সুভা গল্পের প্রশ্ন উত্তর / অষ্টম শ্রেণী বাংলা / রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

এখানে ক্লাস ৮ এর বাংলা সুভা গল্পের প্রশ্ন উত্তর শেয়ার করা হলো। অষ্টম শ্রেণী বাংলা সুভা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

Class VIII বাংলা
সুভা গল্পের হাতেকলমে প্রশ্ন উত্তর

১. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাও।

১.১ জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি থেকে প্রকাশিত কোন্ পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথ নিয়মিত লিখতেন?

উত্তর: জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি থেকে প্রকাশিত ‘ভারতী’ ও ‘বালক’ পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিয়মিত লিখতেন।

১.২ ভারতের কোন্ প্রতিবেশী দেশে তাঁর লেখা গান জাতীয় সংগীত হিসেবে গাওয়া হয়?

উত্তর: ভারতের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটি জাতীয় সংগীত হিসেবে গাওয়া হয়।

২. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো।

২.১ সুভার প্রকৃত নাম কী?

উত্তর: সুভার প্রকৃত নাম সুভাষিণী।

২.২ সুভার বাবা কে?

উত্তর: সুভার বাবা চণ্ডীপুর গ্রামের সম্পন্ন কৃষক বাণীকণ্ঠ।

২.৩ সুভা কোন্ গ্রামে বাস করত?

উত্তর: সুভা চণ্ডীপুর গ্রামে বাস করত।

২.৪ গল্পে সুভার কোন্ কোন্ বন্ধুর কথা রয়েছে?

উত্তর: গল্পে সুভার বন্ধু গাভী সর্বশী ও পাঙ্গুলির কথা রয়েছে।

২.৫ কে সুভাকে ‘সু’ বলে ডাকত?

উত্তর: গোঁসাইদের ছোটো ছেলে প্রতাপ সুভাকে ‘সু’ বলে ডাকত।

৩. নীচের প্রশ্নগুলির সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও।

৩.১ “সে নির্জন দ্বিপ্রহরের মতো শব্দহীন এবং সঙ্গীহীন”— সুভা সম্পর্কে এ রকম উপমা লেখক ব্যবহার করেছেন কেন?

উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘সুভা’ গল্পে বোবা বালিকা সুভাষিণীর নিঃসঙ্গতা ও নীরবতাকে ফুটিয়ে তুলতে এই উপমাটি ব্যবহার করেছেন। জন্ম থেকেই বাকশূন্য সুভার মনের ভাব প্রকাশের একমাত্র ভাষা ছিল তার বড় বড় চোখের দৃষ্টি। তার এই গভীর দৃষ্টি ও নীরবতা অনেকটা নির্জন দুপুরের মতোই ছিল— যেখানে শব্দ নেই, সঙ্গীও নেই। তাই লেখক সুভাকে ‘শব্দহীন’ ও ‘সঙ্গীহীন’ নির্জন দ্বিপ্রহরের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

৩.২ চণ্ডীপুর গ্রামের বর্ণনা দাও।

উত্তর: ‘সুভা’ গল্পে চণ্ডীপুর গ্রামের এক পাশে বয়ে চলেছে একটি সরু নদী। নদীর দু’পারে গাছপালায় ঘেরা উঁচু তটভূমি ও লোকালয় বিস্তৃত। নদীর কলধ্বনি, মাঝিদের গান, মানুষের কোলাহল, পাখির ডাক ও গাছের মর্মরধ্বনি মিলিয়ে গ্রামটি ছিল অত্যন্ত প্রাণবন্ত ও চঞ্চল।

৩.৩ সুভার সঙ্গে সর্বশী ও পাঙ্গুলির সম্পর্ক কীরকম ছিল?

উত্তর: সুভার সঙ্গে তার বাড়ির দুটি গাভী সর্বশী ও পাঙ্গুলির গভীর বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল। মানুষের চেয়ে তারা সহজেই সুভার দৃষ্টির ভাষা বুঝত— সে কখন আদর করছে, ভর্ৎসনা করছে বা মিনতি করছে তা তারা অনুভব করত। দিনের মধ্যে সুভা নিয়মিত তিনবার গোয়ালঘরে গিয়ে তাদের আদর করত, আর তারা গা ঘেঁষে এসে তাকে সান্ত্বনা দিত। মানুষের পরিবর্তে এই দুই গাভীই হয়ে উঠেছিল সুভার প্রকৃত অন্তরঙ্গ বন্ধু।

৩.৪ “এইজন্য প্রতাপ সুভার মর্যাদা বুঝিত”— প্রতাপের কাছে সুভা কীভাবে মর্যাদা পেত, তা গল্প অবলম্বনে লেখো।

উত্তর: গোঁসাইদের অকর্মণ্য ছেলে প্রতাপ ছিপ ফেলে মাছ ধরতেই সবচেয়ে বেশি সময় কাটাত। মাছ ধরার সময় সে এমন সঙ্গী চাইত যে কথা বলে বিরক্ত না করে পাশে থাকতে পারে। তাই বোবা মেয়ে সুভাই ছিল তার শ্রেষ্ঠ সঙ্গী। এজন্য প্রতাপ তাকে বিশেষ মর্যাদা দিত এবং আদর করে ‘সু’ বলে ডাকত।

৩.৫ “তাহাদের জাতি ও পরকাল রক্ষা হইল।”— কাদের সম্পর্কে এ কথা লেখক বলেছেন? তাঁর এরূপ মন্তব্যের কারণ বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: প্রশ্নে উল্লিখিত অংশটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সুভা’ গল্প থেকে গৃহীত। এখানে ‘তাহাদের’ বলতে সুভার পিতা বাণীকণ্ঠ ও মাকে বোঝানো হয়েছে।

লেখকের এই মন্তব্যের কারণ হলো— বোবা মেয়ে সুভা তার পিতা-মাতার কাছে ছিল এক বিরাট দুশ্চিন্তার কারণ। যদিও সুভা অনুভব করতে পারত, তবে কথা বলতে না পারায় সকলে তাকে বোঝত না। সুভার বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার বিয়ে না হওয়া নিয়ে পিতা-মাতার ভয় ও চিন্তা আরও বাড়তে লাগল। গ্রামের লোকেরা নানা বিদ্রূপ ও সমালোচনা করতে শুরু করল, এমনকি একঘরে করার হুমকিও শোনা গেল।
অবশেষে সুভার প্রবল অনিচ্ছা সত্ত্বেও পিতা-মাতা তাকে গ্রাম থেকে সরিয়ে কলকাতায় নিয়ে গিয়ে বিয়ে দিলেন। এর ফলে তারা সমাজের নিন্দা থেকে মুক্তি পেলেন।
সুতরাং, “তাহাদের জাতি ও পরকাল রক্ষা হইল”— এই বাক্যে লেখক গ্রামীণ সমাজের অন্ধ রীতি, কুসংস্কার এবং অমানবিক মানসিকতার প্রতি তীব্র ব্যঙ্গ ও প্রতিবাদ প্রকাশ করেছেন।

ক্লাস ৮ বাংলা
সুভা গল্পের হাতেকলমে প্রশ্ন উত্তর

৪. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো।
৪.১ “প্রকৃতি যেন তাহার ভাষার অভাব পূরণ করিয়া দেয়।”— মানুষের ভাষার অভাব কীভাবে প্রকৃতি পূরণ করতে পারে, তা আলোচনা করো।

উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘সুভা’ গল্পে লেখক এই মন্তব্য করেছেন। বোবা বালিকা সুভার মুখে ভাষা না থাকলেও তার অভাব প্রকৃতি নানাভাবে পূরণ করেছে। নদীর কলকল শব্দ, মানুষের কোলাহল, মাঝির গান, পাখির ডাক, গাছের পাতার মর্মরধ্বনি—এসব মিলেমিশে সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো সুভার মনের উপকূলে এসে আছড়ে পড়ে।

প্রকৃতির এই বিচিত্র শব্দকেই লেখক ‘বোবার ভাষা’ বলেছেন। সুভার বড়ো বড়ো কালো চোখের ভাষার সঙ্গে মিল খুঁজে প্রকৃতির নীরব অথচ গভীর প্রকাশকে রবীন্দ্রনাথ বিশেষভাবে চিহ্নিত করেছেন। মানুষ সুভাকে উপেক্ষা করলেও প্রকৃতি তাকে আপন করে কাছে টেনে নিয়েছে।

৪.২ সুভার সঙ্গে মনুষ্যেতর প্রাণীর বন্ধুত্ব কেমন ছিল, তা লেখো।

উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘সুভা’ গল্পে বোবা বালিকা সুভার সঙ্গে মানুষের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তেমনভাবে গড়ে ওঠেনি। কিন্তু গোয়ালঘরের দুটি গাভি—সর্বশী ও পাঙ্গুলির সঙ্গে তার এক আন্তরিক বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে।
সুভা তাদের মুখে নাম ধরে ডাকতে না পারলেও তার পায়ের শব্দেই তারা তার উপস্থিতি টের পেত। সুভার স্নেহ, শাসন বা মমতা তারা স্পষ্টভাবে অনুভব করত। প্রতিদিন সুভা তাদের কাছে যেত, আদর করত এবং দুঃখ-কষ্টে সান্ত্বনা খুঁজতে তাদের কাছে উপস্থিত হত। গাভি দুটিও যেন তার বোবা মনের ভাষা বুঝে সান্ত্বনা দিত।
এ ছাড়া ছাগল ও বিড়ালছানাও সুভার প্রতি আনুগত্য দেখাত। বিশেষত একটি বিড়ালছানা সবসময় সুভার কোলে উঠে ঘুমোতে চাইত। তবে সুভার সবচেয়ে গভীর বন্ধুত্ব ছিল সর্বশী ও পাঙ্গুলির সঙ্গেই।

৪.৩ শুক্লা দ্বাদশীর রাত্রিতে সুভার মনের অবস্থা কেমন ছিল? তার মনের অবস্থা এরকম হওয়ার কারণ কী?

উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘সুভা’ গল্পে শুক্লা দ্বাদশীর রাতে সুভা ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসে চিরপরিচিত নদীর পাড়ে নরম ঘাসের বিছানায় লুটিয়ে পড়ে। সে যেন ধরিত্রীকে আঁকড়ে ধরে বলতে চাইছিল— তাকে যেন গ্রাম ছাড়তে না হয়।

কারণ, সুভা বুঝতে পেরেছিল যে তার অভিভাবকেরা তার বিয়ে দিতে চাইছেন। অথচ সে গ্রামের প্রকৃতি, নদী, পোষ্য প্রাণী এবং শৈশব-কৈশোরের খেলার সঙ্গীদের অশেষ মায়ায় বাঁধা পড়েছিল। তাই তাকে গ্রাম ছাড়তে হবে এই চিন্তাতেই তার মনের গভীর যন্ত্রণা প্রকাশ পেয়েছিল।

৪.৪ গল্পের একেবারে শেষ বাক্যটি গল্পের ক্ষেত্রে কতখানি প্রয়োজন আলোচনা করো।

উত্তর: ‘সুভা’ গল্পের শেষ বাক্যটি হলো— “এবার তাহার স্বামী চক্ষু এবং কর্ণেন্দ্রিয়ের দ্বারা পরীক্ষা করিয়া এক ভাষাবিশিষ্টা কন্যা বিবাহ করিয়া আনিল।”
কলকাতায় এসে সুভার বিয়ে হয়, কিন্তু শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে বোঝা গেল সে কথা বলতে পারে না। নববধূর চোখের ভাষা বা অন্তরের বেদনা কেউই বুঝতে পারল না। যে পাত্র তাকে কান্না দেখে খুশি হয়ে বিয়ে করেছিল, সেও পরে তার মনের কথা অনুধাবন করতে পারেনি। তাই দ্বিতীয়বারে সে এমন কন্যাকেই বিয়ে করল, যে কথা বলতে পারে।
এই শেষ বাক্যের মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ সমাজে নারীর প্রতি হেয় দৃষ্টিভঙ্গি এবং বহমান কুসংস্কারকে ব্যঙ্গাত্মকভাবে তুলে ধরেছেন। তাই গল্পের মূল বক্তব্য স্পষ্ট করতে শেষ বাক্যটির গুরুত্ব অপরিসীম।

৪.৫ মানুষ ও মনুষ্যেতর প্রাণীর বন্ধুত্ব নিয়ে আরও দু-একটি গল্পের নাম লেখো এবং ‘সুভা’ গল্পটির সঙ্গে তুলনা করো।

উত্তর: ‘সুভা’ গল্প ছাড়াও মানুষ ও মনুষ্যেতর প্রাণীর বন্ধুত্বের ছবি পাওয়া যায়—

(i) তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কালাপাহাড়’ গল্পে কৃষক রংলালের মহিষের প্রতি ভালোবাসা,
(ii) প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের ‘আদরিণী’ গল্পে জয়রাম মুখোপাধ্যায়ের হাতির প্রতি স্নেহ,
(iii) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘মহেশ’ গল্পে আমিনা ও তার বাবার ষাঁড় মহেশের প্রতি টান।

এই গল্পগুলিতে যেমন প্রাণী ও মানুষের গভীর মমত্ব প্রকাশ পেয়েছে, তেমনি ‘সুভা’ গল্পেও বোবা বালিকা সুভার সঙ্গে গাভি সর্বশী ও পাঙ্গুলির নিবিড় বন্ধুত্ব একই ধারাকে উজ্জ্বল করেছে। তবে সুভার ক্ষেত্রে এই বন্ধুত্ব ছিল মানুষের অবহেলার ফলে মনের আশ্রয় খোঁজার একান্ত প্রয়াস।

৫. নীচের বাক্যগুলিকে কর্তা-খণ্ড ও ক্রিয়া-খণ্ডে ভাগ করে দেখাও।

৫.১ সে নির্জন দ্বিপ্রহরের মতো শব্দহীন এবং সঙ্গীহীন।

উত্তর: কর্তাখণ্ড – সে
ক্রিয়াখণ্ড – নির্জন দ্বিপ্রহরের মতো শব্দহীন এবং সঙ্গীহীন

৫.২ সে যে কাজকর্ম করিয়া সংসারের উন্নতি করিতে যত্ন করিবে, বহু চেষ্টার পর বাপ-মা সে আশা ত্যাগ করিয়াছেন।

উত্তর: কর্তাখণ্ড – সে
ক্রিয়াখণ্ড – ত্যাগ করিয়াছেন

নির্ভরশীল বাক্য – যে কাজকর্ম করিয়া সংসারের উন্নতি করিতে যত্ন করিবে

স্বাধীন বাক্য – বহু চেষ্টার পর বাপ-মা সে আশা ত্যাগ করিয়াছেন

৫.৩ এই বাক্যহীন মনুষ্যের মধ্যে বৃহৎ প্রকৃতির মতো একটা বিজন মহত্ত্ব আছে।

উত্তর: কর্তাখণ্ড – এই বাক্যহীন মনুষ্যের মধ্যে
ক্রিয়াখণ্ড – বৃহৎ প্রকৃতির মতো একটা বিজন মহত্ত্ব আছে

৬. নির্দেশ অনুসারে বাক্য পরিবর্তন করো।

৬.১ সুভা তেঁতুলতলায় বসিয়া থাকিত এবং প্রতাপ অনতি দূরে মাটিতে ছিপ ফেলিয়া জলের দিকে চাহিয়া থাকিত। (জটিল বাক্য)

উত্তর: সুভা যখন তেঁতুলতলায় বসিয়া থাকিত, তখন প্রতাপ অনতিদূরে মাটিতে ছিপ ফেলিয়া জলের দিকে চাহিয়া থাকিত।

৬.২ বাণীকণ্ঠ নিদ্রা হইতে উঠিয়া শয়নগৃহে তামাক খাইতেছিল। (জটিল বাক্য)

উত্তর: বাণীকণ্ঠ যখন নিদ্রা হইতে উঠিল, তখন শয়নগৃহে তামাক খাইতে লাগিল।

৬.৩ বাণীকন্ঠের ঘর একেবারে নদীর উপরেই। তাহার বাখারির বেড়া, আটচালা, গোয়ালঘর, ঢেঁকিশালা, খড়ের স্তূপ, তেঁতুলতলা, আম, কাঁঠাল এবং কলার বাগান নৌকোবাহী মাত্রেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করে। (জটিল বাক্য)

উত্তর: বাণীকন্ঠের ঘর যেহেতু একেবারে নদীর উপরেই, তাই তাহার বাখারি বেড়া, আটচালা, গোয়ালঘর, ঢেঁকিশালা, খড়ের স্তুপ, তেঁতুলতলা, আম, কাঁঠাল এবং কলার বাগান নৌকোবাহী মাত্রেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

৬.৪ প্রকৃতি যেন তাহার ভাষার অভাব পূরণ করিয়া দেয়। যেন তাহার হইয়া কথা কয়। (সরল বাক্য)

উত্তর: প্রকৃতি যেন তাহার ভাষার অভাব পূরণ করিয়া দিয়া তাহার হইয়া কথা কয়।

৭. শূন্যস্থান পূরণ করো: (প্রথমটির দুটি করে উদাহরণ দেওয়া আছে)

অনু + ভাব = অনুভব
অনু + দান = অনুদান

৭.১ অনু

উত্তর: অনুদান
উত্তর: অনুস্বর

৭.২ প্র

উত্তর: প্রবাদ
উত্তর: প্রমাণ
উত্তর: প্রলেপ

৭.৩ উত্তর: দিক + বিদিক = দিগ্বিদিক

৭.৪ উত্তর: গৃহস্থ > গেরস্ত

৭.৫ উত্তর: পঞ্জিকা > পাঁজি

ক্লাস ৮ বাংলা
সুভা গল্পের অতিরিক্ত MCQ প্রশ্ন উত্তর

১. সুভার আসল নাম কী ছিল?
ক) সুহাসিনী
খ) সুকেশিনী
গ) সুভাষিণী
ঘ) সুভা

উত্তর: গ) সুভাষিণী

২. সুভা কেন কথা বলতে পারত না?
ক) সে অসুস্থ ছিল
খ) সে জন্মান্ধ ছিল
গ) সে বোবা ছিল
ঘ) সে লাজুক ছিল

উত্তর: গ) সে বোবা ছিল

৩. সুভার বাবা কে ছিলেন?
ক) প্রতাপ
খ) বাণীকণ্ঠ
গ) গোঁসাই
ঘ) সর্বশী

উত্তর: খ) বাণীকণ্ঠ

৪. সুভার মা কেমন মনে করতেন তাকে?
ক) আশীর্বাদ
খ) গৃহশ্রী
গ) কলঙ্ক
ঘ) সৌভাগ্যের প্রতীক

উত্তর: গ) কলঙ্ক

৫. সুভার চোখ কেমন ছিল?
ক) ছোটো ও কুচকুচে কালো
খ) ডাগর ও কালো
গ) লালচে ও জ্বালাময়ী
ঘ) অশ্রুতে ভরা

উত্তর: খ) ডাগর ও কালো

৬. সুভাকে গ্রামে সবাই কেমনভাবে দেখত?
ক) ভয় পেত
খ) স্নেহ করত
গ) অবজ্ঞা করত
ঘ) খেলা করত

উত্তর: ক) ভয় পেত

৭. সুভার গ্রামের নাম কী?
ক) সুন্দরপুর
খ) শান্তিপুর
গ) চণ্ডীপুর
ঘ) কাশীপুর

উত্তর: গ) চণ্ডীপুর

৮. সুভার প্রধান সঙ্গী কোনটি ছিল?
ক) নদী
খ) প্রতাপ
গ) গাভী
ঘ) মা

উত্তর: ক) নদী

৯. সুভার দুই গাভীর নাম কী?
ক) পূর্ণা ও পদ্মা
খ) সর্বশী ও পাঙ্গুলি
গ) গৌরী ও কুমুদি
ঘ) পাঙ্গুলি ও প্রতাপী

উত্তর: খ) সর্বশী ও পাঙ্গুলি

১০. প্রতাপ কে ছিলেন?
ক) সুভার দাদা
খ) সুভার ভাই
গ) গোঁসাইদের ছেলে
ঘ) গ্রামের পুরোহিত

উত্তর: গ) গোঁসাইদের ছেলে

ক্লাস ৮ বাংলা
সুভা গল্পের অতিরিক্ত MCQ প্রশ্ন উত্তর

১১. প্রতাপ সুভাকে কী নামে ডাকত?
ক) সুভা
খ) সুহাসিনী
গ) সু
ঘ) বোবা

উত্তর: গ) সু

১২. প্রতাপের প্রধান শখ কী ছিল?
ক) কবিতা লেখা
খ) মাছ ধরা
গ) গান গাওয়া
ঘ) নৌকা বাইচ

উত্তর: খ) মাছ ধরা

১৩. সুভার মা তাকে কনে সাজাতে গিয়ে কী ব্যবহার করেছিলেন?
ক) মুক্তার মালা
খ) জরির ফিতা
গ) লাল শাড়ি
ঘ) রূপার গহনা

উত্তর: খ) জরির ফিতা

১৪. কনে দেখার সময় পাত্র সুভাকে দেখে কী মন্তব্য করেছিলেন?
ক) “খুব সুন্দর।”
খ) “ভালো না।”
গ) “মন্দ নহে।”
ঘ) “চমৎকার।”

উত্তর: গ) “মন্দ নহে।”

১৫. সুভার স্বামী কোথায় কাজ করত?
ক) পূর্বে
খ) পশ্চিমে
গ) দক্ষিণে
ঘ) উত্তরে

উত্তর: খ) পশ্চিমে

১৬. বিয়ের পর কতদিনে সবাই বুঝল সুভা বোবা?
ক) একদিনে
খ) তিন দিনে
গ) সপ্তাহখানেকের মধ্যে
ঘ) মাসখানেকের মধ্যে

উত্তর: গ) সপ্তাহখানেকের মধ্যে

১৭. সুভার বিয়ের জন্য কোথায় যাওয়া হয়েছিল?
ক) কলকাতা
খ) বর্ধমান
গ) মেদিনীপুর
ঘ) মুর্শিদাবাদ

উত্তর: ক) কলকাতা

১৮. সুভা বিদায়ের আগে গরুগুলিকে কী করেছিল?
ক) খাওয়ায়নি
খ) দূরে ঠেলে দিয়েছিল
গ) আদর করে খাইয়েছিল
ঘ) তাদের বেঁধে রেখেছিল

উত্তর: গ) আদর করে খাইয়েছিল

১৯. কাকে দেখে সুভা নিজের মতো একাকী মনে করত?
ক) প্রতাপকে
খ) নদীকে
গ) পূর্ণিমার চাঁদকে
ঘ) প্রকৃতিকে

উত্তর: ঘ) প্রকৃতিকে

২০. গল্পের মূল সুর কী?
ক) প্রেম ও রোমাঞ্চ
খ) সামাজিক অবিচার ও করুণ পরিণতি
গ) গ্রামীণ জীবনের আনন্দ
ঘ) হাস্যরস

উত্তর: খ) সামাজিক অবিচার ও করুণ পরিণতি

ক্লাস ৮ বাংলা
সুভা গল্পের অতিরিক্ত প্রশ্ন উত্তর

১. সুভা গল্পে সুভার পারিবারিক পরিচয় দাও।

উত্তর: রবীন্দ্রনাথের লেখা ‘সুভা’ গল্পে সুভা বাণীকণ্ঠের কনিষ্ঠ কন্যা। তার দুই দিদির নাম সুকেশিনী ও সুহাসিনী। তাদের নামের সাথে মিল রেখেই ছোট মেয়ের নাম রাখা হয় সুভাষিণী। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে সুভা জন্মগতভাবে বোবা ছিল। তাই সবাই তাকে সংক্ষেপে সুভা বলে ডাকত। সে ছিল বাবার স্নেহের ধন, যদিও মা তাকে গর্ভের কলঙ্ক মনে করতেন।

২. সুভার নাম সুভাষিণী দেওয়ার কারণ কী? গল্পে সুভার কোন্ কোন্ বন্ধুর নাম উল্লেখ আছে?

উত্তর: সুভার দুই দিদি সুকেশিনী ও সুহাসিনীর নামের সাথে মিল রেখে তার নাম রাখা হয় সুভাষিণী। সকলে সংক্ষেপে তাকে সুভা বলে ডাকত। তার বন্ধু প্রতাপ স্নেহভরে তাকে সু বলে ডাকত।
গল্পে সুভার দুই অন্তরঙ্গ বন্ধু ছিল দুটি গাভি—সর্বশী ও পাঙ্গুলি। এছাড়া ছাগল ও বিড়ালছানা তার অনুগত সঙ্গী ছিল। মনুষ্যভাষী একমাত্র বন্ধু ছিল গোঁসাইদের ছোট ছেলে প্রতাপ।

৩. ‘সুভা’ গল্পে সুভার দুই বোন, বাবা ও মা সম্পর্কে প্রাথমিক কী কী পরিচয় দেওয়া হয়েছে?

উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সুভা’ গল্পে সুভা একজন বোবা মেয়ে, যার ডাকনাম সুভা ও আসল নাম সুভাষিণী। তার দুই দিদির নাম যথাক্রমে সুকেশিনী ও সুহাসিনী। দুই দিদির বিয়ে ভালো পাত্র খুঁজে যথেষ্ট ধুমধামের সাথে হয়েছিল। কিন্তু সুভার ক্ষেত্রে বাবা-মা চিন্তিত ছিলেন, কারণ সে বোবা। তার মা তাকে নিজের গর্ভের অভিশাপ মনে করতেন, আর বাবা বাণীকণ্ঠ তাকে অন্য মেয়েদের তুলনায় আরও বেশি ভালোবাসতেন।

৪. ‘সুভা’ গল্পে বাণীকণ্ঠের বাড়ির কী কী নৌকাবাহীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে?

উত্তর: বাণীকণ্ঠের ঘর চণ্ডীপুর গ্রামে নদীর তীরে। তার বাখারির বেড়া, আটচালা, গোয়ালঘর, ঢেঁকিশালা, খড়ের স্তূপ, তেঁতুলতলা, আম, কাঁঠাল ও কলার বাগান নৌকাবাহীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করত।

৫. সুভা গল্পে সুভার কোন্ কোন্ সঙ্গীর কথা রয়েছে?

উত্তর: আলোচ্য গল্পে সুভার কয়েকজন অন্তরঙ্গ সঙ্গীর উল্লেখ পাওয়া যায়। এর মধ্যে প্রধান হলো গোয়ালের দুটি গাভি—সর্বশী ও পাঙ্গুলি। এছাড়া ছাগল ও বিড়ালছানাও তার অনুগত সঙ্গী ছিল। মানুষের মধ্যে গোঁসাইদের ছেলে প্রতাপ তার বিশেষ বন্ধু, যে মাছ ধরার সঙ্গী হিসেবেও তার সাথে সময় কাটাত।

৬. সুভার সঙ্গে সর্বশী ও পাঙ্গুলির সম্পর্ক কেমন ছিল?

উত্তর: সর্বশী ও পাঙ্গুলি সুভার পদশব্দ চিনে নিতে পারত এবং তার মনের ভাষা বুঝত। সুভা কখনো আদর, কখনো শাসন, কখনো মিনতি করলে তারা তা অনায়াসেই উপলব্ধি করত। সুভা গোয়ালে এসে সর্বশীর গলা জড়িয়ে আদর করত, আর পাঙ্গুলি স্নেহভরে তাকে গা চেটে দিত। দিনে তিনবার সে গোয়ালে যেত, এমনকি দুঃখ পেলেও সান্ত্বনার জন্য গাভি দুটির কাছে আসত। গাভিগুলোও সুভার বিষণ্ণ দৃষ্টি বুঝে তার শিং ঘষে বা দৃষ্টিতে তার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করত।

ক্লাস ৮ বাংলা
সুভা গল্পের অতিরিক্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর

৭. অতি-সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন:

৭.১. “লোকটি নিতান্তই অকমর্ত্য”—’লোকটি’ কে?

উত্তর: এখানে ‘লোকটি’ বলতে গোঁসাইদের ছোটো ছেলে প্রতাপকে বোঝানো হয়েছে।

৭.২. সুভার মা সুভাকে কেন পছন্দ করতেন না?

উত্তর: সুভা বোবা ছিল বলে তার মা তাকে নিজের গর্ভের কলঙ্ক মনে করতেন।

৭.৩. রবীন্দ্রনাথের লেখা বিশেষ দুটি গল্পের নাম লেখো।

উত্তর: ‘দেনাপাওনা’ ও ‘শাস্তি’।

৭.৪. “তাহারা যথেষ্ট আনুগত্য প্রকাশ করিত।”—’তাহারা’ কারা?

উত্তর: ‘তাহারা’ বলতে ছাগল ও বিড়ালশাবককে বোঝানো হয়েছে।

৭.৫. সুভা কোথায় বসে থাকত?

উত্তর: সুভা নদীর তীরে তেঁতুলতলায় বসে থাকত।

৮. ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন:
৮.১. “মাছ ধরার সময় বাক্যহীন সঙ্গীই সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ” — কেন এ কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: উদ্ধৃতিটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সুভা’ গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে। মাছ ধরতে অনেকক্ষণ ধৈর্য ধরে চুপচাপ বসে থাকতে হয়। অন্যের কথাবার্তা মাছ শিকারে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। তাই মাছ ধরার ক্ষেত্রে বাক্যহীন সঙ্গীই সবচেয়ে উপযুক্ত।

৮.২. “কন্যাভারগ্রস্থ পিতামাতা চিন্তিত হইয়া উঠিয়াছে” — এই চিন্তার কী ফল লাভ হয়েছে?

উত্তর: উদ্ধৃতিটি সুভার বিয়ে নিয়ে তার বাবা-মার চিন্তার প্রসঙ্গ। বোবা মেয়েকে বিয়ে দিতে বাণীকণ্ঠ স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বিদেশে পাত্র ঠিক করেন এবং কলকাতায় গিয়ে তার বিয়ে দেন। কিন্তু শীঘ্রই পাত্র বুঝতে পারে সুভা বোবা—ফলে তার জীবনে নতুন এক ট্র্যাজেডি শুরু হয়।

৯. রচনাধর্মী প্রশ্ন:
৯.১. রবীন্দ্রনাথের ‘সুভা’ গল্প অবলম্বনে সুভা চরিত্রটি আলোচনা করো।

উত্তর: ‘সুভা’ গল্পে সুভা একজন বোবা, অসহায় গ্রাম্য মেয়ে। পশুপ্রেম, প্রকৃতিপ্রেম ও সংবেদনশীলতা তার চরিত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য। গোয়ালের দুই গাভি সর্বশী ও পাঙ্গুলির সঙ্গে তার বন্ধুত্ব ছিল গভীর। এছাড়া ছাগল ও বিড়ালছানার সঙ্গেও তার নীরব সম্পর্ক ছিল। প্রতাপের মতো অকর্মণ্য হলেও সে সুভাকে অবহেলা করত না, তাই সুভার একমাত্র মনুষ্যবন্ধু ছিল প্রতাপ।

প্রকৃতির সঙ্গে সুভার অদ্ভুত মিল ছিল। প্রকৃতির মতোই সে ছিল শান্ত ও রহস্যময়। বোবা হলেও তার মনের গভীর বেদনা ও অনুভূতি ছিল প্রবল। তার বাবা তাকে খুব ভালোবাসলেও মা তাকে গর্ভের কলঙ্ক মনে করতেন। বিয়ে-সম্পর্কে বোবা হওয়ার যন্ত্রণা সুভার জীবনের করুণ বাস্তবতা হয়ে দাঁড়ায়।

আরও দেখো: ঘুরে দাঁড়াও কবিতার প্রশ্ন উত্তর

অষ্টম শ্রেণী বাংলা / সুভা গল্পের অনুশীলনীর প্রশ্ন উত্তর / রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

WBNMMSE Scholarship Portal: Official Website

CLOSE