জল প্রবাহিত হয়। সেদেশের মানুষজন শান্তিপূর্ণ ও সুস্থভাবে জীবনযাপন করে। প্রকৃতির সঙ্গে মিশে থাকা এই স্বপ্নের দেশেই সে আগন্তুক ছেলেটিকে আহ্বান জানায়।

৯. ঘটনার পাশাপাশি কারণ উল্লেখ করো।

ঘটনা ১: সামনের নৌকো থেকে ভারি সুরেলা বাজনা ভেসে আসছিল।

কারণ: নদীতে থাকা নৌকাগুলিতে ‘নৌকো উৎসব’ অনুষ্ঠিত হচ্ছিল।

ঘটনা ২: উবার ফিশফিশ গলায় শুনতে পেলাম— “বোতো! বোতো!”

কারণ: জলের তলায় বোতোকে ভেসে বেড়াতে দেখা যাচ্ছিল।

ঘটনা ৩: সকলেই গানবাজনা থামিয়ে যতটা সম্ভব নিঃশব্দে চারদিক থেকে গোল হয়ে প্রথম নৌকোটার কাছে ফিরে আসতে থাকে।

কারণ: বোতোর আসবার সুসংবাদ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

ঘটনা ৪: জঙ্গলে ঘুরতে ঘুরতে উবা একেকদিন হঠাৎই হাঁটু গেড়ে মাটিতে বসে পড়ে।

কারণ: উবা তার আগন্তুক বন্ধুটিকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে চায়।

ঘটনা ৫: আরও কয়েকটি ছবি এঁকে যতটা সম্ভব স্কুলের বিষয়ে বললাম।

কারণ: গল্পের কথক তার ভাষা না-জানা, আমাজনের জঙ্গলে দেখা হওয়া বন্ধুকে স্কুলে যাওয়ার ঘটনাটি বোঝাতে চেয়েছিল।

চতুর্থ শ্রেণী
বাংলা (পাতাবাহার)
আমাজনের জঙ্গলে অতিরিক্ত MCQ প্রশ্ন ও উত্তর (অমরেন্দ্র চক্রবর্তী)

১. উবার চোখে ‘কলকাতা’ কেমন এক জায়গা?
A. রঙিন শহর
B. শিল্পনগরী
C. বালির দেশ
D. নদীজঙ্গলে ভরা

উত্তর: C. বালির দেশ

২. ‘বোতো’ কী?
A. এক ধরণের মাছ
B. আমাজনের রক্ষাকর্তা
C. নদীর নাম
D. উবার সখা

উত্তর: B. আমাজনের রক্ষাকর্তা

৩. গল্পকার কোথায় বেড়াতে গিয়েছিল?
A. আন্দিজ পর্বত
B. আমাজনের জঙ্গল
C. নাইল নদী
D. আফ্রিকার মরুভূমি

উত্তর: B. আমাজনের জঙ্গল

৪. বোতোর গায়ের রং কেমন?
A. কালো
B. সাদা
C. গোলাপি
D. সবুজ

উত্তর: C. গোলাপি

৫. উবা কী দিয়ে ছবি আঁকে?
A. কাঁচ
B. পাথর
C. কাঠকুটো
D. কলম

উত্তর: C. কাঠকুটো

৬. উবা যখন ছেলেটির চোখে তাকায়, তখন সে কী বোঝার চেষ্টা করে?
A. সে কাঁদছে কিনা
B. সে মানুষ কিনা
C. তার চোখের রং
D. সে কোথা থেকে এসেছে

উত্তর: D. সে কোথা থেকে এসেছে

৭. বোতোর দেখা পাওয়া কিসের প্রতীক?
A. বিপদের ইঙ্গিত
B. সৌভাগ্যের লক্ষণ
C. যুদ্ধের সংকেত
D. খারাপ আবহাওয়ার পূর্বাভাস

উত্তর: B. সৌভাগ্যের লক্ষণ

৮. ছেলেটি বোতোকে কীভাবে দেখতে পায়?
A. আকাশে
B. জলের নিচে
C. পাহাড়ে
D. নৌকায়

উত্তর: B. জলের নিচে

৯. উবার মতে, কলকাতায় কী নেই?
A. ফুল ও নদী
B. গাড়ি ও ঘর
C. মানুষ ও দোকান
D. স্কুল ও রাস্তা

উত্তর: A. ফুল ও নদী

১০. গল্পের শেষাংশে উবা ছেলেটিকে কী বলে?
A. ফিরে যেও না
B. ফিরে যাও
C. এখান থেকে চলে যাও
D. তোমার বন্ধুদের খোঁজ করো

উত্তর: A. ফিরে যেও না

১১. ছেলেটি উবাকে কী বোঝাতে চেষ্টা করে?
A. বোতো সম্পর্কে
B. তার নিজের দেশের কথা
C. তার প্রিয় খাবার
D. তার পোষা প্রাণী

উত্তর: B. তার নিজের দেশের কথা

১২. উবা কী দেখে বোঝে যে বোতোকে দেখা গেছে?
A. নদীর জল ঘোলা হয়
B. নৌকোর গান থেমে যায়
C. আকাশে তারা ওঠে
D. বাতাসের শব্দ হয়

উত্তর: B. নৌকোর গান থেমে যায়

১৩. ছেলেটির চোখে বোতোর গতি কেমন ছিল?
A. দ্রুত ও তীব্র
B. ধীরে ধীরে ঘুরে বেড়ায়
C. স্থির হয়ে থাকে
D. নদীর তীরে চলে যায়

উত্তর: B. ধীরে ধীরে ঘুরে বেড়ায়

১৪. উবা কলকাতার স্কুলের গাড়ি দেখে কী ভাবে?
A. মজা পায়
B. বুঝতে পারে না
C. হাসে
D. ভয় পায়

উত্তর: B. বুঝতে পারে না

১৫. ছেলেটি বোতোর উদ্দেশে কী বলে?
A. আমাকে ভয় দেখিও না
B. আমাকে এখানে রাখো
C. আমাকে বাড়ি ফিরে যাওয়ার উপায় করে দিও
D. আমাকে তোমার শহরে নিয়ে চলো

উত্তর: C. আমাকে বাড়ি ফিরে যাওয়ার উপায় করে দিও

চতুর্থ শ্রেণী
বাংলা (পাতাবাহার)
আমাজনের জঙ্গলে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর (অমরেন্দ্র চক্রবর্তী)

১. বোতোর চরিত্র ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: বোতো আমাজনের জলের নিচে বসবাসকারী এক রহস্যময় জীব। সে দেখতে অনেকটা ডলফিনের মতো, গোলাপি রঙের, লম্বা ঠোঁট ও চওড়া মাথা বিশিষ্ট। তাকে ‘আমাজনের দেবতা’ বলা হয়, কারণ সে নাকি বিপদে মানুষের রক্ষা করে। পূর্ণিমা রাতে বোতো দেখা সৌভাগ্যের লক্ষণ বলেই ধরা হয়।

বোতোর নাচ, তার জলতলের ছন্দময় গতিবিধি ও স্থিরতা — সব মিলিয়ে তাকে মনে হয় প্রকৃতির শান্ত, গম্ভীর অথচ করুণাময় এক প্রতীক। সে যেন মানুষের মনের ভাষা বোঝে এবং সহানুভূতি প্রকাশ করে। ছেলেটি মনে মনে তাকে প্রার্থনা করে —
“তুমি যদি সত্যিই আমাজনের রক্ষাকর্তা হও, তুমি আমাকে মা-বাবা আর বন্ধুদের কাছে ফিরিয়ে দাও।”
বোতোর মাধ্যমে লেখক প্রকৃতির এক আশ্রয়দাতা রূপ তুলে ধরেছেন।

২. গল্পে ‘উবা’ চরিত্রের বিশেষত্ব কী?

উত্তর: উবা একজন আদিবাসী, যিনি আমাজনের জঙ্গলে বসবাস করেন। তিনি প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম, নিঃশব্দ অথচ গভীর মননসম্পন্ন একজন চরিত্র। উবা কথা কম বলেন, তবে চোখে চোখ রেখে মানুষের মন বুঝতে চান। ছেলেটির চোখের দিকে তাকিয়ে তিনি বুঝতে চেষ্টা করেন,
“সে কোথা থেকে এসেছে, তার জগৎ কেমন?”

উবা কাঠকুটো দিয়ে ছবি আঁকেন এবং ছেলেটিকে দিয়ে নিজের জগৎ বোঝাতে চান। পরে যখন ছেলেটি ‘কলকাতা’ বোঝায়, তখন উবা বলেন—
“ও তো শুধু বালির দেশ!”
উবা প্রকৃতির রূপ না দেখে বাঁচার কথা কল্পনাও করতে পারেন না। গল্পের শেষে তিনি শিশুর হাত ধরে বলেন—
“তুমি আর ওই দেশে ফিরে যেও না।”
এই কথা তার স্নেহ, সহানুভূতি ও বিশ্বাসের পরিচায়ক।

৩. ছেলেটি উবার সঙ্গে কীভাবে তার নিজের পৃথিবীর পরিচয় করায়?

উত্তর: ছেলেটি উবার গভীর আগ্রহে অনুভব করে, সে জানতে চায়—ছেলেটি কোথা থেকে এসেছে। উবার কাঠকুটো দিয়ে ছবি আঁকার মাধ্যমে তার উৎস জানার চেষ্টা দেখে ছেলেটি বুঝে যায়, তাকে নিজের শহর সম্পর্কে কিছু বলতে হবে। সে একটুখানি জায়গা পরিষ্কার করে সেখানে নিজের শহর কলকাতার ছবি আঁকে।
সে স্কুল, বাড়ি, রিকশা, গাড়ি, টিনের গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে থাকা শিশুদের ছবি আঁকে। সে মা-বাবা, বন্ধু, স্কুল এবং শহরের দিক তুলে ধরে।

তবে উবার চোখে এসব অচেনা, আর সে প্রশ্ন তোলে—
“তুমি কী করে এমন বালির দেশে থাকো, যেখানে জঙ্গল নেই, পাখি নেই, নদী নেই?”
এখানে শহুরে সভ্যতা ও আদিবাসী জীবনের দর্শনগত ফারাক স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

৪. ‘আমাজনের জঙ্গলে’ গল্পে শহরজীবন ও জঙ্গলজীবনের মধ্যে কী বিরোধ চোখে পড়ে?

উত্তর: এই গল্পে শহরজীবন ও জঙ্গলজীবনের মধ্যে এক গাঢ় সাংস্কৃতিক ও জীবনঘনিষ্ঠ ফারাক তুলে ধরা হয়েছে। ছেলেটির শহর কলকাতা—ঘরবাড়ি, গাড়ি, স্কুল, দোকানপাট, রিকশা ইত্যাদিতে ভরা। কিন্তু এখানে প্রকৃতি অনুপস্থিত।

অন্যদিকে, আমাজনের জঙ্গল প্রকৃতির সৌন্দর্য, নীরবতা, রহস্য ও জীবনের গভীর উপলব্ধিতে পূর্ণ। উবা, বোতো, নদী, ফুল, পাখি, প্রজাপতি—সব মিলে এক প্রাণবন্ত প্রাকৃতিক জীবন।

উবার চোখে শহর “বালির দেশ”, যেখানে প্রকৃতি নেই। গল্পকারের চোখে উবা ও বোতো—এই দুই চরিত্র একান্তভাবে প্রকৃতির প্রতিনিধি।
তাঁরা বোঝান, প্রকৃতি থেকেই মানুষ শেখে সৌন্দর্য, শান্তি ও সহানুভূতি।

আরও দেখো: আমি সাগর পাড়ি দেবো প্রশ্ন উত্তর

চতুর্থ শ্রেণী বাংলা (পাতাবাহার) // আমাজনের জঙ্গলে হাতেকলমে প্রশ্ন ও উত্তর (অমরেন্দ্র চক্রবর্তী)

CLOSE

You cannot copy content of this page