ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলা প্রবন্ধ রচনা: Class 3, 4, 5, 6, 7, 8, 9, 10

এখানে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সম্পর্কে বাংলা প্রবন্ধ রচনা লিখে দেওয়া হলো। আশাকরি বিভিন্ন শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা উপকৃত হবে।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলা প্রবন্ধ রচনা ১০০ শব্দে: Class 3 ও Class 4

নাম তাঁর ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তাঁর অগাধ পান্ডিত্যের কারণে তিনি ‘বিদ্যাসাগর’ নামে পরিচিত হন। বর্তমান পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে তাঁর জন্ম হয়। তাঁর বাবার নাম ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায় ও মায়ের নাম ভগবতী দেবী। চরম দারিদ্র্য ও দুঃখ-কষ্টের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরচন্দ্র লেখাপড়া শেখেন। ঈশ্বরচন্দ্র ছিলেন খুবই মাতৃভক্ত। তিনি নিজের সবকিছু দান করে অন্যের দুঃখ দূর করতেন। তাই তাঁর আর-এক নাম দয়ার- সাগর। ছোটোদের লেখাপড়া শেখার জন্য তিনি রচনা করেন ‘বর্ণপরিচয়’ বইটি। মেয়েদের লেখাপড়ার জন্য বিদ্যাসাগর বহু বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন। ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দে তিনি মারা যান। বাঙালিরা তাঁকে চিরকাল মনে রাখবে।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলা প্রবন্ধ রচনা ১৫০ শব্দে: Class 5 ও Class 6

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ছিলেন উনিশ শতকের এক মহান বাঙালি সমাজ সংস্কারক, শিক্ষাবিদ, এবং লেখক। ১৮২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে তাঁর জন্ম। তাঁর পিতার নাম ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মাতার নাম ভগবতী দেবী।

কলকাতার সংস্কৃত কলেজে অধ্যয়ন শেষে তিনি একই কলেজে অধ্যাপনা শুরু করেন। বিদ্যাসাগরের সমাজ সংস্কারের অন্যতম প্রধান অবদান ছিল বিধবা বিবাহ প্রচলন ও বহুবিবাহ প্রথার বিরোধিতা। তাঁর প্রচেষ্টায় ১৮৫৬ সালে ‘বিধবা বিবাহ আইন’ পাশ হয়। তিনি নারী শিক্ষার অগ্রগতিতে অসামান্য ভূমিকা পালন করেন এবং বাংলায় প্রথম মহিলা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। বিদ্যাসাগর দরিদ্রদের সাহায্যে উদার ছিলেন, এজন্য তাঁকে ‘দয়ার সাগর’ বলা হয়। তাঁর জীবন ছিল সেবা ও মানবকল্যাণের প্রতীক।

তিনি বহু গ্রন্থও রচনা করেন। তাঁর শ্রেষ্ঠ রচনাগুলির মধ্যে রয়েছে “শকুন্তলা” ও “সীতার বনবাস”। অন্যান্য গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য “বেতাল পঞ্চবিংশতি” এবং “ভ্রান্তিবিলাস”। শিশুদের জন্য তিনি লিখেছেন অনেক গ্রন্থ, যেমন “বর্ণ পরিচয়”, “বোধোদয়”, “কথামালা” ইত্যাদি।

১৮৯১ সালের ২৯ জুলাই, ৭০ বছর বয়সে বিদ্যাসাগর চিরবিদায় নেন। তাঁর চরিত্রের মহত্ব ও অবদান বাংলার ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। বিদ্যাসাগরের জীবন ও কর্ম আজও আমাদের প্রেরণা যোগায়।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলা প্রবন্ধ রচনা ২০০ শব্দে: Class 7 ও Class 8

ভূমিকা:

বাংলার ভূমিতে একাধিক মহাপুরুষ ও সমাজ সংস্কারক জন্মগ্রহণ করেছেন। তার মধ্যে অন্যতম হলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। তিনি শুধু বিদ্যারই সাগর ছিলেন না, তিনি ছিলেন করুণার সাগর, দয়ার সাগর।

জন্ম ও বংশ পরিচয়:

তিনি ১৮২০ সালে ২৬ শে সেপ্টেম্বর মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায়। তার মাতার নাম ভগবতী দেবী। তার আসল নাম ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়।

শিক্ষাজীবন:

তিনি পাঁচ বছর বয়সে গ্রামের পাঠশালায় ভর্তি হন। সেখানে পড়াশোনা শেষ করে সাড়ে আট বছর বয়সে বাবার সঙ্গে কলকাতায় চলে আসেন এবং কলকাতার সংস্কৃত কলেজে ভর্তি হন। ছেলেবেলা থেকেই তিনি খুব মেধাবী ছিলেন কিন্তু আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকার কারণে অনেক কষ্টে তাকে লেখাপড়া শিখতে হয়। রাস্তার ল্যাম্প পোস্টের নিচে বসেই তাকে পড়ালেখা করতে হতো। সংস্কৃত কলেজ থেকে তিনি “বিদ্যাসাগর” উপাধি লাভ করেন।

কর্মজীবন:

মাত্র ২১ বছর বয়সে পড়াশোনা শেষ করে তিনি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে প্রধান পাণ্ডিত্য লাভ করেন। এরপর সংস্কৃত কলেজে প্রথম সহ-সম্পাদক এবং পরে অধ্যক্ষের পদ লাভ করেন। এরপর তিনি সমাজ ও দেশের কাজে আত্মনিয়োগ করেন।

কৃতিত্ব:

বিধবা বিবাহ প্রচলন এবং নারী শিক্ষায় তার অবদান অনস্বীকার্য। তিনি বহু বিদ্যালয় স্থাপন করেন। তিনি ‘বর্ণপরিচয়’, ‘কথামালা’, ‘সীতার বনবাস’ ইত্যাদি রচনা করেছেন। গরিব-দুঃখীদের প্রতি তার অসীম দয়া ছিল। তাই তিনি “দয়ার সাগর” নামেও পরিচিত।

মৃত্যু:

তিনি ১৮৯১ সালে ২৯ শে জুলাই কলকাতায় পরলোক গমন করেন। তার স্মৃতির জন্য কলকাতায় বিদ্যাসাগর কলেজ ও বিদ্যাসাগর স্ট্রিট আছে।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলা প্রবন্ধ রচনা ৩০০ শব্দে: Class 9 ও Class 10

ভূমিকা:

বাংলার মাটিতে অনেক মহাপুরুষ ও সমাজ সংস্কারক জন্মগ্রহণ করেছেন, তাঁদের মধ্যে একজন হলেন ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্যই তিনি ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধি পান। এছাড়া, দরিদ্রদের সাহায্য করার জন্যও তিনি বিখ্যাত, তাই অনেকেই তাঁকে ‘দয়ার সাগর’ নামে জানেন।

জন্ম পরিচয়:

১৮২০ খ্রিস্টাব্দের ২৬শে সেপ্টেম্বর মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্ম হয়। তাঁর প্রকৃত নাম ছিল ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। পিতা ছিলেন ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মাতা ভগবতী দেবী।

শিক্ষাজীবন:

মাত্র চার বছর নয় মাস বয়সে পিতা-মাতা ঈশ্বরচন্দ্রকে গ্রামের একটি পাঠশালায় পড়াশোনার জন্য ভর্তি করেন। ১৮২৮ সালের নভেম্বর মাসে পাঠশালার শিক্ষা সমাপ্ত করে উচ্চশিক্ষার জন্য পিতার সঙ্গে কলকাতায় আসেন। পথে মাইলপোস্টের সংখ্যা গুনে গুনে গণিতের পাঠ নেন। ১৮২৯ সালে কলকাতার সরকারী সংস্কৃত কলেজে তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি হন এবং ১৮৩৯ সালে অলংকার পাঠ শেষ করেন। ১৮৪১ সালে কলেজের অধ্যাপক হিসেবে কর্মজীবনের সূচনা করেন।

কর্মজীবন:

মাত্র ২১ বছর বয়সে তিনি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে সংস্কৃত বিভাগে অধ্যাপনা শুরু করেন, বেতন ছিল ৩০ টাকা। পরে তিনি সংস্কৃত কলেজের সহকারী সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারিদের সঙ্গে মতবিরোধের কারণে পরবর্তীকালে তিনি সেই চাকরি থেকে ইস্তফা দেন এবং বিভিন্ন পুস্তক লেখার পাশাপাশি সমাজ সংস্কারমূলক কাজ করতে শুরু করেন। দরিদ্রদের সাহায্যের জন্য তিনি সর্বদাই এগিয়ে আসতেন, যার ফলে তাঁকে ‘দয়ার সাগর’ নামে অভিহিত করা হতো।

সমাজকল্যাণমূলক কাজ:

আঠারো শতকে প্রচলিত কুপ্রথা নিবারণ এবং সমাজ সংস্কারমূলক কাজের ক্ষেত্রে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। তিনি মনে করতেন নারীদের শিক্ষিত এবং যোগ্য সম্মান না দিলে সমাজের উন্নতি সম্ভব নয়। তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগে ১৮৫৮ সালে ৩৫টি নারী শিক্ষার বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এছাড়া, বাল্যবিবাহ রোধ এবং বিধবা পুনর্বিবাহ প্রচলনে তাঁর বিশেষ অবদান রয়েছে। ১৮৫৬ সালে তাঁর প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ বিধবা পুনর্বিবাহ আইন পাশ হয়।

গ্রন্থ রচনা:

নিজের স্বাধীন জীবিকা হিসাবে তিনি বই লিখতে শুরু করেন। তিনি বাংলার গদ্যের জনক এবং প্রথম বাংলা ভাষার যাত্রা শিল্পী। তাঁর শ্রেষ্ঠ রচনা হল ‘শকুন্তলা’ ও ‘সীতার বনবাস’। শিশুদের জন্যও তিনি অনেক গ্রন্থ রচনা করেছেন, যেমন ‘বর্ণপরিচয়’, ‘বোধোদয়’, ‘কথামালা’ ইত্যাদি।

উপসংহার:

কালের নিয়মে এই মহান ব্যক্তিত্বের জীবনাবসান ঘটে। ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দের ২৯ শে জুলাই তিনি চিরবিদায় নেন, এবং বাঙালি জাতি হারায় তার সর্বকালের এক শ্রেষ্ঠ সন্তান।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলা প্রবন্ধ রচনা ৫০০ শব্দে

“বীরসিংহের সিংহ শিশু বিদ্যাসাগর বীর
উদ্বেলিত দয়ার সাগর বীর্য্যে সুগম্ভীর।”

—–সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত

ভূমিকা:

আমাদের অস্বীকার করার উপায় নেই যে আত্ম-দ্বন্দ্বে লিপ্ত, দুর্বল, কর্মবিমুখ, স্বার্থপর, তমসিকতার অন্ধকারে নিমজ্জিত বাঙালির মধ্যে বিদ্যাসাগরের মতো তেজোদীপ্ত, ঋজু মেরুদণ্ডবিশিষ্ট মানুষের আবির্ভাব একটি ঐতিহাসিক ঘটনা।

জন্ম ও পারিবারিক পরিবেশ:

১৮২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর মেদিনীপুর জেলার অন্তর্গত বীরসিংহ গ্রামে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। তাঁর প্রকৃত নাম ছিল ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। মনুষ্যত্বের মহৎ উত্তরাধিকার নিয়ে তিনি আবির্ভূত হন।

শিক্ষা জীবন:

বিদ্যাসাগর ছেলেবেলা থেকেই ছিলেন মেধাবী। খুব অল্প বয়সেই তিনি আমোদ পাঠশালায় ভর্তি হন, তখন তিনি ছিলেন ন’বছরের বালক। এরপর কলকাতার সংস্কৃত কলেজে ভর্তি হন। যদিও তিনি দারিদ্র্য জন্মসূত্রে লাভ করেছিলেন, তা কখনোই তাঁর শিক্ষার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। দারিদ্র্যকে অগ্রাহ্য করে তিনি প্রতিটি পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে প্রথম স্থান অধিকার করতেন। পুরস্কার হিসেবে তিনি পেতেন বৃত্তি। ১৮৪০ সালে বিদ্যাচর্চার ক্ষেত্রে অসামান্য সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধি লাভ করেন। এ সময়ে তিনি সংস্কৃত ভাষায় অগাধ পাণ্ডিত্য অর্জন করেন এবং ইংরেজি ভাষাতেও দক্ষতা লাভ করেন।

কর্মজীবন:

১৮৪১ সালে সংস্কৃত কলেজে শিক্ষা সমাপ্তির পর, সেই বছরই মাত্র ২১ বছর বয়সে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের বাংলা বিভাগের সেরেস্তাদার ও প্রধান পণ্ডিতের পদে যোগ দেন। বেতন ছিল মাসে ৫০ টাকা। ১৮৪৬ সালের ৬ এপ্রিল একই বেতন হারে সংস্কৃত কলেজের সরকারি সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ফোর্ট উইলিয়ামের কাজ থেকে ইস্তফা দিয়ে সংস্কৃত কলেজে সাহিত্যের অধ্যাপকের পদ গ্রহণ করেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারকও। তিনি সর্বদা দরিদ্র ও অসহায় মানুষের সাহায্যে এগিয়ে যেতেন, এজন্য তাঁকে ‘দয়ার সাগর’ নামে ডাকা হতো।

সমাজ কল্যাণমূলক কাজ:

আঠারোশো শতকের সমাজে প্রচলিত কুপ্রথা নিবারণ ও সমাজ সংস্কারের ক্ষেত্রে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে নারীদের শিক্ষিত না করলে এবং তাঁদের যোগ্য সম্মান না দিলে সমাজের উন্নতি সম্ভব নয়। এই কারণে, পরবর্তীকালে তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগে ১৮৫৮ সালের মধ্যে বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে, যেমন নদীয়া, বর্ধমান, হুগলী, মেদিনীপুর জেলায় ৩৫টি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৬৪ সালের মধ্যে বাংলায় বালিকা বিদ্যালয়ের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৮৮টিতে।

বিদ্যাসাগরের সমাজ সংস্কারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর মধ্যে ছিল বিধবা বিবাহ প্রচলন। সেই সময়ে খুব কম বয়সেই মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হত, যেখানে পুরুষদের বয়সের কোনো বিচার হতো না। পুরুষদের বহুবিবাহও প্রচলিত ছিল। একজন পুরুষের মৃত্যুতে বহু অল্পবয়সী মেয়েরা বিধবা হতো। অল্পবয়সী এই বিধবাদের কষ্ট সহ্য করতে পারেননি বিদ্যাসাগর। বিধবা বিবাহ প্রচলনের উদ্দেশ্যে তিনি আন্দোলন শুরু করেন। চারিদিকে প্রবল বাধার সম্মুখীন হলেও, ১৮৫৬ সালে বিধবা বিবাহ আইন পাশ হয়। তিনি পুরুষদের বহুবিবাহ ও বাল্যবিবাহের ঘোরতর বিরোধী ছিলেন। তাঁর সমাজ সংস্কারের আন্দোলন বাঙালি সমাজে এক নতুন যুগের সূচনা করেছিল।

গ্রন্থ রচনা:

নিজস্ব স্বাধীন জীবিকা হিসেবে তিনি বই লিখতে শুরু করেছিলেন এবং ইনি বাংলার গদ্যের জনক। তিনি প্রথম “বাংলা ভাষার যথার্থ শিল্পী” হিসেবে পরিচিত। তাঁর শ্রেষ্ঠ রচনাগুলির মধ্যে রয়েছে “শকুন্তলা” ও “সীতার বনবাস”। অন্যান্য গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য “বেতাল পঞ্চবিংশতি” এবং “ভ্রান্তিবিলাস”। শিশুদের জন্য তিনি লিখেছেন অনেক গ্রন্থ, যেমন “বর্ণ পরিচয়”, “বোধোদয়”, “কথামালা” ইত্যাদি।

উপসংহার:

বিদ্যাসাগরের চরিত্রের মাহাত্ম্য উল্লেখ করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন –

“তিনি নবীন ছিলেন এবং চিরযৌবনের অভিষেক লাভ করে বলশালী হয়েছিলেন। তাঁর এই নবীনতাই আমাদের কাছে সবচেয়ে পূজনীয়, কারণ তিনি আমাদের দেশে চলার পথ প্রস্তুত করে গেছেন।”

কালের নিয়মে একদিন এই মহাপুরুষের প্রাণশক্তি ফুরিয়ে এল। অবশেষে এল মহা অস্থানের দিন, ১৮৯১ সালের ২৯ জুলাই তিনি চিরবিদায় নিলেন। বাংলার মানুষ হারালো তার সর্বকালের এক শ্রেষ্ঠ সন্তানকে। যদিও তিনি আজ আমাদের মধ্যে নেই, তাঁর আদর্শ আজও অনির্বাণ হয়ে আছে।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলা প্রবন্ধ রচনা: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর জয়ন্তী ভাষণ

আজ এক মহামানবের জন্মদিবসে শ্রদ্ধা জানাতে আমরা এখানে সমবেত হয়েছি। প্রথমেই উপস্থিত প্রধান শিক্ষক মহাশয়, আমার সহকর্মীদের যথাযোগ্য সম্মান জানাচ্ছি এবং স্নেহের ছাত্র-ছাত্রীদের আমার আন্তরিক শুভকামনা জানাচ্ছি।

আজ ২৬শে সেপ্টেম্বর, বাংলার নবজাগরণের অন্যতম পথিকৃৎ, বাংলা গদ্যের জনক এবং আধুনিক শিক্ষার রূপকার মহামহীয়ান ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মবার্ষিকী। ১৮২০ সালের ২৬শে সেপ্টেম্বর মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে তাঁর জন্ম হয়। তাঁর পিতা ছিলেন ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মাতা ভগবতী দেবী। সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য ১৮৪১ সালে সংস্কৃত কলেজ থেকে তিনি ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধি লাভ করেন।

বাংলা গদ্যের প্রথম সার্থক রূপকার তিনিই। তাঁকে “বাংলা গদ্যের প্রথম শিল্পী” বলে অভিহিত করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর লেখা উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলির মধ্যে রয়েছে ‘বর্ণপরিচয়,’ ‘বোধদয়,’ ‘কথামালা’ ইত্যাদি। বিদ্যাসাগর ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক, যিনি বিধবা বিবাহ ও নারী শিক্ষার প্রচলন, এবং বহুবিবাহ ও বাল্যবিবাহের মতো সামাজিক অভিশাপ দূরীকরণের জন্য অক্লান্ত সংগ্রাম করেছেন। এজন্য তিনি আজও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয়। বিদ্যাসাগর সর্বদা দরিদ্রদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসতেন, এজন্য তাঁকে ‘দয়ার সাগর’ নামে ডাকা হতো।

কিন্তু কালের নিয়মে একদিন এই মহামানবের প্রাণশক্তি ফুরিয়ে আসে। অবশেষে, ১৮৯১ সালের ২৯শে জুলাই তিনি চিরবিদায় নেন। বাংলার মানুষ হারালো তার সর্বকালের এক শ্রেষ্ঠ সন্তানকে।

আরও অন্যান্য রচনা দেখুন
বিশ্ব উষ্ণায়ন প্রবন্ধ রচনা

1 thought on “ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলা প্রবন্ধ রচনা: Class 3, 4, 5, 6, 7, 8, 9, 10”

Leave a Comment

CLOSE

You cannot copy content of this page