চন্দ্রগুপ্ত গল্পের প্রশ্ন উত্তর অষ্টম শ্রেণী বাংলা / Class 8 Bengali Chandrogupto Golper Proshno Uttor

এখানে চন্দ্রগুপ্ত গল্পের প্রশ্ন উত্তর অষ্টম শ্রেণী বাংলা শেয়ার করা হলো। / Class 8 Bengali Chandrogupto Golper Proshno Uttor দ্বিজেন্দ্রলাল রায়

চন্দ্রগুপ্ত গল্পের হাতে কলমে প্রশ্ন উত্তর অষ্টম শ্রেণী বাংলা
Class 8 Bengali Chandrogupto Golper Proshno Uttor

১. নীচের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর এক কথায় লেখো:

১.১ দ্বিজেন্দ্রলাল রায় কৃষিবিদ্যা শেখার জন্য কোথায় গিয়েছিলেন?

উত্তর: বিলেতে।

১.২ তাঁর রচিত দুটি নাটকের নাম লেখো।

উত্তর: ‘চন্দ্রগুপ্ত’ ও ‘মেবার পতন’।

২. নীচের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর একটি বাক্যে লেখো:

২.১ নাট্যাংশটির ঘটনাস্থল ও সময় নির্দেশ করো।

উত্তর: নাট্যাংশটির ঘটনাস্থল সিন্ধু নদতট, সময়-সন্ধ্যাকাল।

২.২ নাট্যাংশে উল্লিখিত ‘হেলেন’ চরিত্রের পরিচয় দাও।
উত্তর: ‘হেলেন’ হলেন গ্রিক সেনাপতি সেলুকসের কন্যা।

২.৩ ‘রাজার প্রতি রাজার আচরণ।’—উদ্ধৃতাংশের বক্তা কে?

উত্তর: উক্তিটির বক্তা হলেন রাজা পুরু।

২.৪ ‘জলাতে একটা কীর্তি রেখে যেতে চাই’—বক্তা কীভাবে এই কীর্তি রেখে যেতে চান?

উত্তর: বক্তা সেকেন্দার সাহা দিগ্বিজয়ের মাধ্যমে জগতে কীর্তি রেখে যেতে চান।

২.৫ ‘সম্রাট, আমায় বধ না করে বন্দি করতে পারবেন না।’—বক্তাকে ‘বন্দি’ করার প্রসঙ্গ এসেছে কেন?উত্তর: বক্তা চন্দ্রগুপ্ত গ্রিক শিবিরে প্রবেশ করে, গ্রিকদের সামরিক কৌশল শিখে নিচ্ছিল-একারণে গুপ্তচর সন্দেহে তাকে বন্দি করার প্রসঙ্গ এসেছে।

৩. নীচের প্রশ্নগুলির সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও:

৩.১ ‘কী বিচিত্র এই দেশ।’—বক্তার চোখে এই দেশের বৈচিত্র্য কীভাবে ধরা পড়েছে?

উত্তর: দ্বিজেন্দ্রলাল রায় রচিত ‘চন্দ্রগুপ্ত’ নাট্যাংশে দেখা যায়, সেকেন্দার সাহার চোখে ভারতের নানা বৈচিত্র্য ধরা পড়েছে। দিনে সূর্যের তাপ, রাতে চাঁদের আলো, বর্ষার কালো মেঘ, হিমালয়ের তুষার, উন্মত্ত হাতি, শান্ত হরিণ—সবই তাকে বিস্মিত করেছে। ভারতীয়দের শক্তিমত্তা ও সারল্যও তার নজরে এসেছে।

৩.২ ‘ভাবলাম-এ একটা জাতি বটে!’—বক্তা কে? তাঁর এমন ভাবনার কারণ কী?

উত্তর: উক্তিটির বক্তা গ্রিকবীর সেকেন্দার সাহা। রাজা পুরুর সাহসী উত্তর শুনে তিনি মুগ্ধ হন, কারণ এক পরাজিত রাজাও এমন গর্বিত উত্তর দিতে পারেন, যা তিনি কল্পনাও করেননি।

৩.৩ ‘এ দিগবিজয় অসম্পূর্ণ রেখে যাচ্ছেন কেন সম্রাট?’—এ প্রশ্নের উত্তরে সম্রাট কী জানালেন?

উত্তর: দীর্ঘ পথশ্রম ও যুদ্ধের ফলে সৈন্যরা ক্লান্ত, আর যুদ্ধজয় করাই তার মূল উদ্দেশ্য ছিল না, কীর্তি রেখে যাওয়াই ছিল তার লক্ষ্য। পুরুর প্রতিরোধ দেখে তিনি মনে করেন, আরও সৈন্য দরকার যা আনা কঠিন। তাই ফিরে যাওয়াই শ্রেয়।

৩.৪ ‘ভারতবাসী মিথ্যা কথা বলতে এখনও শিখে নাই।’—বক্তা কে? কোন্ সত্য সে উচ্চারণ করেছে?

উত্তর: উক্তিটির বক্তা মগধের যুবরাজ চন্দ্রগুপ্ত। গুপ্তচর সন্দেহে ধৃত হওয়ার পর তিনি অকপটে স্বীকার করেন যে, তিনি গ্রিক বাহিনীর সামরিক কৌশল পর্যবেক্ষণ করছিলেন, কিন্তু তার উদ্দেশ্য সেকেন্দার সাহার বিরুদ্ধে যুদ্ধ নয়, বরং তার নিজ রাজ্য পুনরুদ্ধার করা।

৩.৫ ‘আমার ইচ্ছা হলো যে দেখে আসি…’—বক্তার মনে কোন ইচ্ছে জেগে উঠেছিল? তার পরিণতি কী হয়েছিল?

উত্তর: বক্তা চন্দ্রগুপ্ত, যিনি সেকেন্দার সাহার পরাক্রম দেখে নিজ চোখে তা প্রত্যক্ষ করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। পরিণতিতে তিনি গুপ্তচর সন্দেহে ধৃত হন, তবে তার সাহস দেখে সেকেন্দার সাহা তাকে বন্দি না করে ভবিষ্যতে দুর্জয় দিগ্বিজয়ী হওয়ার ভবিষ্যদ্বাণী করেন।

চন্দ্রগুপ্ত গল্পের হাতে কলমে প্রশ্ন উত্তর অষ্টম শ্রেণী বাংলা
Class 8 Bengali Chandrogupto Golper Proshno Uttor

৪. প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো:

৪.১ ‘এ শৌর্য পরাজয় করে আনন্দ আছে।’

প্রসঙ্গ: উদ্ধৃতিটি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের রচিত ‘চন্দ্রগুপ্ত’ নাটক থেকে নেওয়া হয়েছে। সিন্ধু নদীর তীরে গ্রিক সম্রাট সেকেন্দার সাহা ও তাঁর সেনাপতি সেলুকস ভারতের সৌন্দর্য ও বীরত্ব নিয়ে আলোচনা করছিলেন। সেই প্রসঙ্গেই সেকেন্দার সাহা এই উক্তিটি করেন।

তাৎপর্য: গ্রিক সম্রাট সেকেন্দার সাহা দিগ্বিজয়ে বেরিয়ে অনেক দেশ জয় করলেও, প্রথমবার ভারতীয় বীর পুরুর কাছেই প্রবল প্রতিরোধের সম্মুখীন হন। যুদ্ধজয়ী হয়েও তিনি পুরুর বীরত্বের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। প্রকৃত বীরই আরেক বীরের শৌর্যের মর্যাদা দিতে পারেন—এ কথা বোঝাতে সেকেন্দার এই উক্তি করেছেন।

৪.২ ‘সম্রাট মহানুভব।’

প্রসঙ্গ: উক্তিটি করেছেন গ্রিক সেনাপতি সেলুকস। যুদ্ধের পর সেকেন্দার সাহা পরাজিত রাজা পুরুকে মুক্তি দেন এবং তাঁর রাজ্য ফিরিয়ে দেন। এই মহানুভবতায় মুগ্ধ হয়ে সেনাপতি সেলুকস সম্রাটকে উদ্দেশ্য করে এই উক্তিটি করেন।

তাৎপর্য: একাধিপত্য বিস্তারের নেশায় মত্ত সম্রাট হয়েও সেকেন্দার সাহা মানবিকতার পরিচয় দেন। প্রতিপক্ষের শৌর্যবীর্যে মুগ্ধ হয়ে পুরুকে বন্দি না রেখে সম্মান দেন। একজন বিজেতার কাছ থেকে এমন মহানুভবতা আশা করা কঠিন, তাই সেনাপতি সেলুকস এই উক্তির মাধ্যমে সেকেন্দারের মহত্বকে স্বীকার করেছেন।

৪.৩ ‘বাধা পেলাম প্রথম-সেই শতদ্রুতীরে।’

প্রসঙ্গ: সিন্ধু নদীর তীরে সূর্যাস্তের সময় সেকেন্দার সাহা সেনাপতি সেলুকসের সঙ্গে কথোপকথনের সময় এই উক্তিটি করেন। তিনি স্মরণ করেন যে, তাঁর অজেয় বিজয় অভিযানে প্রথমবার প্রবল বাধার সম্মুখীন হতে হয় শতদ্রু নদীর তীরে, যেখানে ভারতীয় বীর পুরু তাঁর বিরুদ্ধে লড়াই করেন।

তাৎপর্য: এতদিনের বিজয় অভিযানে কোনো প্রতিপক্ষই সেকেন্দার সাহাকে থামাতে পারেনি, কিন্তু ভারতীয় বীর পুরু প্রথম ব্যক্তি, যিনি তাঁকে প্রবল প্রতিরোধ দেন। শত্রুকে হারিয়েও সেকেন্দার তাঁর সাহসের প্রশংসা করেন। এই উক্তিতে তাঁর বিস্ময়, সম্মান এবং ভারতীয়দের বীরত্বের প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশ পায়।

৪.৪ ‘আমি তারই প্রতিশোধ নিতে বেরিয়েছি।’

প্রসঙ্গ: সেনাপতি সেলুকসের শিবিরে এক যুবক গুপ্তচর সন্দেহে ধরা পড়ে। সেকেন্দার সাহা তাকে উদ্দেশ্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায় যে, সে মগধের চন্দ্রগুপ্ত। ধননন্দ তার পিতা মহাপদ্মনন্দকে সিংহাসনচ্যুত করেছে, তাই প্রতিশোধ নিতে সে সামরিক কৌশল শিখছে।

তাৎপর্য: এই উক্তি চন্দ্রগুপ্তের দৃঢ় সংকল্প ও প্রতিশোধস্পৃহা প্রকাশ করে। সে শুধু নিজের সাম্রাজ্য ফিরে পেতে চায় না, বরং শত্রুর বিরুদ্ধে শক্তি সঞ্চয় করে প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে। এই উক্তিতে চন্দ্রগুপ্তের ভবিষ্যৎ মহান শাসক হয়ে ওঠার পূর্বাভাস পাওয়া যায়।

৪.৫ ‘যাও বীর। মুক্ত তুমি।’

প্রসঙ্গ: দ্বিজেন্দ্রলাল রায় রচিত চন্দ্রগুপ্ত নাটকে গ্রিক সম্রাট সেকেন্দার সাহার শিবিরে চন্দ্রগুপ্তকে গুপ্তচর সন্দেহে হাজির করা হয়। সেকেন্দার চন্দ্রগুপ্তের পরিচয় ও উদ্দেশ্য জানতে চাইলে, সে জানায় যে, মগধের নন্দরাজার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে সে গ্রিক সমরকৌশল শিখছে। চন্দ্রগুপ্তের সাহস ও সত্যবাদিতায় মুগ্ধ হয়ে সেকেন্দার সাহা তাকে মুক্ত ঘোষণা করে এই উক্তি করেন।

তাৎপর্য: সেকেন্দার সাহা একজন প্রকৃত বীর হিসেবে অন্য বীরের সাহস ও আত্মমর্যাদার মূল্য বুঝতে পারেন। চন্দ্রগুপ্ত তাঁর সামনে ভয় না পেয়ে দৃঢ়চিত্তে নিজের পরিচয় প্রকাশ করে এবং বন্দি হওয়ার অপমান মেনে নিতে অস্বীকার করে। চন্দ্রগুপ্তের এই বীরত্বে সেকেন্দার মুগ্ধ হয়ে তাকে বন্দি না করে মুক্তি দেন। এই উক্তির মাধ্যমে সেকেন্দার সাহার মহানুভবতা, ন্যায়ের প্রতি শ্রদ্ধা এবং প্রকৃত বীরত্বের স্বীকৃতি প্রকাশ পায়।

চন্দ্রগুপ্ত গল্পের হাতে কলমে প্রশ্ন উত্তর অষ্টম শ্রেণী বাংলা
Class 8 Bengali Chandrogupto Golper Proshno Uttor

৫. নিজের ভাষায় উত্তর লেখো:

৫.১ নাট্যাংশটি অবলম্বনে ঐতিহাসিক নাটকের পরিবেশ সৃষ্টিতে নাট্যকারের দক্ষতার পরিচয় দাও।

উত্তর: দ্বিজেন্দ্রলাল রায় বাংলা নাট্যসাহিত্যে ঐতিহাসিক নাটক রচনার ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য। তাঁর চন্দ্রগুপ্ত নাট্যাংশে ঐতিহাসিক বাস্তবতার সঙ্গে কল্পনার সংমিশ্রণ ঘটিয়ে এক প্রাণবন্ত নাটক রচনা করেছেন, যা ঐতিহাসিক নাটকের পরিবেশ গঠনে তাঁর অসাধারণ দক্ষতার পরিচয় বহন করে।

ঐতিহাসিক চরিত্র ও বাস্তবতা:

এই নাটকের মূল চরিত্রগুলি—সেকেন্দার সাহা (আলেকজান্ডার), সেলুকস এবং চন্দ্রগুপ্ত—সবই প্রকৃত ইতিহাসের অংশ। আলেকজান্ডারের ভারত অভিযান, পুরু-আলেকজান্ডারের যুদ্ধ, সেলুকসের পরবর্তী ভারত শাসন, এবং চন্দ্রগুপ্তের নন্দবংশের পতন ঘটিয়ে মৌর্য সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা—এসব ঐতিহাসিক ঘটনা নাটকে যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।

বাস্তবধর্মী সংলাপ ও চরিত্রচিত্রণ:

নাট্যকার সংলাপের মাধ্যমে চরিত্রগুলির ভাবনা, অনুভূতি ও ঐতিহাসিক পটভূমি স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। সেকেন্দারের ভারত সম্পর্কে মুগ্ধতা, পুরুর বীরত্বের প্রতি শ্রদ্ধা, চন্দ্রগুপ্তের প্রতিশোধস্পৃহা—এসব সংলাপে জীবন্ত হয়ে উঠেছে।

ঐতিহাসিক পরিবেশ ও বর্ণনা:

নাটকে সিন্ধু ও শতদ্রু নদীর তীর, ভারতীয় ভূপ্রকৃতির সৌন্দর্য এবং যুদ্ধের আবহ বিশ্বস্ততার সঙ্গে উপস্থাপিত হয়েছে। সেকেন্দার ও সেলুকসের কথোপকথনে ভারতীয় সংস্কৃতির মহিমা উঠে আসে, যা নাটককে ঐতিহাসিক মাত্রা দেয়।

ঐতিহাসিক সত্য ও কল্পনার মিশ্রণ:

নাটকে কিছু কল্পনাপ্রসূত সংলাপ ও ঘটনা সংযোজিত হলেও, তা ঐতিহাসিক সত্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। চন্দ্রগুপ্তের গ্রিক শিবিরে সামরিক কৌশল শেখার প্রসঙ্গের মাধ্যমে নাট্যকার কাহিনিকে নাটকীয়তা দিয়েছেন, যা নাটকের আকর্ষণ বৃদ্ধি করেছে।

উপসংহার:

চন্দ্রগুপ্ত নাট্যাংশে দ্বিজেন্দ্রলাল রায় ঐতিহাসিক ঘটনার উপর ভিত্তি করে এক বিশ্বাসযোগ্য ও মনোমুগ্ধকর নাট্য পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন। সংলাপ, চরিত্রচিত্রণ ও দৃশ্যবিন্যাসের মাধ্যমে তিনি ঐতিহাসিক নাটকের পরিবেশ গঠনে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।

৫.২ নাট্যাংশে ‘সেকেন্দার’ ও ‘সেলুকস’-এর পরিচয় দাও। সেকেন্দারের সংলাপে ভারত-প্রকৃতির বৈচিত্র্যপূর্ণ রূপ কীভাবে ধরা দিয়েছে, তা বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: সেকেন্দারের পরিচয়:

দ্বিজেন্দ্রলাল রায় রচিত ঐতিহাসিক নাটক চন্দ্রগুপ্ত-এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হলেন সেকেন্দার সাহা। নাটকে তিনি এই নামে পরিচিত হলেও প্রকৃতপক্ষে তিনি হলেন গ্রিক সম্রাট আলেকজান্ডার। সুদূর ম্যাসিডোনিয়া থেকে তিনি দিগ্বিজয়ের আশায় বেরিয়ে বিভিন্ন রাজ্য জয়ের পর ভারতবর্ষে উপস্থিত হন। ভারতীয় রাজা পুরুর সঙ্গে শতদ্রু নদীর তীরে এক ভয়াবহ যুদ্ধ হয়, যেখানে শেষ পর্যন্ত পুরু পরাজিত হন। তবে তাঁর বীরত্বে মুগ্ধ হয়ে সেকেন্দার তাঁকে মুক্তি দেন এবং তাঁর রাজ্য ফিরিয়ে দেন। নাটকে দেখা যায়, ভারতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও মানুষের গুণাবলী তাঁকে অভিভূত করে।

সেলুকসের পরিচয়:

সেলুকস ছিলেন গ্রিক সেনাপতি, যিনি আলেকজান্ডারের অন্যতম প্রধান সহকারী। নাটকে দেখা যায়, তিনি চন্দ্রগুপ্তকে গ্রিক যুদ্ধকৌশল শেখাচ্ছিলেন। পরবর্তী সময়ে, আলেকজান্ডার ভারত ছেড়ে চলে গেলে, সেলুকস ভারতে গ্রিক অধিকৃত অঞ্চলের শাসক হন। পরে তিনি চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের সঙ্গে যুদ্ধ করেন এবং শেষ পর্যন্ত সন্ধি করে আপন কন্যাকে চন্দ্রগুপ্তের সঙ্গে বিবাহ দেন।

সেকেন্দারের সংলাপে ভারত-প্রকৃতির বৈচিত্র্যপূর্ণ রূপ
নাটকের শুরুতেই সেকেন্দার ভারত-প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যময় রূপ বর্ণনা করেন। তাঁর সংলাপে ভারতবর্ষের আবহাওয়া, নদী, বন, পশুপাখি এবং প্রাকৃতিক দৃশ্যের অপরূপ বৈচিত্র্য ফুটে ওঠে।

১. ভারতের আবহাওয়া:

সেকেন্দার বলেন, দিনের বেলায় সূর্যের প্রখর তাপে নীল আকাশ দগ্ধ হয়ে ওঠে, আবার রাতের চন্দ্রালোকে সেই ভূমি স্নিগ্ধ হয়ে যায়। বর্ষাকালে ঘন কালো মেঘপুঞ্জ গর্জন করতে করতে আকাশ ছেয়ে ফেলে, যা ভারতের ঋতুবৈচিত্র্যকে তুলে ধরে।

২. নদী ও ভূমির বৈচিত্র্য:

তিনি বলেন, কোথাও উচ্ছ্বসিত বেগে নদী বয়ে চলেছে, আবার কোথাও রয়েছে তপ্ত বালুরাশি। এদেশের প্রকৃতির এই বৈচিত্র্য তাঁকে মুগ্ধ করে।

৩. গাছপালা ও বনভূমি:

কোথাও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে তালবন, আবার কোথাও বটগাছ তার ছায়া মেলে ধরেছে। ভারতের গাছপালার এই বিপুল বৈচিত্র্যও নাটকে উঠে এসেছে।

৪. প্রাণিজগতের দৃশ্য:

সেকেন্দার বলেন, কোথাও উন্মত্ত হাতি জঙ্গম পাহাড়ের মতো এগিয়ে চলেছে, আবার কোথাও মহাভুজঙ্গম (বৃহৎ সাপ) হিংস্রতার প্রতীক হয়ে পড়ে আছে। কোথাও হরিণ বিস্মিত চোখে আকাশের দিকে তাকিয়ে রয়েছে, যা ভারতের বন্যপ্রাণীর সমৃদ্ধির পরিচয় দেয়।

উপসংহার:

সেকেন্দারের সংলাপে ভারতের প্রকৃতি ও পরিবেশের এক অপূর্ব চিত্র ফুটে ওঠে। দ্বিজেন্দ্রলাল রায় অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সেকেন্দারের বিস্ময় ও মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন, যা নাটককে বাস্তবধর্মী ও ঐতিহাসিক নাট্যপরিবেশ গঠনে সাহায্য করেছে।

চন্দ্রগুপ্ত গল্পের হাতে কলমে প্রশ্ন উত্তর অষ্টম শ্রেণী বাংলা
Class 8 Bengali Chandrogupto Golper Proshno Uttor

৫.৩ ‘চমকিত হলাম।’- কার কথায় বক্তা চমকিত হয়েছিলেন? তাঁর চমকিত হওয়ার কারণ কী?

উত্তর: শতদ্রু নদীর তীরে রাজা পুরুর বীরোচিত উক্তিতে গ্রিক সম্রাট সেকেন্দার সাহা চমকিত হয়েছিলেন।

চমকিত হওয়ার কারণ:

সেকেন্দার সুদূর ম্যাসিডোনিয়া থেকে যুদ্ধজয়ের জন্য বেরিয়ে এসে একের পর এক রাজ্য জয় করতে থাকেন। ভারতবর্ষেও তিনি প্রবেশ করেন এবং শতদ্রু নদীর তীরে রাজা পুরুর সঙ্গে এক ভয়ংকর যুদ্ধ হয়। যুদ্ধের পর রাজা পুরুকে বন্দি করা হয়।

সেকেন্দার বন্দি পুরুকে প্রশ্ন করেন, “তুমি আমার কাছ থেকে কী ধরনের ব্যবহার আশা করো?”

উত্তরে অপরাজিত বীরের মতো নির্ভীকচিত্তে রাজা পুরু বলেন—
“যেমন ব্যবহার একজন রাজা আরেকজন রাজার প্রতি করে।”

এই সাহসী ও আত্মমর্যাদাশীল উক্তি শুনে সেকেন্দার চমকিত হন। কারণ তিনি আশা করেননি যে পরাজিত রাজা এত দৃঢ়চিত্ত ও গৌরবময় ভাষায় কথা বলতে পারেন। পুরুর সাহস ও আত্মসম্মানবোধ সেকেন্দারকে মুগ্ধ করে, যার ফলে তিনি তাঁকে মুক্তি দেন এবং তাঁর রাজ্য ফিরিয়ে দেন।

উপসংহার:

সেকেন্দার একজন মহাবীর হলেও, পুরুর অসীম সাহস ও আত্মমর্যাদাবোধ তাঁকে অভিভূত করে। নাটকে এই দৃশ্য ঐতিহাসিক নাটকের পরিবেশ সৃষ্টি করতে সাহায্য করেছে এবং পুরুর চরিত্রের গৌরবময় দিকটি ফুটিয়ে তুলেছে।

৫.৪ ‘সম্রাট মহানুভব।’- বক্তা কে? সম্রাটের ‘মহানুভবতা’-র কীরূপ পরিচয় নাট্যাংশে পাওয়া যায়?

উত্তর: “সম্রাট মহানুভব।” — এই উক্তিটির বক্তা হলেন গ্রিক সেনাপতি সেলুকস।

গ্রিক সম্রাট সেকেন্দার সাহা (আলেকজান্ডার) সুদূর ম্যাসিডোনিয়া থেকে যুদ্ধযাত্রা শুরু করে একের পর এক রাজ্য জয় করতে করতে ভারতবর্ষে পৌঁছান। তিনি বেশিরভাগ রাজ্য সহজেই দখল করতে পারলেও শতদ্রু নদীর তীরে রাজা পুরু তাঁর সামনে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।

যুদ্ধের পর সেকেন্দার রাজা পুরুকে পরাজিত করে বন্দি করেন। এরপর তিনি পুরুকে জিজ্ঞাসা করেন—
“তুমি আমার কাছ থেকে কেমন ব্যবহার আশা করো?”
পুরু নির্ভয়ে উত্তর দেন—
“রাজার প্রতি রাজার আচরণ।”
পুরুর সাহস, আত্মমর্যাদাবোধ ও বীরত্ব দেখে সেকেন্দার মুগ্ধ হন। তিনি রাজা পুরুকে মুক্ত করে তাঁর রাজ্য ফিরিয়ে দেন।
এই ঘটনা দেখে সেনাপতি সেলুকস অভিভূত হয়ে বলেন—”সম্রাট মহানুভব।”

উপসংহার:

সেকেন্দার শুধু একজন মহাবীরই ছিলেন না, তিনি বীরত্ব ও আত্মমর্যাদাকে সম্মান করতেন। তাঁর এই মহানুভব আচরণে একজন প্রকৃত মানবাত্মার অধিকারী শাসকের রূপ প্রকাশ পেয়েছে, যা সেনাপতি সেলুকসের মন্তব্যে ফুটে উঠেছে।

৫.৫ ইতিহাসের নানান অনুষঙ্গ কীভাবে নাট্যকলেবরে বিধৃত হয়েছে, তা ঘটনাধারা বিশ্লেষণ করে আলোচনা করো।

উত্তর: দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ‘চন্দ্রগুপ্ত’ নাটকটি একটি সার্থক ঐতিহাসিক নাটক। এতে প্রকৃত ঐতিহাসিক ঘটনাবলি, চরিত্র ও পরিবেশ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, যা ইতিহাস ও নাট্যকলার এক চমৎকার মেলবন্ধন ঘটিয়েছে। নাট্যকার বাস্তব ঘটনার নাট্যরূপ দিয়ে পাঠকদের জন্য নাট্যাংশটিকে আকর্ষণীয় করে তুলেছেন।

সেকেন্দারের ভারত অভিযানের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

ম্যাসিডোনিয়ার সম্রাট সেকেন্দার (আলেকজান্ডার) যুদ্ধজয় করতে করতে ভারতবর্ষে প্রবেশ করেন।
ভারতীয় রাজা পুরুর সঙ্গে শতদ্রু নদীর তীরে তাঁর সংঘর্ষ হয়।
যুদ্ধের পর পুরু বন্দি হন, কিন্তু তাঁর বীরত্বে মুগ্ধ হয়ে সেকেন্দার তাঁকে মুক্ত করে রাজ্য ফিরিয়ে দেন।
সৈন্যদের ক্লান্তি ও যুদ্ধজয়ের অনিশ্চয়তার কারণে সেকেন্দার ভারতজয় অসমাপ্ত রেখেই দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন।
এই ঘটনাগুলি ঐতিহাসিক সত্য, যা নাটকে নাটকীয় রূপে বর্ণিত হয়েছে।

চন্দ্রগুপ্তের নির্বাসন ও মগধ দখলের প্রচেষ্টা

নাটকে দেখা যায়, চন্দ্রগুপ্তকে গুপ্তচর সন্দেহে গ্রিক শিবিরে বন্দি করা হয়।
চন্দ্রগুপ্ত নিজেকে নন্দরাজের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পরিচিত করান এবং জানান যে তিনি গ্রিক শিবিরে সমরকৌশল শিখছিলেন।
পরবর্তী সময়ে, চন্দ্রগুপ্ত নন্দরাজ ধননন্দকে পরাজিত করে মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন।
ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, চাণক্যের সহায়তায় চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন, যা নাটকের ঘটনাপ্রবাহের সঙ্গে মিলে যায়।

নাটকের ঐতিহাসিক চরিত্র ও পরিবেশ

নাটকের চরিত্রগুলি— সেকেন্দার, সেলুকস, চন্দ্রগুপ্ত, রাজা পুরু— সবই ঐতিহাসিক।
নাটকে গ্রিক শিবিরের যুদ্ধকৌশল, সেনাপতিদের আলোচনা, ভারতীয় রাজাদের মনোভাব—সবকিছুই বাস্তবসম্মতভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
সেকেন্দারের সংলাপে ভারতের প্রকৃতি ও পরিবেশের বৈচিত্র্য ফুটে উঠেছে, যা নাটককে বাস্তবতার ছোঁয়া দিয়েছে।

উপসংহার

দ্বিজেন্দ্রলাল রায় তাঁর ঐতিহাসিক অনুসন্ধান ও নাট্যরচনার দক্ষতার মাধ্যমে ইতিহাসের বিভিন্ন অনুষঙ্গকে নাটকের পরিসরে সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। ফলে, ‘চন্দ্রগুপ্ত’ নাটকটি শুধুমাত্র বিনোদনমূলক নয়, এটি পাঠকদের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলিও জানার সুযোগ করে দেয়।

৫.৬ ‘গুপ্তচর’—কাকে ‘গুপ্তচর’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে? সে কি প্রকৃতই গুপ্তচর?

উত্তর: দ্বিজেন্দ্রলাল রায় রচিত চন্দ্রগুপ্ত নাট্যাংশে মগধের যুবরাজ চন্দ্রগুপ্তকে ‘গুপ্তচর’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে।

নাট্যাংশ অনুযায়ী, চন্দ্রগুপ্ত গ্রিক সেনাপতি সেলুকসের কাছে সামরিক কৌশল শিক্ষাগ্রহণ করছিল। গ্রিক সম্রাটের ভারতত্যাগের সংবাদ শুনে সে অর্জিত শিক্ষাগুলো তালপাতায় লিখে রাখছিল। কিন্তু চন্দ্রগুপ্ত লুকিয়ে কোনো তথ্য চুরি করেনি বা গ্রিক সেনাদের কোনো ক্ষতি করার চেষ্টা করেনি, যা সাধারণত গুপ্তচরের কাজ। তার লক্ষ্য ছিল নন্দরাজের হাত থেকে মগধ উদ্ধার করা, গ্রিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা নয়।

অন্যদিকে, আন্টিগোনস চন্দ্রগুপ্তকে গুপ্তচর হিসেবে সন্দেহ করলেও প্রকৃতপক্ষে সে গুপ্তচর নয়। কারণ, তার কর্মকাণ্ড গোপন ষড়যন্ত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল না, বরং তা ছিল নিজের মাতৃভূমির স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের জন্য।

৫.৭ ‘সেকেন্দার একবার সেলুকসের প্রতি চাহিলেন…’ তাঁর এই ক্ষণিক দৃষ্টিপাতের কারণ কী?

উত্তর: চন্দ্রগুপ্ত নাট্যাংশে সন্ধ্যাকালে সিন্ধু নদীর তীরে দাঁড়িয়ে গ্রিক সম্রাট সেকেন্দার ভারতীয়দের সততা, সাহসিকতা ও বীরত্বের প্রশংসা করছিলেন। এমন সময় গ্রিক সেনাপতি আন্টিগোনস চন্দ্রগুপ্তকে গুপ্তচর সন্দেহে ধরে নিয়ে আসে।

সেকেন্দার চন্দ্রগুপ্তের কাছে তার উদ্দেশ্য জানতে চাইলে সে অকপটে স্বীকার করে যে, সে সেলুকসের কাছ থেকে সামরিক শিক্ষা নিয়েছে এবং অর্জিত জ্ঞান তালপাতায় লিখে রেখেছে, কিন্তু তার উদ্দেশ্য গ্রিকদের ক্ষতি করা নয়, বরং নন্দবংশের শাসন উৎখাত করা।

চন্দ্রগুপ্তের সাহস ও সততা দেখে সেকেন্দার মুগ্ধ হন এবং তখনই তিনি এক মুহূর্তের জন্য সেলুকসের দিকে তাকান। এই দৃষ্টিপাতের মাধ্যমে তিনি যেন ইঙ্গিতে সেলুকসকে বোঝাতে চাইলেন যে, ভারতীয়দের যে সাহসিকতা ও বীরত্বের কথা তিনি কিছুক্ষণ আগেই বলছিলেন, চন্দ্রগুপ্ত তারই প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

৫.৮ চন্দ্রগুপ্ত ও সেলুকসের মধ্যে কীরূপ সম্পর্কের পরিচয় পাওয়া যায়?

উত্তর: দ্বিজেন্দ্রলাল রায় রচিত চন্দ্রগুপ্ত নাট্যাংশে চন্দ্রগুপ্ত ও গ্রিক সেনাপতি সেলুকসের সম্পর্ক ছিল ছাত্র-শিক্ষকের। চন্দ্রগুপ্ত এক মাস ধরে সেলুকসের কাছে ব্যূহরচনা, সৈন্যচালনা এবং সামরিক কৌশল শিক্ষাগ্রহণ করছিল।

গ্রিক সেনারা ভারত ত্যাগ করবে শুনে চন্দ্রগুপ্ত তার শেখা বিষয়গুলোর নোট তৈরি করছিল, যা গুপ্তচরবৃত্তির সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। চন্দ্রগুপ্ত সেলুকসকে গুরু হিসেবে শ্রদ্ধা করত, যা তার দ্বারা সেলুকসকে রক্ষার প্রচেষ্টায় প্রমাণিত হয়। যখন আন্টিগোনস সেলুকসকে বিশ্বাসঘাতক বলে আক্রমণ করতে উদ্যত হয়, তখন চন্দ্রগুপ্ত তা প্রতিহত করে।

অন্যদিকে, সেলুকসও চন্দ্রগুপ্তকে জাতিগত পার্থক্য না দেখে শিক্ষাদানের সুযোগ দিয়েছিলেন, যা তার উদার দৃষ্টিভঙ্গির পরিচায়ক। ফলে, তাদের সম্পর্ক শুধুমাত্র ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে পারস্পরিক সম্মান ও আস্থার ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

৫.৯ ‘তা এই পত্রে লিখে নিচ্ছিলাম’—কার উক্তি? সে কী লিখে নিচ্ছিল? তার এই লিখে নেওয়ার উদ্দেশ্য কী?

উত্তর: প্রশ্নে উদ্ধৃত উক্তিটি মগধের যুবরাজ চন্দ্রগুপ্তের।

চন্দ্রগুপ্ত দীর্ঘ এক মাস ধরে গ্রিক সেনাপতি সেলুকসের কাছে সামরিক কৌশল, ব্যূহরচনা, সৈন্য পরিচালনা ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ করছিল। তার শেখা শিক্ষণীয় বিষয়গুলো সে তালপাতায় লিখে সংরক্ষণ করছিল।

চন্দ্রগুপ্তের এই লিখে রাখার মূল উদ্দেশ্য ছিল তার হারানো রাজ্য, অর্থাৎ নন্দরাজার হাত থেকে মগধ পুনরুদ্ধার করা। সে জানত যে গ্রিক সম্রাট সেকেন্দার শীঘ্রই ভারত ছেড়ে চলে যাবেন, ফলে সেলুকসের কাছ থেকে শেখা সামরিক বিদ্যাগুলো সংরক্ষণ করা তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে তার এই কর্মকাণ্ড গুপ্তচরবৃত্তি নয়, বরং তার মাতৃভূমির মুক্তির লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ।

চন্দ্রগুপ্ত গল্পের হাতে কলমে প্রশ্ন উত্তর অষ্টম শ্রেণী বাংলা
Class 8 Bengali Chandrogupto Golper Proshno Uttor

৫.১০ আন্টিগোনস নাটকের এই দৃশ্যে সেলুকসকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলেছে। তোমার কি সেলুকসকে সত্যিই ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে মনে হয়? যুক্তিসহ আলোচনা করো।

উত্তর: চন্দ্রগুপ্ত নাট্যাংশে গ্রিক সেনা আন্টিগোনস সেনাপতি সেলুকসকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে অভিহিত করেছে। তার মতে, একজন গ্রিক সেনাপতি হয়ে সেলুকস কেন এক ভারতীয় যুবককে গ্রিক সামরিক কৌশল শিক্ষা দিলেন, এটি বিশ্বাসঘাতকতার শামিল।

তবে আমার মতে, সেলুকসকে বিশ্বাসঘাতক বলা ঠিক নয়। কারণ—

১. সাধারণ মানবিকতা ও সৌজন্য: চন্দ্রগুপ্ত একজন মেধাবী ছাত্র হিসেবে সেলুকসের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়েছিল এবং সেলুকসও তার প্রতিভা দেখে প্রশংসা করতেন। তিনি নিছক সামরিক বিদ্যা শেখানোর মানসিকতা থেকে চন্দ্রগুপ্তকে শিক্ষা দিয়েছিলেন, কোনো ষড়যন্ত্র বা বিশ্বাসঘাতকতার উদ্দেশ্যে নয়।

গ্রিকদের প্রতি ক্ষতি করার কোনো ইচ্ছা ছিল না: চন্দ্রগুপ্ত তার শেখা বিদ্যা গ্রিকদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করেননি। তার একমাত্র লক্ষ্য ছিল নন্দবংশকে উৎখাত করে মগধ পুনরুদ্ধার করা।

সেলুকসের নিরপেক্ষতা: সেলুকস কোনো রাজনৈতিক স্বার্থে চন্দ্রগুপ্তকে সাহায্য করেননি, বরং একজন আগ্রহী শিক্ষার্থী হিসেবে তাকে সামরিক কৌশল শিখিয়েছিলেন। এটি বিশ্বাসঘাতকতা নয়, বরং একজন শিক্ষকের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন।

এই কারণগুলোর ভিত্তিতে বলা যায়, সেলুকসকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলা অন্যায়।

৫.১১ ‘নিরস্ত হও।’—কে এই নির্দেশ দিয়েছেন? কোন পরিস্থিতিতে তিনি এমন নির্দেশ দানে বাধ্য হলেন?

উত্তর: ‘নিরস্ত হও’ নির্দেশটি দিয়েছিলেন গ্রিক সম্রাট সেকেন্দার।

নাট্যাংশ অনুযায়ী, আন্টিগোনস সেলুকসকে বিশ্বাসঘাতক বলে আক্রমণ করতে উদ্যত হয় এবং তার শির লক্ষ্য করে তরবারি চালায়। তখন চন্দ্রগুপ্ত দ্রুততার সঙ্গে নিজ তরবারি বের করে আন্টিগোনসের আঘাত প্রতিহত করে। এরপর আন্টিগোনস চন্দ্রগুপ্তের উপর আক্রমণ চালাতে চাইলে সেখানে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

এই অপ্রত্যাশিত বিশৃঙ্খলা এড়াতে এবং গ্রিক সেনাদলের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘাত রোধ করতে সেকেন্দার দৃঢ়ভাবে ‘নিরস্ত হও’ নির্দেশ দেন। তার এই নির্দেশের ফলে পরিস্থিতি শান্ত হয় এবং একটি সম্ভাব্য সংঘর্ষ এড়ানো সম্ভব হয়।

৫.১২ ‘আন্টিগোনস লজ্জায় শির অবনত করিলেন।’—তার লজ্জিত হওয়ার কারণ কী?

উত্তর: নাট্যাংশ অনুযায়ী, আন্টিগোনস যখন সেনাপতি সেলুকসকে বিশ্বাসঘাতক বলে আক্রমণ করল, তখন চন্দ্রগুপ্ত দ্রুততার সঙ্গে আন্টিগোনসের আক্রমণ প্রতিহত করে। এরপর আন্টিগোনস চন্দ্রগুপ্তের উপর আক্রমণ চালালে, চন্দ্রগুপ্ত আবারও তা প্রতিহত করে এবং তার তরবারির আঘাতে আন্টিগোনসের তরবারি মাটিতে পড়ে যায়।

একজন ভারতীয় যুবকের হাতে পরাস্ত হয়ে আন্টিগোনসের অহংকার চূর্ণ হয়। তার মনে হতে থাকে যে, যে ভারতীয়দের সে দুর্বল ভেবেছিল, তারা আসলে কতটা শক্তিশালী ও দক্ষ। নিজের পরাজয় ও অপমানবোধে আন্টিগোনস লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলে।

৫.১৩ নাট্যাংশ অবলম্বনে গ্রিক সম্রাট সেকেন্দারের উজ্জ্বল ব্যক্তিত্বের পরিচয় দাও।

উত্তর: দ্বিজেন্দ্রলাল রায় রচিত চন্দ্রগুপ্ত নাটকে গ্রিক সম্রাট সেকেন্দারের চরিত্র অত্যন্ত উজ্জ্বল। তিনি শুধু এক মহাবিজেতা নন, বরং এক মহানুভব, উদার ও বিচক্ষণ শাসক। আলোচ্য নাট্যাংশে তাঁর ব্যক্তিত্বের বিভিন্ন দিক উজ্জ্বলভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।

প্রথমত, সেকেন্দার প্রকৃতিপ্রেমিক এবং সুন্দরের উপাসক। নাটকের শুরুতেই তাঁকে ভারতীয় প্রকৃতি ও সংস্কৃতির প্রশংসা করতে দেখা যায়। এটি তাঁর মানসিক সৌন্দর্য ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীলতার পরিচয় বহন করে।

দ্বিতীয়ত, সেকেন্দার একজন ন্যায়পরায়ণ শাসক ও মহত্তম বীর। ভারতীয় বীর রাজা পুরুকে তিনি যুদ্ধে পরাজিত করেও তাঁর রাজ্য ফিরিয়ে দেন এবং তাঁকে যথাযথ সম্মান প্রদান করেন। এটি তাঁর মহানুভবতা ও সত্যিকারের বীরোচিত মানসিকতার পরিচয় দেয়।

তৃতীয়ত, সেকেন্দার একজন বিচক্ষণ ও দূরদর্শী ব্যক্তি। যখন চন্দ্রগুপ্ত তাঁকে ‘ভীরু’ বলে তিরস্কার করে, তখন তিনি বিরক্ত না হয়ে বরং খুশি হন। তিনি চন্দ্রগুপ্তের সাহসিকতা ও উচ্চাকাঙ্ক্ষায় মুগ্ধ হয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেন—’তুমি দুর্জয় দিগ্বিজয়ী হবে।’

এই সমস্ত গুণাবলি সেকেন্দারকে কেবল একজন বিজেতা হিসেবে নয়, বরং এক মহান ব্যক্তি ও আদর্শ শাসক হিসেবে তুলে ধরে। তাঁর চরিত্রের এই মহান দিকগুলোই তাঁর উজ্জ্বল ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক।

৫.১৪ চন্দ্রগুপ্তের প্রতি সেকেন্দারের কী রকম মনোভাব নাট্যদৃশ্যে ফুটে উঠেছে, তা উভয়ের সংলাপের আলোকে বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের চন্দ্রগুপ্ত নাটকে গ্রিক সম্রাট সেকেন্দারের চন্দ্রগুপ্তের প্রতি মনোভাব একাধিক সংলাপে ফুটে উঠেছে। প্রথমে সন্দেহ ও পরীক্ষা, পরে মুগ্ধতা ও আশীর্বাদ—এই দুটি পর্যায়ে তাঁর মনোভাব স্পষ্ট হয়।

নাটকে দেখা যায়, গ্রিক সেনাপতি আন্টিগোনস চন্দ্রগুপ্তকে গুপ্তচর সন্দেহে ধরে নিয়ে আসে এবং সেকেন্দারের সামনে হাজির করে। তখন সেকেন্দার চন্দ্রগুপ্তকে জিজ্ঞেস করেন—
“কি লিখছিলে যুবক? সত্য বলো।”

চন্দ্রগুপ্ত অকপটে উত্তর দেয়—
“সত্য বলব, রাজাধিরাজ! ভারতবাসী মিথ্যা কথা বলতে এখনও শিখে নাই।”

এই কথায় সেকেন্দারের মনে চন্দ্রগুপ্তের প্রতি প্রথমবারের মতো প্রশংসাসূচক অনুভূতি জন্মায়। তিনি বুঝতে পারেন যে যুবক অত্যন্ত সাহসী এবং সৎ।

এরপর চন্দ্রগুপ্ত আরও জানায় যে সে সেনাপতি সেলুকসের কাছ থেকে গ্রিক সামরিক বিদ্যা শিখছিল এবং তা লিখে রাখছিল, যাতে সে তার মাতৃভূমিকে নন্দবংশের কবল থেকে মুক্ত করতে পারে।

এই কথা শুনেও সেকেন্দার প্রথমে সন্দেহ প্রকাশ করে এবং নির্দেশ দেন—
“সেলুকস! বন্দি করো।”

কিন্তু চন্দ্রগুপ্ত নির্ভয়ে প্রত্যুত্তর দেয়—
“সম্রাট, আমায় বধ না করে বন্দি করতে পারবেন না।”

চন্দ্রগুপ্তের এই সাহসী উচ্চারণ সেকেন্দারকে মুগ্ধ করে। তখন তিনি উপলব্ধি করেন যে এই যুবক সাধারণ কেউ নয়, বরং ভবিষ্যতে এক মহান বিজেতা হয়ে উঠবে। তাই তিনি চন্দ্রগুপ্তকে বন্দি করার সিদ্ধান্ত বদলে দিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেন—
“তুমি দুর্জয় দিগ্বিজয়ী হবে।”

এই সংলাপগুলোর মাধ্যমে বোঝা যায় যে সেকেন্দারের মনোভাব চন্দ্রগুপ্তের প্রতি প্রথমে সন্দেহপ্রবণ থাকলেও পরে তা প্রশংসায় রূপ নেয়। তাঁর দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মন এই ভারতীয় যুবকের অসাধারণ প্রতিভা ও সাহসিকতা চিনতে সক্ষম হয় এবং তিনি তাকে ভবিষ্যতের এক মহান সম্রাট হিসেবে কল্পনা করেন।

চন্দ্রগুপ্ত গল্পের হাতে কলমে প্রশ্ন উত্তর অষ্টম শ্রেণী বাংলা
Class 8 Bengali Chandrogupto Golper Proshno Uttor

৬. নীচের বাক্যগুলি থেকে সন্ধিবদ্ধ পদ খুঁজে নিয়ে সন্ধিবিচ্ছেদ করো:

৬.১ আমি নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে দেখি।

উত্তর: নির্বাক = নিঃ + বাক।

৬.২ বিশাল নদ-নদী ফেনিল উচ্ছ্বাসে উদ্দাম বেগে ছুটেছে।

উত্তর:
উচ্ছ্বাসে = উৎ + শ্বাস (এ)
উদ্দাম = উৎ + দাম

৬.৩ সে নির্ভীক নিষ্কম্পস্বরে উত্তর দিলো, ‘রাজার প্রতি রাজার আচরণ।’

উত্তর:
নির্ভীক = নিঃ + ভীক
নিষ্কম্প = নিঃ + কম্প

৬.৪ আমি এসেছি শৌখিন দিগবিজয়ে।

উত্তর: দিগবিজয়ে = দিক্ + বিজয় (এ)

৬.৫ তুমি হৃতরাজ্য উদ্ধার করবে।

উত্তর: উদ্ধার = উৎ + হার

৭. ব্যাসবাক্যসহ সমাসের নাম লেখো:
দৈত্যসৈন্য, নদনদী, স্নেহছায়া, অসম্পূর্ণ, বিজয়বার্তা, অভ্রভেদী।

উত্তর:

দৈত্যসৈন্য
ব্যাসবাক্য: দৈত্যের ন্যায় সৈন্য
সমাসের নাম: কর্মধারয় সমাস

নদনদী
ব্যাসবাক্য: নদ ও নদী
সমাসের নাম: দ্বন্দু সমাস

স্নেহছায়া
ব্যাসবাক্য: স্নেহের ছায়া (তৎপুরুষ সমাস),

স্নেহরূপ ছায়া (রূপক কর্মধারয়)
সমাসের নাম: তৎপুরুষ সমাস / রূপক কর্মধারয়

অসম্পূর্ণ
ব্যাসবাক্য: নয় সম্পূর্ণ
সমাসের নাম: তৎপুরুষ সমাস

বিজয়বার্তা
ব্যাসবাক্য: বিজয়সূচক বার্তা
সমাসের নাম: মধ্যপদলোপী কর্মধারয়

অভ্রভেদী
ব্যাসবাক্য: অভ্রকে ভেদ করে যা
সমাসের নাম: উপপদ তৎপুরুষ সমাস

৮. ক্রিয়ার কাল নির্দেশ করো:

৮.১: হেলেন সেলুকসের হস্ত ধরিয়া তাঁহার পার্শ্বে দণ্ডায়মানা।
উত্তর: সাধারণ বর্তমান।

৮.২: এই মরুভূমি স্বেচ্ছাচারের মতো তপ্ত বালুরাশি নিয়ে খেলা করছে।
উত্তর: ঘটমান বর্তমান।

৮.৩: চমকিত হলাম।
উত্তর: সাধারণ অতীত।

৮.৪: আমার শিবিরে তুমি গুপ্তচর হয়ে প্রবেশ করেছ।
উত্তর: পুরাঘটিত বর্তমান।

৮.৫: নির্ভয়ে তুমি তোমার রাজ্যে ফিরে যাও।
উত্তর: বর্তমান অনুজ্ঞা।

৯. নিম্নরেখাঙ্কিত শব্দগুলির কারক-বিভক্তি নির্দেশ করো:

৯.১: কী বিচিত্র এই দেশ।
উত্তর: দেশ: অধিকরণ কারকে শূন্য বিভক্তি।

৯.২: আমি বিস্মিত আতঙ্কে চেয়ে থাকি।
উত্তর: আতঙ্কে করণ কারকে ‘এ’ বিভক্তি।

৯.৩: মদমত্ত মাতঙ্গ জঙ্গমপর্বতসম মন্থর গতিতে চলছে।
উত্তর: মাতঙ্গ: কর্তৃকারকে শূন্য বিভক্তি।

৯.৪: বাধা পেলাম প্রথম-সেই শতদ্রুতীরে।
উত্তর: শতদ্রুতীরে অধিকরণ কারকে ‘এ’ বিভক্তি।

৯.৫: আমি যা শিখেছি তা এই পত্রে লিখে নিচ্ছিলাম।
উত্তর: পত্রে অধিকরণ কারকে ‘এ’ বিভক্তি।

১০. নীচের শব্দগুলির দল বিশ্লেষণ করো:

স্থিরভাবে, নিষ্কম্পস্বরে, বিজয়বাহিনী, চন্দ্রগুপ্ত, আর্যকুলরবি

উত্তর:

স্থিরভাবে
স্থির্ (রুদ্ধদল)-ভা (মুক্তদল)-বে (মুক্তদল)
তিনটি দল

নিষ্কম্পস্বরে
নিষ (রুদ্ধদল)-কম্ (রুদ্ধদল)-প (মুক্তদল)-স্ব (মুক্তদল)-রে (মুক্তদল)
পাঁচটি দল

বিজয়বাহিনী
বি (মুক্তদল)-জয় (রুদ্ধদল)-বা (মুক্তদল)-হি (মুক্তদল)-নী (মুক্তদল)
পাঁচটি দল

চন্দ্রগুপ্ত
চন্ (রুদ্ধদল)-দ্র (মুক্তদল)-গুপ্ (রুদ্ধদল)-ত (মুক্তদল)
চারটি দল

আর্যকুলরবি
আর্ (রুদ্ধদল)-য (মুক্তদল)-কু (মুক্তদল)-ল (মুক্তদল)-র (মুক্তদল)-বি (মুক্তদল)
ছ-টি দল

১১. নির্দেশ অনুযায়ী বাক্য পরিবর্তন করো:

১১.১ নদতটে শিবির-সম্মুখে সেকেন্দার ও সেলুকস অস্তগামী সূর্যের দিকে চাহিয়া ছিলেন। (দুটি বাক্যে ভেঙে লেখো

উত্তর: নদতটে শিবির-সম্মুখে সেকেন্দার ও সেলুকস ছিলেন। তাঁরা অস্তগামী সূর্যের দিকে চাহিয়া ছিলেন।

১১.২ আমার কাছে কীরূপ আচরণ প্রত্যাশা করো? (পরোক্ষ উক্তিতে)

উত্তর: বস্তা শ্রোতার কাছে জানতে চাইলেন যে শ্রোতা বস্তার কাছে কীরূপ আচরণ প্রত্যাশা করেন।

১১.৩ জগতে একটা কীর্তি রেখে যেতে চাই। (না-সূচক বাক্যে)

উত্তর: জগতে একটা কীর্তি না-রেখে যেতে চাই না।

১১.৪ আমি যা শিখেছি তা এই পত্রে লিখে নিচ্ছিলাম।(সরল বাক্যে)

উত্তর: আমি শেখা জিনিস এই পত্রে লিখে নিচ্ছিলাম।

১১.৫ তোমার অপরাধ তত নয়। (হ্যাঁ-সূচক বাক্যে)

উত্তর: তোমার অপরাধ কম।

১১.৬ এক গৃহহীন নিরাশ্রয় হিন্দু রাজপুত্র ছাত্র হিসেবে তাঁর কাছে উপস্থিত, তাতেই তিনি ত্রস্ত।
(নিম্নরেখ শব্দের বিশেষ্যরূপ ব্যবহার করে বাক্যটি লেখো)

উত্তর: এক গৃহহীন নিরাশ্রয় হিন্দু রাজপুত্রের ছাত্র হিসেবে তাঁর কাছে উপস্থিতিতেই তিনি ত্রস্ত্র।

১১.৭ কী বিচিত্র এই দেশ!

উত্তর: এই দেশ অতি বিচিত্র।

১১.৮ সত্য সম্রাট।

উত্তর: অসত্য নয় সম্রাট।

১১.৯ এ দিগবিজয় অসম্পূর্ণ রেখে যাচ্ছেন কেন সম্রাট? ( পরোক্ষ উক্তিতে)

উত্তর: সম্রাট কেন এই দিগ্বিজয় অসম্পূর্ণ রেখে যাচ্ছেন, তা সম্রাটের কাছে জানতে চান বক্তা।

১১.১০ ভারতবাসী মিথ্যা কথা বলতে এখনও শিখে নাই। (হ্যাঁ-সূচক বাক্যে)

উত্তর: ভারতবাসী মিথ্যা কথা বলা শিখতে এখনও অক্ষম।

১১.১১ আমি এরূপ বুঝি নাই। (হ্যাঁ-সূচক বাক্যে)

উত্তর: আমি অন্যরূপ বুঝিয়াছি। / আমি এরূপ বুঝিতে অক্ষম হয়েছি।

১১.১২ ‘সেকেন্দার সাহা এত কাপুরুষ তাহা ভাবি নাই।’
(নিম্নরেখাঙ্কিত শব্দের বিশেষ্যের রূপ ব্যবহার করো)

উত্তর: সেকেন্দার সাহার এত কাপুরুষতার কথা ভাবি নাই।

১১.১৩ সম্রাট আমায় বধ না করে বন্দি করতে পারবেন না। (যৌগিক বাক্যে)

উত্তর: সম্রাট আগে আমাকে বধ করবেন এবং তারপর আমায় বন্দি করতে পারবেন।

১১.১৪ আমি পরীক্ষা করছিলাম মাত্র। (জটিল বাক্যে)

উত্তর: আমি যা করছিলাম তা পরীক্ষা ছিল মাত্র।

১১.১৫ নির্ভয়ে তুমি তোমার রাজ্যে ফিরে যাও। (না-সূচক বাক্যে)

উত্তর: কোনো ভয় না-করেই তুমি তোমার রাজ্যে ফিরে যাও।

চন্দ্রগুপ্ত গল্পের অতিরিক্ত প্রশ্ন উত্তর অষ্টম শ্রেণী বাংলা
Class 8 Bengali Chandrogupto Golper Proshno Uttor

১. ‘চন্দ্রগুপ্ত’ নাট্যাংশের রচয়িতা হলেন—
ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
খ) নজরুল ইসলাম
গ) দ্বিজেন্দ্রলাল রায়
ঘ) সুকুমার রায়

উত্তর: গ) দ্বিজেন্দ্রলাল রায়

২. পাঠ্য ‘চন্দ্রগুপ্ত’ নাট্যাংশটি হল—
ক) ঐতিহাসিক নাটক
খ) সামাজিক নাটক
গ) রাজনৈতিক নাটক
ঘ) লোকনাট্য

উত্তর: ক) ঐতিহাসিক নাটক

৩. সেকেন্দার সাহা হলেন প্রকৃতপক্ষে—
ক) আকবর
খ) শেরশাহ
গ) আলেকজান্ডার
ঘ) অশোক

উত্তর: গ) আলেকজান্ডার

৪. ‘চন্দ্রগুপ্ত’ নাট্যাংশে বর্ণিত কালটি হল—
ক) প্রভাত
খ) মধ্যাহ্ন
গ) অপরাহ্ন
ঘ) সন্ধ্যা

উত্তর: ঘ) সন্ধ্যা

৫. যে নদের তীরে চন্দ্রগুপ্ত ও সেকেন্দার সাহার সাক্ষাৎ ঘটেছে—
ক) গঙ্গা
খ) যমুনা
গ) শতদ্রু
ঘ) সিন্ধু

উত্তর: ঘ) সিন্ধু

৬. সেলুকসের হাত ধরে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন—
ক) হেলেনা
খ) ম্যাডোনা
গ) হেলেন
ঘ) হেডেন

উত্তর: গ) হেলেন

৭. ‘কুরঙ্গম’ বলতে বোঝায় যে প্রাণী—
ক) ব্যাঘ্র
খ) সিংহ
গ) ভালুক
ঘ) হরিণ

উত্তর: ঘ) হরিণ

৮. সেকেন্দার সাহা প্রথম বাধা পান—
ক) সিন্ধু তীরে
খ) গঙ্গা তীরে
গ) ঝিলাম তীরে
ঘ) শতদ্রু তীরে

উত্তর: ঘ) শতদ্রু তীরে

৯. ম্যাসিডন কোন মহাদেশে অবস্থিত?
ক) ইউরোপ
খ) এশিয়া
গ) আফ্রিকা
ঘ) আমেরিকা

উত্তর: ক) ইউরোপ

১০. গ্রিক রণকৌশল চন্দ্রগুপ্ত লিখে নিচ্ছিল—
ক) খাতায়
খ) পুস্তকে
গ) পত্রে
ঘ) মাটির ফলকে

উত্তর: গ) পত্রে

১১. ‘সে নির্ভীক নিষ্কম্পস্বরে উত্তর দিল,’—কে উত্তর দিয়েছিল?
ক) সেলুকস
খ) আলেকজান্ডার
গ) রাজা পুরু
ঘ) চন্দ্রগুপ্ত

উত্তর: গ) রাজা পুরু

১২. ‘সেকেন্দার সাহা’ প্রকৃতপক্ষে কে?
ক) আকবর
খ) শেরশাহ
গ) আলেকজান্ডার
ঘ) অশোক

উত্তর: গ) আলেকজান্ডার

১৩. ‘আমি এসেছি শৌখিন দিগবিজয়ে।’—বক্তা কে?
ক) রাজা পুরু
খ) সেলুকস
গ) সেকেন্দার সাহা
ঘ) চন্দ্রগুপ্ত

উত্তর: গ) সেকেন্দার সাহা

১৪. ‘সত্য সেলুকস।’—সেলুকস কে?
ক) গ্রিক সম্রাট
খ) সেকেন্দার সাহার সেনাপতি
গ) মগধরাজ
ঘ) রাজা পুরু

উত্তর: খ) সেকেন্দার সাহার সেনাপতি

১৫. যে নদের তীরে চন্দ্রগুপ্ত ও সেকেন্দার সাহার সাক্ষাৎ ঘটেছে—
ক) গঙ্গা
খ) যমুনা
গ) শতদ্রু
ঘ) সিন্ধু

উত্তর: ঘ) সিন্ধু

১৬. ‘কুরঙ্গম’ বলতে বোঝায় যে প্রাণী—
ক) ব্যাঘ্র
খ) সিংহ
গ) ভালুক
ঘ) হরিণ

উত্তর: ঘ) হরিণ

১৭. চন্দ্রগুপ্তের পরিচয় কী?
ক) মগধের যুবরাজ
খ) রাজা পুরুর সেনাপতি
গ) সেলুকসের পরামর্শদাতা
ঘ) আলেকজান্ডারের দূত

উত্তর: ক) মগধের যুবরাজ

১৮. আন্টিগোনস চন্দ্রগুপ্তকে কী সন্দেহে ধরে আনে?
ক) রাজদ্রোহী সন্দেহে
খ) গুপ্তচর সন্দেহে
গ) প্রতারক সন্দেহে
ঘ) সেনানায়ক সন্দেহে

উত্তর: খ) গুপ্তচর সন্দেহে

১৯. চন্দ্রগুপ্ত সম্পর্কে সেকেন্দার সাহা কী ভবিষ্যদ্বাণী করেন?
ক) চন্দ্রগুপ্ত রাজ্য হারাবে
খ) চন্দ্রগুপ্ত বিশ্বজয় করবে
গ) চন্দ্রগুপ্ত রাজ্য উদ্ধার করবে এবং দিগ্বিজয়ী হবে
ঘ) চন্দ্রগুপ্ত সেনাপতি হবে

উত্তর: গ) চন্দ্রগুপ্ত রাজ্য উদ্ধার করবে এবং দিগ্বিজয়ী হবে

চন্দ্রগুপ্ত গল্পের হাতে কলমে প্রশ্ন উত্তর অষ্টম শ্রেণী বাংলা
Class 8 Bengali Chandrogupto Golper Proshno Uttor

১. চন্দ্রগুপ্ত নাট্যাংশ অবলম্বনে চন্দ্রগুপ্ত চরিত্রের পরিচয় দাও।

উত্তর: বিশিষ্ট নাট্যকার দ্বিজেন্দ্রলাল রায় রচিত একটি উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক নাটক হলো চন্দ্রগুপ্ত। আলোচ্য নাট্যাংশে চন্দ্রগুপ্ত চরিত্রের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়।

মগধের যুবরাজ:

চন্দ্রগুপ্ত মগধের সম্রাট মহাপদ্মনন্দর পুত্র, অর্থাৎ সে মগধের যুবরাজ। বৈমাত্রেয় ভাই ধননন্দ তাকে রাজ্য থেকে বঞ্চিত করলে, সে নিজের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য সংকল্প গ্রহণ করে।

সত্যবাদী ও স্পষ্টভাষী:

অ্যান্টিগোনাস চন্দ্রগুপ্তকে সন্দেহ করে সিকান্দরের (আলেকজান্ডার) সামনে নিয়ে এলে, সিকান্দর তাকে জিজ্ঞাসা করেন— “কি লিখছিলে যুবক? সত্য বলো।” উত্তরে চন্দ্রগুপ্ত নির্ভয়ে বলেন— “ভারতবাসী মিথ্যা কথা বলতে এখনো শেখেনি।” এরপর সে গ্রিক রণনীতি শেখার কথাও অকপটে স্বীকার করে সত্যবাদিতার পরিচয় দেয়।

কৃতজ্ঞতাবোধ:

সেলুকাস ছিলেন চন্দ্রগুপ্তের শিক্ষক। তাই যখন অ্যান্টিগোনাস সেলুকাসকে আক্রমণ করতে উদ্যত হয়, তখন চন্দ্রগুপ্ত দ্রুত তার আঘাত প্রতিহত করে গুরুকে রক্ষা করে। এ থেকে বোঝা যায় যে চন্দ্রগুপ্ত গুরুগৃহীত বিদ্যার প্রতি যথেষ্ট কৃতজ্ঞ।

সাহসী ও বীর:

সিকান্দর যখন চন্দ্রগুপ্তকে হত্যা করার নির্দেশ দেন, তখন চন্দ্রগুপ্ত বলে যে তাকে হত্যা না করে বন্দি করা হবে না। এমনকি এই প্রসঙ্গে সে গ্রিক সম্রাটকে কাপুরুষ বলতেও দ্বিধা করেনি। এতে তার অসীম সাহস ও বীরত্ব প্রকাশ পায়।

এইভাবে চন্দ্রগুপ্ত নাট্যাংশে চন্দ্রগুপ্ত চরিত্রের উজ্জ্বল বৈশিষ্ট্যগুলো ফুটে উঠেছে।

চন্দ্রগুপ্ত গল্পের হাতে কলমে প্রশ্ন উত্তর অষ্টম শ্রেণী বাংলা
Class 8 Bengali Chandrogupto Golper Proshno Uttor

আরও দেখো : ক্লাস 8 বাংলা প্রশ্নপত্র প্রথম ইউনিট টেস্ট 2025
CLOSE

You cannot copy content of this page